• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

করোনা শনাক্তে কুকুরের কার্যকারিতার আরো প্রমাণ মিলেছে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

প্রশিক্ষিত কুকুর মানুষের ঘামে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি শনাক্ত করতে অত্যন্ত কার্যকর। করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে কুকুরের ব্যবহার নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। নতুন এই গবেষণা বিষয়টিকে আরো জোরালো করে তুলেছে। গবেষকরা বলছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় প্রশিক্ষিত কুকুর একটি ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।

গবেষণার অংশ হিসেবে ফ্রান্স ও লেবাননে করোনা আক্রান্ত রোগীদের গন্ধ শনাক্ত করতে এক মাসের জন্য ছয়টি কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গবেষকরা ১৭০ জনেরও বেশি মানুষের ঘামের নমুনা সংগ্রহ করেন। তাদের প্রায় অর্ধেকই করোনা পজিটিভ ছিলেন। গবেষকরা দেখতে চেয়েছেন কুকুর কোভিড পজিটিভ ও কোভিড নেগেটিভ রোগীদের আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে কিনা। ন্যূনতম প্রশিক্ষণের সময়েই কুকুরগুলো ৭৬ শতাংশের বেশি নমুনা শনাক্ত করতে সমর্থ হয়। ঘ্রাণ শুঁকে ক্যানসার শনাক্তের জন্য ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুইটি কুকুরের কোভিড-১৯ শনাক্তের ক্ষেত্রেও শতভাগ পারদর্শিতা দেখিয়েছে। প্রশিক্ষিত কুকুরগুলো মুহূর্তেই এটি শনাক্ত করতে পারে। কুকুরগুলো মানুষের লালা ও প্রস্রাবের নমুনা থেকে করোনা শনাক্ত করতে পারে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে এখন আরও গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।

এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল ভেটেরিনারি স্কুল অব অ্যালফোর্টের অধ্যাপক ডমিনিক গ্রানডিজান। তিনি বলেন, কুকুরের পক্ষে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘাম শুঁকে কোভিড-১৯ শনাক্ত করার ধারণাটি প্রথমে যখন উদ্ঘাটিত হয়েছিল, তখন এটি হাস্যকর মনে হয়েছিল।

অধ্যাপক ডমিনিক গ্রানডিজান সিটিভি নিউজকে বলেন, ‘প্রথমে আমি বললাম, কোনওভাবেই না। আমার কাছে প্রথমে এটিকে পাগলামি মনে হয়েছিল। এখন পর্যন্ত আমরা কোনও ভাইরাল রোগ দেখিনি যেটি কুকুরের দ্বারা শনাক্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই অবাক হয়েছিলাম। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছিল এটি অসম্ভব। কিন্তু এখন আমার কাছে মনে হয়, এটি সবচেয়ে ভালো পরীক্ষাগুলোর একটি।’ অধ্যাপক ডমিনিক গ্রানডিজান বলেন, কুকুর আসলে ভাইরাসের ঘ্রাণ পায় না। তারা কিছু অণুর গন্ধ পায় যা ভাইরাস দ্বারা উৎপাদিত হয়। অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম ও ফিনল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে অবশ্য এরইমধ্যে করোনা শনাক্তে কুকুর ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়েছে। রাশিয়ার একটি বিমান সংস্থা যাত্রীদের ফ্লাইটে উঠার আগে তাদের শরীরের ঘ্রাণ শুঁকতে প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করে; যাতে করোনা আক্রান্ত কেউ থাকলে তাকে শনাক্ত করা যায়। অধ্যাপক ডমিনিক গ্রানডিজান জানান, একটি কুকুর দিনে ৪০০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে পারে। তার ভাষায়, ‘কোনও দেশে যদি এক হাজার কুকুর (প্রশিক্ষিত) থাকে তার মানে তারা দিনে চার লাখ মানুষের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারবে।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে।

চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এখন আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। সূত্র : সিটিভি নিউজ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads