• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মাটিতে হঠাৎ মেঘের কুণ্ডলী!

সিলেটের গোপালগঞ্চে গত শনিবার এভাবেই ঘূর্ণিবাতাসে ধূলিকণা ও জলকণা উঠে যায় আকাশে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাংলাদেশ

মাটিতে হঠাৎ মেঘের কুণ্ডলী!

  • সিলেট ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৮ মে ২০১৮

রোজার বিকাল। ইফতারের আয়োজনে ব্যস্ত অনেকেই। এর মধ্যেই সিলেটের গোলাপগঞ্জের লক্ষ্মণাবন্দে ঘটে গেল এক আকস্মিক ঘটনা। গত শনিবার লক্ষ্মণাবন্দের নোয়াইচক গ্রামে আকাশ থেকে হাতির শুঁড়ের মতো নেমে আসে ‘মেঘের কুণ্ডলী’।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে ব্যাখ্যা নেই অদ্ভুতুড়ে এই ঘটনার। এ কারণে ওই এলাকায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্যের। কেউ কেউ আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। তবে সিলেট আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘটনাটি স্বাভাবিক। বাতাসের চাপের তারতম্যের কারণে এমন ঘটে থাকতে পারে।

শনিবার বিকাল ৪টার দিকে হঠাৎ করেই নোয়াইচক গ্রামের দক্ষিণপাশের কৃষিজমির ওপরে ধোঁয়ার মতো একটি কুণ্ডলী দেখা দেয়। তা দেখে স্থানীয়রা মনে করেন আকাশ থেকে ‘মেঘের কুণ্ডলী’ নেমে এসেছে ওই জমিতে। অবশ্য তাদের কেউ কেউ প্রথমে এই ঘটনাকে জলা জমি থেকে গ্যাসের নিঃসরণও ভেবেছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, মেঘের কুণ্ডলীটি ছিল বাঁকা চাঁদের মতো। মাটিতে পড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তা মিলিয়ে যায়। ইউটিউবে প্রকাশিত এ ঘটনার একটি ভিডিওতেও দেখা গেছে, মেঘের কুণ্ডলীটি ছিল বাঁকানো।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নছিরুল হক শাহিন জানান, তিনিও ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছেন। একটি ভিডিওতে তিনি ঘটনাটি দেখেছেন। ওই ভিডিওতে ছোটখাটো একটি ঘূর্ণিঝড়ের মতোই জলা জমির পানি পাক খেয়ে খেয়ে আকাশে উঠতে দেখা গেছে, যা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন শাহিন।

এ বিষয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবু সাঈদ বলেন, বাতাসের চাপে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। বাতাস কুণ্ডলী পাকিয়ে উপরে ওঠার সময় সঙ্গে পানি ও ধূলিকণা উঠেছে বলেই এমন ঘটেছে। তিনি জানান, বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের সময়ও এমনটাই ঘটে।

এমন ঘটনা কেন ঘটে?

গ্রীষ্মকালে সূর্যের তাপ খাড়াভাবে পৃথিবীর ওপর (বিষুবরেখা বরাবর) পড়ে। তাতে করে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা যায় বেড়ে। আর তাপমাত্রা বেড়ে গরম হয়ে যাওয়া বাতাস আশপাশের অন্য বাতাসের তুলনায় হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়। আশপাশ এলাকার বায়ুর সঙ্গে দেখা দেয় চাপের তারতম্য। এ সময় চারপাশ থেকে অপেক্ষাকৃত আর্দ্র বাতাস শূন্যস্থান পূরণে ছুটে আসে। এ সময় বাতাস একটি কেন্দ্র তৈরি করে প্রবল বেগে আবর্তিত হয়। বাতাসের এই আবর্তনকেই ঘূর্ণি বলা হয়।

গোলাপগঞ্জেও শূন্যস্থান পূরণের জন্য আশপাশের এলাকায় শীতল বাতাস ওই জলা জমির উপরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। সে সময় কিছু ধূলিকণা ও জলকণা সেই আবর্তের সঙ্গে উপরে উঠে গেছে। আর পৃথিবীর ঘূর্ণনের প্রভাবে সৃষ্ট কোরিওলিস শক্তির কারণে কুণ্ডলীটি সোজা না হয়ে কিছু বেঁকে গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads