• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

এবার পুড়ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় ফুসফুস

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৯ আগস্ট ২০১৯

আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে নিচ্ছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলে খ্যাত আমাজন বনাঞ্চলকে। এই রেইন ফরেস্টকে বাঁচাতে গোটা বিশ্ব যখন একজোট হচ্ছে ঠিক তখনই জানা গেল, আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় ফুসফুস হিসেবে পরিচিত আফ্রিকার দক্ষিণ অংশের বনাঞ্চল। নাসার উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, আফ্রিকার দক্ষিণ অংশের কঙ্গো অববাহিকায় ১০ লাখ বর্গমাইলেরও বেশি এলাকা গ্রাস করে নিচ্ছে দাবানল।

জি-৭ভুক্ত দেশগুলো আমাজনকে বাঁচাতে তৎপর হলেও আফ্রিকার কথা এখনো আলোচনাতেই আসেনি। শুধু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁই জি-৭ বৈঠকে বলেছেন, সাহারা মরুভূমিসংলগ্ন এলাকাতেও বিশাল বনাঞ্চল জ্বলছে। তিনি বলেছেন, ব্রাজিল নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হওয়ার পরে এ বিষয়টা নিয়েও তারা ভাবনাচিন্তা করবেন। তিনি টুইটারে বলেছেন, ‘সাব-সাহারান আফ্রিকার বনও জ্বলছে।’

আবহাওয়াবিদদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের নির্দিষ্ট দুটি দিনে ব্রাজিলে যতগুলো অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, এঙ্গোলাতে তার তিনগুণ বেশি আগুনের ঘটনা দেখা গেছে। নির্দিষ্ট ওই দুদিনে ব্রাজিলে যেখানে রেকর্ড ২ হাজার ২০০টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে; ওই একই সময়ে এঙ্গোলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯০২টি, গণতান্ত্রিক কঙ্গোতে ৩ হাজার ৩৯৫টি।

আমাজনের মতো আফ্রিকার এই বনাঞ্চলও বিপুল পরিমাণ কার্বন সঞ্চিত রাখে; এটি হাজার হাজার বিপন্ন প্রজাতির আবাসস্থলও। সান বলছে, পরিবেশবাদীদের চাপের মুখে জি-৭ নেতারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিরহরিৎ বনাঞ্চলের অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলায় ত্বরিত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেও আফ্রিকার বনের অগ্নিকাণ্ড তুলনামূলক কম মনোযোগ পাচ্ছে। অবশ্য কঙ্গো

অববাহিকার বনাঞ্চলের যে অংশে আগুন লেগেছে, সেটি বনের সংবেদনশীল এলাকার বাইরে বলে নাসার ছবিতে দেখা যাচ্ছে।

কঙ্গো অববাহিকায় কাজ করা পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মী ফিলিপ ভার্বেলাইনও আমাজনে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে এর তুলনা দিতে নারাজ। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুমে জমি পরিষ্কারের অংশ হিসেবে আফ্রিকার কৃষকরা প্রতিবারই ঝোপেঝাড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মী ও দূত টোসি এমপাপু বলেছেন, আফ্রিকা আর ব্রাজিলের আগুন একই কারণে তৈরি হয়নি। আমাজনে হয়তো খরা ও জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে এ অবস্থা। তবে মধ্য আফ্রিকা কিন্তু জ্বলছে মূলত ভ্রান্ত কৃষি পদ্ধতির কারণে।

এদিকে এঙ্গোলার সরকারও আফ্রিকার অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে আমাজনের তুলনা টানার বিষয়ে সতর্ক করেছে। যে কোনো ধরনের তুলনা ‘ভুল তথ্য’ দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছে তারা। শুষ্ক মৌসুমের শেষ দিকে এ অগ্নিকাণ্ড অনেকটা স্বাভাবিকই বলে জানিয়েছে দেশটির পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, এঙ্গোলা, গ্যাবন, ক্যামেরুন এবং মাদাগাস্কারজুড়ে বিস্তৃত আফ্রিকার বিশাল বনভূমি। গত সপ্তাহে কঙ্গো ও এঙ্গোলায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাজিলের চেয়েও ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

বিবিসি জানিয়েছে, কঙ্গোয় জঙ্গল পরিষ্কারের জন্য জুম পদ্ধতিতে চাষ হয়। কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা পান। তাই বেশির ভাগ মানুষ কাঠ পুড়িয়ে রান্নাবান্না ও কৃষিকাজ করেন। এসব কারণে গ্যাবন ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কিছু অংশে অরণ্য-নিধন চলছে ব্যাপক হারে। এছাড়া খনিজ ও তেলের বেশ কিছু প্রকল্পের জন্যও ক্ষতি হচ্ছে আফ্রিকার বিশাল অরণ্যের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads