• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
টিকা দিলেও এ বছর হার্ড ইমিউনিটি হবে না

ফাইল ছবি

বিদেশ

টিকা দিলেও এ বছর হার্ড ইমিউনিটি হবে না

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ জানুয়ারি ২০২১

বিশ্বের অনেক দেশে ইতোমধ্যে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে, অনেক দেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে টিকা দেওয়ার। তা সত্ত্বেও বৈশ্বিক এ মহামারীতে চলতি বছরই হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা দেখছেন না স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এর কারণ হিসাবে তারা নিম্নআয়ের দেশগুলোর টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, অনেক জায়গায় মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে আস্থার অভাব এবং ভাইরাসের বিবর্তনকে দেখাচ্ছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আউটব্রেক অ্যালার্ট অ্যান্ড রেসপন্স নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান ডেল ফিশার সোমবার রয়টার্স নেক্সট কনফারেন্সে বলেন, আমরা আগের স্বাভাবিক জীবনে শিগগিরই ফিরে যেতে পারছি না। পূর্বাবস্থায় ফিরতে হলে আমাদের হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছাতে হবে এবং তা হতে হবে অধিকাংশ দেশে।  ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সে পরিস্থিতি দেখতে পাব না। এটা ঠিক যে, কোনো কোনো দেশ হয়ত হার্ড ইমিউনিটি দশায় পৌঁছে যাবে। কিন্তু তাতেও তারা পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারবে না, বিশেষ করে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের বেলায়। এখন পর্যন্ত টিকা বিতরণ পরিস্থিতির যে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করতে পারছি না। হার্ড ইমিউনিটি তত্ত্ব বলছে, যদি কোনো এলাকার মোট জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ কোনো ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে, তাদের সবার শরীরে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। সেটা সত্যি হলে সেখানে ভাইরাসের প্রকোপও কমে আসবে। টিকা চলে আসায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বড় পরিসরে তা দেওয়া সম্ভব হলে, তার মাধ্যমেও অধিকাংশ নাগরিকের মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা সম্ভব- এটাই হার্ড ইমিউনিটি। এছাড়া টিকা নেওয়ার লাইনে একেবারে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়েছে উন্নত দেশগুলো। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো রয়েছে পেছনের সারিতে। বিশ্বের সর্বত্র একই সঙ্গে বা কাছাকাছি সময়ে টিকা না পাওয়াটা একটা বড় সমস্যা বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

ইউনিভার্সিটি অব ইন্দোনেশিয়ার এপিডেমিওলজিস্ট পান্ডু রিওনো বলছেন, টিকার ওপর কিছু দেশের সরকারের মাত্রাতিরিক্ত আস্থাও বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাতে শিগগিরই হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানো সম্ভব নাও হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার সরকার ভাবছে, মহামারী সামাল দিতে টিকাই যথেষ্ট। তারা ভুলে গেছে যে পরীক্ষা, প্রচার, সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে মানুষকে সচেতন করাও জরুরি। কারণ যাদের দরকার তাদের সবার কাছে টিকা পৌঁছাতেও বেশ কিছুটা সময় লেগে যাবে। মহামারীর তথ্য সংগ্রহকারী ইন্দোনেশীয় সংগঠন ল্যাপরকোভিড-১৯ এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ইরমা হিদায়ানা বলেন, মানুষের আস্থার বিষয়টিও টিকাদান কার্যক্রমের ওপর প্রভাব রাখতে পারে।  আর ফিশার বলছেন, এ ভাইরাস ভবিষ্যতে নিজেকে কতটা বদলে ফেলতে পারে, সে বিষয়টি এখনো মানুষের অজানা। কারণ অনেক বেশি মিউটেশন হলে এখনকার টিকা আর কার্যকর নাও হতে পারে।

বিশ্বে ইতোমধ্যে ৯ কোটির বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে চীনে শুরু হওয়া এ মহামারীতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১৯ লাখ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনকার টিকা প্রয়োগ শুরু করেছে। ইন্দোনেশিয়া ও ভারতও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বড় পরিসরে টিকা প্রয়োগ শুরু করতে যাচ্ছে।

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রেজা বাকির বলেন, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে তার দেশে করোনার টিকা কার্যক্রম পরিচালনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ২২ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তান এ পর্যন্ত চীনের সিনোফার্মার ১২ লাখ ডোজ টিকার অর্ডার নিশ্চিত করতে পেরেছে। এর মধ্যে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে হলেও পাকিস্তানের পরিস্থিতি এখন গত বছরের চেয়ে ভালো বলে জানান তিনি। বলেন, আমরা এখনো মহামারীর মধ্যেই আছি। টিকা চলে আসলে পরিস্থিতি ভালোর দিকেই যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads