• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ভারী বর্ষণের জলজটে ভোগান্তি রাজধানীজুড়ে

একটু ভারী বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় জলবদ্ধতা। ছবিটি গতকাল তোলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাংলাদেশ

ভারী বর্ষণের জলজটে ভোগান্তি রাজধানীজুড়ে

  • রানা হানিফ
  • প্রকাশিত ২৪ জুন ২০১৮

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবীরা। তবে সরকারি অফিসসহ বেশ কিছু অফিস-আদালতে এখনো ছুটির আমেজ। কর্মদিবসের প্রভাব পড়েনি বললেই চলে। এখনো চিরচেনা ঢাকা শহর যানজটমুক্ত। তাই খুব একটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না নগরবাসীকে। তবে নগরজীবনের ‘যান্ত্রিক’ ভোগান্তি থেকে কিছুটা মুক্ত হলেও আষাঢ়ের স্বরূপটা গতকাল ভালোই টের পেয়েছে নগরবাসী। আষাঢ়ের নবম দিনে গতকাল শনিবার সপ্তাহের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজধানীতে। ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায় রাজধানীর বেশির ভাগ সড়ক, পাড়া-মহল্লার অলিগলি। জলজট দেখা গেছে মগবাজার ফ্লাইওভারেও। যদিও জলাবদ্ধতার এমন ভোগান্তি নতুন কিছু নয় রাজধানীবাসীর জন্য।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জলজটের ভোগান্তি কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ, বরং বাড়তে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টির এ প্রবণতা থাকবে আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত। রাজধানীতে হতে পারে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ। আবহাওয়া অফিস বলছে, জুনে এমন বৃষ্টিপাত প্রকৃতির স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। থেমে থেমে কিংবা একনাগাড়ে বৃষ্টিপাত হবে আগস্ট পর্যন্ত।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শনিবার রাজধানীতে ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ রোববারও ভারী বর্ষণ হতে পারে।

গতকালের বৃষ্টিতে রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও পরিণত হয়েছিল জলাশয়ে। এসব এলাকার প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে দেখা গেছে হাঁটু থেকে কোমরপানি। দীর্ঘ সময় জলজট ছিল ধানমন্ডির বেশ কিছু সড়কে। জিগাতলা, শংকর, ধানমন্ডি ১৫ নম্বর এলাকায় জমে হাঁটুপানি। পান্থপথ থেকে সেন্ট্রাল রোড পর্যন্ত গ্রিন রোডের উভয় পাশের রাস্তা ছিল বদ্ধ জলে। জলাবদ্ধতায় ডুবে যায় সড়ক বিভাজকও। একই চিত্র ছিল রাজধানীর আরামবাগ, ফকিরাপুল, মালিবাগ, রামপুরা, রামপুরা মহানগর প্রজেক্ট, খিলগাঁও এলাকায়। রাস্তার ওপর পানি জমে থাকে মহাখালী থেকে বনানী-কাকলী মোড় পর্যন্ত সড়কেও।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় এ বৃষ্টিতে কর্মজীবীদের তেমন অসুবিধা না হলেও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। জলাবদ্ধতার কারণে অধিকাংশ সড়কে রিকশার বিকল্প যানবাহন ছিল না বললেই চলে।

বেসরকারি চাকরিজীবী এসএমএ আব্বাস বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরেছি তিন দিন আগে। ঢাকায় বেশ গরম ছিল। আজকের (শনিবার) বৃষ্টি বেশ স্বস্তি দিয়েছে। কিন্তু বাসা থেকে বের হওয়াটাই ছিল দুরূহ। শ্যামলী থেকে পান্থপথের অফিসে যেতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। জলাবদ্ধতার ভয়ে নিজের বাইকটাও বের করতে পারিনি।

মতিঝিলের ফুটপাথের হকার শহিদুল ইসলাম বলেন, আজ (শনিবার) মতিঝিল এলাকার বেশ কিছু অফিস খোলা ছিল। সেই আশায় সকালে দোকান খুলেছিলাম। কিন্তু প্রচণ্ড বৃষ্টিতে দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হই।

বোনকে ভর্তির তথ্য নিতে গিয়ে গ্রিন রোডে বিপদে পড়েন বেসরকারি কর্মজীবী হাসনা হেনা। তিনি বলেন, ধানমণ্ডির ভিকারুননিসা স্কুলে কাজিনকে ভর্তি করার তথ্য নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু গ্রিন রোডে এত পানি ছিল যে রিকশায় পা তুলে বসেও রেহাই পাইনি। রিকশাটি বেশ কয়েকবার গর্তে পড়ে যায়।

আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, এখন মধ্য আষাঢ়। বাংলাদেশে আষাঢ়-শ্রাবণকে বর্ষা মৌসুম ধরা হয়। বাস্তবে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হয় মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকেই। তখন থেকেই বৃষ্টির শুরু, থাকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এখন যেটা হচ্ছে এটা স্বাভাবিক বর্ষণ। এটা আগামী দুই-আড়াই মাস থাকবে। তিনি বলেন, গত দুই মাসের হিসাব অনুযায়ী এ বছর বৃষ্টিপাত অন্যান্য বছরের স্বাভাবিক মাত্রার থেকে কিছুটা বেশি। এমন প্রবণতা পুরো জুলাই থাকতে পারে। শনিবারের মতো রবি ও সোমবারও দেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেটের অনেক জায়গা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads