• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

নিহত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া

ফাইল ফটো

বাংলাদেশ

পতেঙ্গা উপকূলে তাসফিয়ার মরদেহ

৪৮ ঘণ্টায়ও মেলেনি কোনো প্রশ্নের উত্তর

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০১৮

প্রেমিক আদনান? নাকি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের হাতে খুন হয়েছে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া- এ প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি লাশ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টায়ও। খুনের কারণ জানতে আটক প্রেমিককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্ধান চলছে অটোরিকশা চালকের। আবার কর্ণফুলী নদী পাড়ের যেখান থেকে লাশ উদ্ধার হয়েছে তার আশপাশে স্থানীয়রা তাকে একা দেখতে পেয়েছিলেন। তাই কোনো কারণে সে আত্মহত্যা করেছে কি না তাও ভাবতে হচ্ছে তদন্তসংশ্লিষ্টদের। তার সঙ্গে পরিবারের সম্পর্ক কেমন ছিল বা অভিমান করে বাসা থেকে বের হয়ে নেভাল এলাকায় গিয়েছিল কি না সে বিষয়ও যাচাই করছে পুলিশ। এ ছাড়া তাসফিয়ার সোনার আংটি ও আইফোন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার না হওয়ায় সে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল কি না সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।

গত বুধবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা নেভাল সড়কের ১৮ নম্বর ঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর পাড়ে পাথরের মাঝে উপুড় হয়ে পড়েছিল তাসফিয়ার লাশ। নগরীর সানসাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির এই ছাত্রী নাসিরাবাদের ওআর নিজাম রোডের বাসিন্দা আমদানি-রফতানি ব্যবসায়ী মো. আমিনের মেয়ে।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (বন্দর) আরেফিন জুয়েল জানান, পুলিশ চারটি বিষয়কে সামনে রেখে এ ঘটনার তদন্ত করছে। প্রথমত, তাসফিয়া নেভাল এলাকায় কেন গেল? কীভাবে গেল? বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে। এ ছাড়া সর্বশেষ গোলপাহাড় মোড় থেকে সিএনজি অটোরিকশায় তাকে একা উঠতে দেখা যাওয়ায় সেটার চালককেও খোঁজা হচ্ছে। আদনানকেও দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাসফিয়ার মুখে আঘাতের চিহ্ন আছে। এদিকে তাসফিয়ার সোনার আংটি ও আইফোনটি পাওয়া যায়নি। তাই নদীর পাড়ে ছিনতাইকারীদের হাতেও সে নিহত হতে পারে- এমন সন্দেহও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা পুলিশ তা নিশ্চিত হবে।

সিএমপির কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন তাসফিয়ার বাবা। অন্য আসামিরা হলেন সৈকত মিরাজ, আশিক মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম, মো. মোহাইমিন ও মো. ফিরোজ।’ তিনি আরো জানান, শুধু আসামিদের বিষয়েই না, পুলিশ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় নিয়েই তদন্ত করছে। পতেঙ্গা থানার এসআই আনোয়ার হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, এক মাস আগে তাসফিয়ার সঙ্গে এলিমেন্টারি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আদনান মির্জার প্রেমের সম্পর্ক হয়। মঙ্গলবার তাদের এ সম্পর্কের এক মাস পূর্ণ হওয়ায় তারা একসঙ্গে দেখা করার সময় নির্ধারণ করে। সে অনুযায়ী তারা বিকালে নগরীর গোলপাহাড় মোড় এলাকায় চায়না গ্রিল নামে একটি রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে। রেস্টুরেন্টের সিসিটিভিতে দেখা গেছে, তারা দুই পিস কেক ও দুটি আইসক্রিম খেয়ে বের হয়ে যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট থেকে ৬টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত ২২ মিনিট সেখানে তারা অবস্থান করে। এরপর পৃথক সিএনজি অটোরিকশায় উঠে জিইসি মোড়ের দিকে চলে যায়।

তাসফিয়ার বাবা আমিন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘খোঁজাখুঁজির পর তাসফিয়াকে না পেয়ে তার বন্ধুদের কাছ থেকে আদনানের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করি। এরপর তাকে নিয়ে মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখি। সে আমাকে জানায়, বিকালে তারা এখানে এসেছিল। পরে তাসফিয়াকে সে বিদায় দিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেয়।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads