• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

সংরক্ষিত ছবি

বাংলাদেশ

ডিজিটাল বাংলাদেশ

  • ইশতিয়াক আবীর
  • প্রকাশিত ১০ মে ২০১৮

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। প্রথমদিকে অনেকেই বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে না পারলে এখন এটাই বাস্তব। ইতোমধ্যে সব মোবাইল গ্রাহককে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমসহ সব ধরনের সেবা অনলাইনে মিলছে। কৃষি ক্ষেত্রেও লেগেছে ডিজিটাল হাওয়া। অনলাইনেই মিলছে কৃষি সেবা। বিদ্যুৎ আর গ্যাস বিল দিতে এখন আর ব্যাংকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মুহূর্তেই টাকা জমা দেওয়া যায় ও পাঠানো যায় কয়েকটি বোতাম টিপে। বেতনভাতার টাকাও এখন মোবাইলে প্রদান করছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

তরুণ প্রজন্মকে আইসিটি খাতে দক্ষ করতে সারা দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, শিক্ষক বাতায়ন, ই-বুক করা হয়েছে। ২৩ হাজার ৩৩১টি মাধ্যমিক ও ১৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে দেশের ৮ হাজার ৫৮৭টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র চালু হয়েছে। কম্পিউটার কম্পোজ থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য, ভর্তি ফরম পূরণ, জন্মনিবন্ধন, বীমা, কৃষিকাজের জন্য মাটি পরীক্ষা ও সারের সুপারিশ, ডাক্তারি পরামর্শসহ প্রতিদিন ৬০ ধরনের সেবা মিলছে এই কেন্দ্র থেকে। দেশের ৮ হাজার পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল সেন্টারে রূপান্তর করা হয়েছে। সরকারি অনেক সেবাই পাওয়া যাচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে।

দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনে ৪০৭টি ও ৩২১টি পৌরসভায় ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। আইসিটি ডিভিশন এবং এটুআইয়ের মতে, প্রতি মাসে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এসব কেন্দ্র থেকে সেবা নিচ্ছে। এটুআইয়ের হিসেবে ডিজিটাল সেন্টার থেকে উদ্যোক্তারা এর মধ্যে আয় করেছেন ১৪০ কোটি টাকা। ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর দেশের সব জেলায় ই-সেবাকেন্দ্র চালু হয়েছে। দালালদের উৎপাত ছাড়াই ই-সেবাকেন্দ্র থেকে তিন দিনের মধ্যে মিলছে জমির পর্চাসহ বিভিন্ন সেবা। অনলাইনে দরপত্র জমা দিতে ঠিকাদারদের জন্য চালু করা হয়েছে ই-প্রকিউরমেন্ট। ভূমি মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে সকল রেকর্ড এসএ, সিএস, বিআরএস ও খতিয়ান কপি ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি খতিয়ান ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। খুব শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে ডিজিটাল রেকর্ড রুম। এর মধ্যে ২৩ লাখের বেশি রেকর্ড ডিজিটাল সিস্টেমে প্রদান করা হয়েছে।

প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে সারা দেশে ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরেই মধ্যে বেশ কয়েকটি হাইটেক পার্কের কাজ চলছে। সরকার আশা করছে, ২০৩০ সাল নাগাদ সফটওয়্যার ও বিভিন্ন সেবা রফতানি হাইটেক পার্ক থেকে এক হাজার কোটি ডলার আয় করা সম্ভব হবে।

অনলাইনেই আয়কর রিটার্ন ফর্ম ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায়। ট্রেন, বাস, লঞ্চের টিকেট থেকে শুরু করে কেনাকাটা সবই করা যায় ঘরে বসেই। উন্নত দেশগুলোর মতো অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশি সেবার মতো অনেক সেবাই মিলছে ৯৯৯-এর মতো টোল ফ্রি নম্বরে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে উপার্জন কয়েক বছর আগেও রূপকথার গল্প মনে হতো আমাদের দেশে। কিন্তু সেই ধারণা এখন মিথ। বর্তমানে ্বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ফ্রিল্যান্সার আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সর্বশেষ সংযোজন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। এর মাধ্যমে মহাকাশ দখলে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads