• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেন লুসি হল্ট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩১ মার্চ ২০১৮

বাংলাদেশকে ভালোবেসে যুগের পর যুগ মানুষের সেবায় নিয়োজিত একজন মানুষের নাম লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। ৮৭ বছর বয়সী লুসি জীবনের ৫৭ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে। এদেশের মাটি ও মানুষকে ভালবেসেছেন নিবিড়ভাবে। তাইতো ভুলে থাকতে পেরেছেন পরিবার-পরিজনদের। লুসি ১৯৬০ সালে বরিশালের অক্সফোর্ড মিশনে কাজ শুরু করেন। তিনি বরিশালের অক্সফোর্ড মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়ানো শুরু করেন।

এরপর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যশোর ক্যাথলিক চার্চে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন তিনি। যুদ্ধের কারণে চার্চ বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে না গিয়ে লুসি হল্ট যুদ্ধাহত মানুষদের সেবা করতে থাকেন। দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭৩ সালে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কাছে চিঠি ও উপহার পাঠান লুসি হল্ট। মা'র হয়ে লুসির সেই চিঠির জবাব দিয়েছিলেন শেখ রেহানা। 

২০০৪ সালে অবসরে যাওয়ার আগে খুলনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় কাজ করেছেন লুসি হল্ট। অবসর জীবনে তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দিচ্ছেন। অবসরের পর সবাই দেশে ফিরে গেলেও তিনি এদেশেই থেকে যান। বাংলাদেশে ও বরিশালের সঙ্গে যেন তার আত্মার সম্পর্ক। বাকি জীবনটা বরিশালেই কাটিয়ে দিতে চান লুসি। তার শেষ ইচ্ছা, মৃত্যুর পরে তাকে যেন বাংলাদেশের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

অবসরকালীন ভাতা সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে কোনো রকমে জীবন চালিয়ে নিচ্ছেলেন লুসি। কিন্তু প্রতিবছর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ৩৮ হাজার টাকা দেওয়া তার জন্য কষ্টকর হচ্ছিল। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি লুসি হল্টকে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য তার ভিসা ফি মওকুফও করা হয়ে ছিল।

মৃত্যুর আগে তার একটাই চাওয়া ছিল ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’; বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। তাঁর সেই অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হলো। শনিবার বিকালে লুসি হল্টের হাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের সনদটি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় জাতির জনকের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করায় লুসি হল্টকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে শেখ রেহানার সঙ্গেও কথা বলেন লুসি হল্ট। গণভবনে এই অনুষ্ঠানে মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

লুসি হল্টের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে । বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads