• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
দক্ষ ‘ট্রাফিক পুলিশ’

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় সাতমসজিদ রোড সড়কে বৃষ্টিতে ভিজে এক তরুণী জিগাতলা থেকে আসা যানবাহনগুলোকে ক্রমাগত এ নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ

দক্ষ ‘ট্রাফিক পুলিশ’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ আগস্ট ২০১৮

‘প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস আর জিপগাড়ি ডানদিকে যান, মোটরসাইকেল সোজা মাঝ বরাবর যাবেন। আর রিকশা বাম দিকে লাইন করে যান।’ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় সাতমসজিদ রোড সড়কের ধানমন্ডি ৮/এ’র সামনের রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজে এক তরুণী জিগাতলা থেকে আসা যানবাহনগুলোকে ক্রমাগত এ নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন।

পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তরুণী যানবাহন মালিকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বের করে দেখানোর কথা বলছিলেন। আশপাশে কোথাও ট্রাফিক পুলিশ দেখা গেল না। ট্রাফিক পুলিশ না থাকলেও সব ধরনের যানবাহন সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করছিল। কোথাও কোনো যানজট নেই। এ অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য।

মেয়েটির ডাকনাম কথা। ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী। দু’দিন আগেও যে মেয়েটি ক্লাস-বাসা ও পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকতেন, কখনো এভাবে রাস্তায় দাঁড়াবেন তা কল্পনাও করেননি, সেই মেয়েটি মঙলবার ও গতকাল বুধবার- দক্ষ ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করছেন! শুধু কথা একা নয়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এমনই হাজারো কথা রাস্তায় নেমেছেন।

আলাপকালে কথা নামের ওই তরুণী বলেন, ঘাতক বাসের চাপায় অহরহ মানুষ মারা যাচ্ছে; হাত, পা, কোমর ভেঙে কিংবা মাথায় আঘাত পেয়ে অনেকেই পঙ্গু হচ্ছে। অথচ বছরের পর বছর সবাই যেন নিশ্চুপ থাকছে। আইন থাকলেও ঘাতক চালকদের শাস্তি হচ্ছে না।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগেই শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের যে দুটি ভাইবোন মারা গেল তারা ঘুণাক্ষরেও কি ভেবেছিল স্কুল শেষে বাড়ি ফিরতে পারবে না। এ অবস্থা থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে যুবসমাজ জেগে উঠেছে।

সরেজমিন রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, জিগাতলা ও ধানমন্ডি এলাকায় দেখা গেছে, সবগুলো রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছে আন্দোলনকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামার কারণে আশপাশে ট্রাফিক পুলিশ চোখে পড়েনি। দু-এক জায়গায় পুলিশ কর্মকর্তাদের দেখা গেলেও তাদের বেশ খানিকটা দূরে ফুটপাথে নিষ্ক্রিয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

গাড়ি সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করলেও অল্প ব্যবধানের মধ্যে বার বার লাইসেন্স পরীক্ষা নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। জিগাতলা মোড়ে এক ভদ্রলোককে কয়েকজন কিশোর এসে লাইসেন্স দেখাতে বললে তিনি বলেন, ধানমন্ডি ৯/এ থেকে আসতে আসতে কয়েকজনকে তো লাইসেন্স দেখালাম। আবার কী দেখাতে হবে। কিশোররা নাছোড়বান্দা। তাদের একজন বলে উঠল, পুলিশ চাইলে তো বার বার দেখান, সঙ্গে টাকাও দেন। আমাদের দেখালে সমস্যা কোথায়।

তবে সমস্যা হলেও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন তিনি সমর্থন করেন বলে জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads