• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

নূরকে ফেরাতে কানাডার আদালতে এক দফা জয়

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরানোর চেষ্টায় এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা কীভাবে কানাডায় বসবাস করছেন, সেই অভিবাসনসংক্রান্ত তথ্য দেশটির সরকারের কাছে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দেশটির আইনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে প্রত্যর্পণে বাধা থাকায় জনস্বার্থ রক্ষার যুক্তি দিয়ে সে দেশের সরকার তথ্য প্রকাশ করবে না বলে জানিয়েছিল। এ নিয়ে এক মামলায় কানাডার ফেডারেল আদালত গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন। 

বিচারক জেমস ডব্লিউ ওরেইলি রায়ে বলেছেন, নূর চৌধুরীর অভিবাসনসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে জনস্বার্থের ব্যাঘাত ঘটবে না। সুতরাং তার বিষয়ে তথ্য না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত কানাডা সরকার নিয়েছিল তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। এরপর আইন করে তাদের বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর বিচারের পথ খোলে। বিচার শুরু হলেও ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি। ২০০৯  সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়।

২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি দণ্ডিত পাঁচজন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনকে (আর্টিলারি) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডা কার্যকর করা হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশিদ, এ এম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান পলাতক থাকায় রায় কার্যকর করা যায়নি।

পলাতকদের মধ্যে নূর কানাডায় এবং রাশেদ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বাকিদের অবস্থান এখনো শনাক্ত হয়নি। সবাইকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় ইন্টারপোল থেকে রেড নোটিশ জারি করা হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি। কানাডার দি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নূর চৌধুরী ও তার স্ত্রী ১৯৯৬ সালে সেদেশে যাওয়ার পর উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয়ের আবেদন করেন। এ ঘটনার দুই বছরের মধ্যেই নিম্ন আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে নূর চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। 

নূর চৌধুরী দম্পতির বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধে সংশ্লিষ্টতার তথ্য থাকায় ২০০২ সালে কানাডা সরকার তাদের আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। আপিল করেও ২০০৬ সালে তারা হেরে যান। কিন্তু তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করার পর নূর চৌধুরী তার বহিষ্কার বা প্রত্যর্পণ এড়াতে কানাডার অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের আবেদন করেন। কোনো অভিবাসন প্রত্যাশীকে দেশে ফেরত পাঠানো হলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়বে কি না তা বুঝতে প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালে তাকে ফেরানোর জন্য কানাডার অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে একটি চিঠি দিয়ে জানতে চায় নূর চৌধুরী কানাডায় কীভাবে আছেন। তার প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের আবেদন কোন পর্যায়ে আছে। কানাডা সেসব তথ্য দিতে অস্বীকার করায় গত বছর জুনে জুডিশিয়াল রিভিউয়ের আবেদন করে বাংলাদেশ। গত মার্চে এ বিষয়ে শুনানির পর মঙ্গলবার বাংলাদেশের আবেদন মঞ্জুর করে রায় দিলেন দেশটির ফেডারেল আদালত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads