• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

বাংলাদেশ

ডিলারদের অসন্তোষের মধ্যেই রবিবার শুরু ওএমএস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ মার্চ ২০১৮

খোলা বাজারে চাল-আটা বিক্রির কমিশন নিয়ে ডিলারদের দেওয়া আশ্বাস পূরণ না করেই রবিবার থেকে সে কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। লোকসান পোষাতে ডিলাররা গতবার কমিশন বাড়ানোর দাবিতে দুই দফায় ধর্মঘটও করেন। প্রতিবারই খাদ্য অধিদফতরের আশ্বাসে তা স্থগিত করে শেষ পর্যন্ত খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন ডিলাররা। এবারো আগের কমিশনেই শুরু হচ্ছে ওএমএস কর্মসূচি।

ডিলাররা জানান, বর্তমানে তাদের জন্য প্রতি কেজি চাল বিক্রির ওপর দেড় টাকা এবং আটায় এক টাকা কমিশন রয়েছে। তবে ডিলাররা শুরু থেকেই চাল ও আটায় দুই টাকা কমিশনের দাবি করে আসছেন। এছাড়া তারা চাল ও আটার বরাদ্দ এক টন থেকে বাড়িয়ে দুই টন করার দাবিও জানিয়ে আসছেন। তারা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।

চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে গত বছর শেষ দফায় ডিসেম্বর পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম চালু রেখেছিল সরকার। সে সময় প্রথম দফায় ৫ অক্টোবর থেকে কমিশন বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট করেছিল ওএমএস ‘ট্রাকসেল’ ডিলার সমিতি। সে সময় তারা খোলা বাজারে চাল-আটা বিক্রি বন্ধ রাখে। এমন পরিস্থিতির কিছুদিন পর খাদ্য অধিদফতর কমিশন বাড়ানোর আশ্বাস দেয়। কিন্তু খাদ্য মন্ত্রণালয়ে কমিশন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এক মাস অপেক্ষার পর দ্বিতীয় দফায় ধর্মঘট ডাকে ডিলার সমিতি। তবে তা শুরুর দুই দিন আগেই খাদ্যমন্ত্রী ডিলারদের কমিশন বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন জানিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করান। এরপর গত ডিসেম্বরে চালের মজুত সঙ্কটের কারণে ওএমএস বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে এখনো ডিলারদের দাবি অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে গতকাল শুক্রবার কথা হয় ওএমএস ডিলার সমিতির সভাপতি আলমগীর সৈকতের সঙ্গে। বাংলাদেশের খবরকে তিনি বলেন, রোববার থেকে আবারো সেই অমীমাংসিত কমিশন বাড়ানোর দাবি নিয়েই ডিলাররা ওএমএসে যাবেন। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে কমিশন বাড়ানো না হলে আবারো ট্রাকসেল বন্ধ করা হবে। তিনি বলেন, এ ওএমএসেও এক টন চাল ও এক টন আটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ পরিমাণ পণ্য বিক্রি করে যে কমিশন মেলে তাতে ডিলারদের প্রতিদিন লোকসান গুনতে হয়। ফলে আমাদের জন্য ওএমএস অসন্তোষের কারণ।

ওএমএস শুরু হলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও ডিলারদের এসব টানাপড়েনের প্রভাব পড়ে ভোক্তার ওপর। ডিলাররা তখন লোকসান এড়াতে নিয়মিত ট্রাকসেলে যান না। রাজধানীতে প্রতিদিন দুইশ’ থেকে আড়াশ’ ট্রাকসেল থাকার কথা থাকলেও সব মিলিয়ে অর্ধশত ট্রাকসেলের দেখা মেলে না।

ডিলাররা বলছেন, এক টন করে চাল-আটা মিলিয়ে বরাদ্দ পাওয়া দুই টন পণ্য বিক্রি করে প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকা কমিশন মেলে। কিন্তু প্রতিদিন ট্রাক ভাড়াই আড়াই হাজার টাকা। এরপর রয়েছে নিয়োজিত দুইজন কর্মীর বেতন ও অন্যান্য খরচ। সব মিলিয়ে খরচ হয় অন্তত সাড়ে তিন হাজার টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন তাদের লোকসান কমপক্ষে হাজার টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিলার অভিযোগ করেন, জোর করেই তাদের দিয়ে পণ্য বিক্রি করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন লোকসান দিয়ে নিত্যপণ্য বিক্রির কর্মসূচি চালাতে চান না কেউই। কিন্তু লাইসেন্স বাঁচাতে বাধ্য হয়েই কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হয়।

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গতকাল খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বদরুল হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads