• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বাংলাদেশ

সায়েন্স ল্যাবরেটিতে নিয়োগ আবেদন না করেই চাকরি!

  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০১৮

সাঈদ আহমেদ

আবেদন না করেই সরকারি চাকরি পান মো. ফেরদৌস গাজী। নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। সরকারি চাকরির বয়স ছিল না মোছা. আছমা খানমের। ভোটার আইডি কার্ড পরিবর্তন করে বয়স কমিয়ে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান তিনিও। আনসার সদস্য হিসেবে চাকরি করেননি, প্রশিক্ষণও নেননি সাইদুর রহমান। ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেয়েছেন আনসার কোটায়।

নিয়োগে এ ‘অসম্ভব’কে ‘সম্ভব’ করা হয়েছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে জনবল নিয়োগে। সম্প্রতি দেড় শতাধিক শূন্যপদে নিয়োগে অবিশ্বাস্য দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের কতিপয় পদস্থ কর্মকর্তা। নিয়োগপ্রতি দর ওঠানামা করে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা।

চাঞ্চল্যকর এ দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে বাংলাদেশের খবরের নিজস্ব অনুসন্ধানে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ১২ শ্রেণির ১৭৯ শূন্য পদ পূরণে ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পদগুলোর মধ্যে ছিল জুনিয়র মেকানিক, টেকনিশিয়ান, জুনিয়র টেকনিশিয়ান, স্টেনোটাইপিস্ট, টাইপিস্ট, টেলিফোন অপারেটর, সিকিউরিটি গার্ড, অফিস সহায়ক (এমএলএসএস), প্লাম্বিং হেলপার, ইলেকট্রিক হেলপার, মালী ও ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট।

রাজস্ব খাতের এ পদগুলো পূরণে প্রার্থীদের যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে অষ্টম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক বা ডিপ্লোমাধারী। বয়স নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি অনুযায়ী ১৮ থেকে ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদনকারীর ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর। পদগুলোর বেতন স্কেল ৮ হাজার ২৫০ থেকে ২৬ হাজার ৫৯০ টাকা। কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই কর্মকর্তাদের পছন্দে তাদের চাকরি হয়েছে।

তথ্যে আরো দেখা যায়, নিরাপত্তাকর্মী পদে আনসার কোটায় চাকরি হয়েছে মুন্সীগঞ্জের মো. সাইদুর রহমানের। তার দাখিলকৃত কাগজপত্রে আনসারে চাকরির সার্টিফিকেট নেই।

নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুলহাস আহমেদের। তিনি কম্পিউটার না জানলেও লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় তাকে ‘উত্তীর্ণ’ দেখিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।

বিসিএসআইআরের সচিব মো. খলিলুর রহমানের বাসার কাজের বুয়া ছিলেন ময়মনসিংহের নূরজাহান নূরী। তাকে ও তার ভাই বাবুল হাসানকে মালী পদে চাকরি দিয়ে কাজ করাচ্ছেন খলিলুর রহমানের নিজের বাসায়। খলিলুর রহমানের ড্রাইভার ইব্রাহিম মুসলিমের ছেলে নূরুন্নবীকে নিয়োগ দেওয়া হয় টেলিফোন অপারেটর হিসেবে। ইব্রাহিম মুসলিমের ভাতিজা সবুজ মিয়া চাকরি পান মালী পদে।

অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রতিষ্ঠানটির ৩ কর্মকর্তা। এ নিয়োগের অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির প্রধান বিসিএসআইআরের সদস্য (প্রশাসন) মো. আবদুুল মাবুদ বাংলাদেশের খবরকে প্রথমে নিয়োগের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। পরে দাবি করেন, যথানিয়মে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

বিসিএসআইআর যা সায়েন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে অধিক পরিচিত। সরকারি এ সংস্থার দায়িত্ব হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় উৎকর্ষ অর্জন। প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশের শিল্পায়ন ও উন্নয়নে সহযোগিতা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads