• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
শিশুটি জন্মিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই!

এক অন্তঃসত্ত্বা মায়ের প্রতীকৃতি

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ

শিশুটি জন্মিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই!

  • কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ আগস্ট ২০১৮

প্রসব বেদনা নিয়ে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা। ভর্তি হওয়ার চার দিন পর চিকিৎসকরা তাকে জানান তার গর্ভের সন্তান বেঁচে নেই। মৃত সন্তান অপসারণে ওই নারী ও তার স্বজনদের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তারা এতে রাজি না হয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, সন্তান জীবিত আছে। পরে সিজারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। হতাশাজনক প্রথম ঘটনাটি ঘটে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। আর পরের খুশির খবরটি জানায় সদর উপজেলা মোড়ের বেসরকারি ইসলামিয়া হাসপাতাল। সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রসূতি ও তার পরিবারের সদস্যরা। আর ঘটনা জানার পর তদন্তসাপেক্ষে সরকারি হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। ভুক্তভোগী প্রসূতির নাম খুশি খাতুন। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মনির হোসেনের স্ত্রী।

খুশি বাংলাদেশের খবরকে জানান, প্রসব বেদনা উঠলে গত ৮ আগস্ট আমাকে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা (জেনারেল হাসপাতাল) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আল্ট্রাসনো রিপোর্টে দেখা যায়, আমার গর্ভে সন্তান রয়েছে। চিকিৎসক তাদের সুবিধামতো সময়ে সন্তান প্রসব করাবেন বলে জানান। কিন্তু শনিবার জানানো হয় গর্ভের সন্তান বেঁচে নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন কথায় আমি ভেঙে পড়ি। তখন একজন নার্স আমার শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এতে আমি যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকি। পরে আরো একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। আমি মনে করলাম, মৃত প্রসব করানোর জন্যই নার্স শরীরে ইনজেকশন পুশ করছেন। এতেও সন্তান প্রসব না হওয়ায় আমার স্বামী ও বাবা আমাকে নিয়ে যান বেসরকারি ইসলামিয়া হাসপাতালে। সেখানে ফের আল্ট্রাসনো করানো হয়। রিপোর্টে জানা যায়, গর্ভের সন্তান জীবিত রয়েছে। দ্রুত ওই হাসপাতালেই আমার সিজারিয়ান অপারেশন করে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।

তিনি বলেন, আমার সন্তানের মাথা লম্বাকৃতির হয়েছে এবং আমাদের দুজনের শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ভালো নেই। এ অবস্থায় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য তাকে ও সন্তানকে ফের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ‘নিবিড়’ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

ইসলামিয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সাঈদ এ বিষয়ে জানান, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণেই মা ও শিশুর জীবন বিপন্ন হতে চলেছে।

খুশি খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দুটি জীবন এখন সঙ্কটাপন্ন। অবহেলার জন্য দায়ী চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন তারা।

জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার জানা মতে, খুশি নামে এক প্রসূতি নারী হাসপাতালে ভর্তি হলেও তার গর্ভে মৃত সন্তান থাকার বিষয়টি তাকে হাসপাতালের কেউ নিশ্চিত করেনি। এ অভিযোগ সঠিক নয়। তবু যদি হাসপাতালের কোনো স্টাফ জড়িত থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads