• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

কোটা ব্যবস্থার সংস্কার এর দাবিতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে অসংখ্য মানুষ।

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাংলাদেশ

কোটা সংস্কার দাবিতে সড়কপথ রেলপথ অবরোধ, ভোগান্তি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১২ এপ্রিল ২০১৮

কোটা ব্যবস্থার সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে বুধবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েও বিক্ষোভ করেছে। সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথে তাদের অবরোধ কর্মসূচির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ে অসংখ্য মানুষ। আন্দোলন নিয়ে দুই মন্ত্রীর বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার ও হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবিও জানায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকালে সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা না রাখার ঘোষণা দেওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ব্যুরো অফিস, নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

সিলেট : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি), এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় সড়ক আটকে রেখে বিক্ষোভ করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। এদিকে শাবির মূল ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

খুলনা : নগরীর শিববাড়ীর মোড়ে চাকরিপ্রার্থী যুবক ও বিভিন্ন উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান নেয়। এ সময় শিববাড়ী মোড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), সরকারি বিএল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যানার প্লাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়। খুবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এক বিবৃতিতে কোটা সংস্কার দাবিতে সমর্থন জানিয়েছেন। সমর্থন জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ এবং শিক্ষক সমিতিও।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাটল ট্রেন অবরোধসহ বিক্ষাভ কর্মসূচি পালন করে। নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ স্কুলের শিক্ষার্থীরা। একটা পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা নগরীর ২ নম্বর গেটের আরাকান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।

বরিশাল : বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়ক আটকে বিক্ষোভ করে। এতে বরিশালের সঙ্গে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ময়মনসিংহ : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন ময়মনসিংহ-ঢাকা রেলপথ প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এতে আটকা পড়ে তিনটি ট্রেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ও দুই মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিনভর আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এবং বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করে।

ধামরাই (ঢাকা) : সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণবিশ্ববিদ্যালয় ও নয়ারহাটের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।

গাজীপুর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ ও কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীরা। গাজীপুর শহরের শিববাড়ী মোড় এলাকায় ঢাকা-জয়দেবপুর সড়ক আটকে বিক্ষোভ করে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

গোপালগঞ্জ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে।

রংপুর : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) : ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও আলোচনা সভা শেষে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। তাদের দাবিতে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

নাটোর : নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। কর্মসূচি পালনে তারা দুপুরে জড়ো হওয়ার পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের অবস্থান দেখে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। এরপর আতঙ্কে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও চলে গেলে ক্যাম্পাস শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পড়ে।

এ ছাড়া টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, পাবনা, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুর ও জামালপুর বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads