• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

‘বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি’ নামের সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষ্যে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন সংগঠনের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন । তিনি দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বিডিজি-মাগুরা গ্রুপেরও চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ নিউজের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া। আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দিনপরিবর্তনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আতাহার হোসেন খান ও বাংলাদেশ নিউজের নির্বাহী সম্পাদক সোহেল মনজুর।

ছবি : মিজানুর রহমান খান

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটির আত্মপ্রকাশ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত দেশ গড়ার অঙ্গীকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ মার্চ ২০১৮

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা ও লক্ষ্য পূরণের মধ্য দিয়ে সুখী-সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়ার অঙ্গীকারে যাত্রা শুরু করেছে নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি’। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন। তিনি দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বিডিজি-মাগুরা গ্রুপেরও চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ নিউজের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া। আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দিনপরিবর্তনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আতাহার হোসেন খান ও বাংলাদেশ নিউজের নির্বাহী সম্পাদক সোহেল মনজুর।

মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, নতুন এই সংগঠন প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রেরণা সমুন্নত রাখা, ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন এবং স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সারা দেশে কাজ করবে। তিনি বলেন, দেশব্যাপী এই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনায় আমরা অন্তত চারটি মৌলিক লক্ষ্যের প্রতি অবিচল ও দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব। সেগুলো হলো- প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রেরণা প্রতিষ্ঠা, ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়া।

তিনি বলেন, সত্তর দশকের তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ এখন উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। আমরা বিশ্বে নজির গড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সব সূচকে ক্রমশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছি। এখন সামনে শুধুই এগিয়ে চলার পথ। প্রমাণ করেছি, আমরা পারি এবং কারো দয়ার মুখাপেক্ষী নই।

সংগঠনের কার্যক্রম বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে সুদৃশ্য চার রঙের প্রচ্ছদে ১ কোটি কপি ছেপেছি। এর সঙ্গে প্রতিটি ঘরে বিনামূল্যে জাতীয় পতাকাও পৌঁছে দেব। পাশাপাশি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ৩০ লাখ বটবৃক্ষ রোপণ করব। আর দেশের সব উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার তথ্য তুলে ধরতে আমরা প্রকাশ করব দৈনিক দিনপরিবর্তন। এর মাধ্যমেই আমরা এগিয়ে যাব।

মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন দেশকে মধ্যম আয়ের গৌরবময় অবস্থানে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের সবার প্রতি বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটির পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই প্রথম আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধিকার আন্দোলন শুরুর মাধ্যমে শোষণ-বঞ্চনার পরিসমাপ্তি এবং জাতীয় সম্পদের সুরক্ষা, প্রবৃদ্ধি ও সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সেই স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরেই শেষ পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা সেই মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে রূপকল্প ২০২১ ও উন্নত বাংলাদেশ ২০৪১ ঘোষণা করেছেন। তার এই জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পাশে থেকে কাজ করার জন্যই আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি। এই সংগঠনের ব্যানারে আমরা সব দেশপ্রেমিক, প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত মানুষকে একটি সুনির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে এনে একাত্তরের মতো ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।

প্রশ্নোত্তর পর্বে চেয়ারম্যান বলেন, দেশ ও মানুষের উন্নয়নে আমরা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করব। এ প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা যত থাকবে ততই আমরা সফল হব।

আর্থিক সংস্থানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি নিয়মের মধ্যে যেসব বিষয় রয়েছে, যেমন সদস্যদের চাঁদা, অনুদান ও অন্যান্য খাত এবং এর বাইরে মাগুরা ও বিডিজি গ্রুপের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিকভাবে সহায়তা করব।

তিনি বলেন, ভালো কাজে প্রতিযোগিতা থাকে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ভালো কাজে সহায়ক ভূমিকা রাখতে চাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর ২১-৪১-এর যে স্বপ্ন তা আমরা সবাই মিলে বাস্তবায়ন করব। আমরা মানুষ ও দেশের জন্য কাজ শুরু করেছি।

২১-৪১ সোসাইটির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া সংগঠনের চেয়ারম্যান সম্পর্কে বলেন, দেশে অনেক ব্যবসায়ী থাকলেও তাদের অনেকেই চিত্ত ও বিত্তে ধনী নন। তাই তারা সমাজের জন্য কিছু করতে পারেন না। আমাদের চেয়ারম্যান চিত্ত ও বিত্তে ধনী, তাই তিনি সমাজের জন্য কিছু করতে চান। আর এজন্যই তিনি এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, কোম্পানি আইনের আওতায় ছোট একটি কমিটি করে আমরা যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। পরবর্তী সময়ে সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি হবে। এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং পেশাজীবীরা থাকবেন। আর উপদেষ্টা কমিটিতে থাকবেন বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা। থাকবে পৃষ্ঠপোষক কমিটি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হওয়ার জন্য অনুরোধ করব। ধীরে ধীরে আমরা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে যাব। এর মধ্য দিয়ে দেশ গঠনে একটি নতুন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলব।

এক প্রশ্নের জবাবে আজিজ ভূঁইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমরা বাংলাদেশের সব পরিবারে পৌঁঁছে দেব। স্কুল, মাদরাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এটি নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। বিশ্বকাপ এলে গ্রামে-গঞ্জে জার্মানি, ব্রাজিলের পতাকা ওড়ে। আমরা ঘরে ঘরে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর ব্যবস্থা করব। ৩০ লাখ শহীদের সম্মানে মুক্তিবৃক্ষ রোপণ করব।

সংগঠনের কার্যক্রমের মেয়াদকাল বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাজে ২৫ লাখ স্বেচ্ছাসেবী লাগবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহায়তা করলে আমরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যাব। ৭ মার্চের ভাষণ, জাতীয় পতাকা পৌঁছানো, গাছ লাগানো খুবই সময়সাপেক্ষ। প্রতিটি মুক্তিবৃক্ষের সঙ্গে থাকবে শনাক্ত নম্বর। আমরা বঙ্গভবনে মুক্তিবৃক্ষ-১ এবং গণভবনে মুক্তিবৃক্ষ-২ রোপণ করে কাজ শুরু করতে চাই। কোনো মেয়াদকালে আমরা বাঁধা পড়ব না। যতদিন লাগে আমরা কাজ করব এবং ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন কার্যক্রম হাতে নেব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads