• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯

বাংলাদেশ

সবজির দাম চড়া, বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দামও

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

দু’একদিনের হলেও বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারে। আগেভাগেই বাজারে আসা বেশ কিছু শীতকালীন সবজির দাম এখন নাগালের বাইরে। পাশাপাশি বাজারে বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দামও।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ওইসব বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন প্রতি লিটার খুচরা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮২-৮৫ টাকায়। যা সপ্তাহ খানেক আগেও ৮০-৮২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০-১১০ টাকায় মিলছে।

বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে করের প্রভাবে খোলাবাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। একই কারণে এর আগে খোলা চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

যদিও তথ্য বলছে, বিশ্ববাজারে এখন নিম্নমুখী একটি পণ্য ভোজ্যতেল। কিন্তু দীর্ঘসময় তেলের দামে এ নিম্নমুখিতার কোনো সুফল পায়নি দেশের মানুষ। উল্টো চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকে আমদানিতে আগাম করারোপকে কারণ দেখিয়ে ভোজ্যতেলের দাম দুই দফা বাড়ানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারের তথ্য বলছে, গত এক বছর টানা নিম্নমুখী সয়াবিন ও পাম তেলের দাম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৮৯০ ডলার, যা এখন ৭৪৮ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে পাম তেলের দাম কমছে দেড় বছর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ হারে দেশের বাজারে তেলের দাম সমন্বয় করা হলে বছর ব্যবধানে কেজিপ্রতি সয়াবিনের দাম কমপক্ষে ১২ টাকা ও পাম তেলের দাম ১৪ টাকা কমার কথা।

শুধু তেল নয়, চিনির দামেও রয়েছে অসামঞ্জস্য। বিশ্ববাজারে গত বছরের আগস্টের পর থেকে চিনির দাম প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। ওই সময় প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল দশমিক ৪৯ ডলার, যা এখন দশমিক ২৮ ডলার। অন্যদিকে দেশের বাজার তদারকি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যানুসারে, বছর ব্যবধানে দেশের বাজারে চিনির দাম বেড়েছে সাড়ে ১২ শতাংশ।

অন্যদিকে কাঁচাবাজারে দুই সপ্তাহ আগে থেকে মিলছে শীতের আগাম সবজি। কিন্তু এই সবজি কিনতে হলে চড়া দাম গুনতে হচ্ছে। এখন প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা। ছোট ছোট প্রতিটি ফুলকপির দাম ৪০-৫০ টাকা। এ ছাড়া মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি।

তবে খুব বেশি হেরফের হয়নি কিছু কিছু সবজির দামে। এসবের মধ্যে রয়েছে- আলু ২০-২৫ টাকায়, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৩০-৩৫ টাকা। এ ছাড়া চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজির তালিকায় রয়েছে- পটোল, ঝিঙে, ধুন্দল, চিচিঙা, বেগুন, ঢেঁড়শ। এগুলো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়।

অন্যদিকে ঈদের পর থেকে বাজারে স্বস্তি কেড়ে নেওয়া তিনটি পণ্য পেঁয়াজ, রসুন ও আদা। বাজারে এখনো পেঁয়াজের কেজি ৫০-৫৫ টাকা। আর চীনা রসুন সাধারণত ৮০-১২০ টাকার মধ্যে থাকে, সেটা এখন ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। ১০০ টাকা কেজির আশপাশের দামে আদা কিনতে অভ্যস্ত মানুষকে এখন দাম দিতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫০ টাকার বেশি।

তবে স্থিতিশীল রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। এখন ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। সাদা ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির দাম প্রতি কেজি ২১০-২২০ টাকা। গরুর মাংস আগের মতো ৫২০-৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ইলিশের মৌসুমের কারণে স্থিতিশীল রয়েছে মাছবাজার। বাজারগুলোতে ইলিশের বাড়তি চাহিদার কারণে অন্য মাছগুলোর বিক্রি কমেছে। তবে বাড়তি চাহিদা থাকলেও ইলিশের দাম খুব বেশি কমেনি। বাজারভেদে এক কেজি ইলিশ ১১০০-১২০০ টাকা, ৯০০ গ্রামের প্রতি পিস ইলিশ ৯০০-১০০০ টাকা, ৮০০ গ্রামের ৮৫০-৯০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ৭০০-৭৫০ টাকা ও ৫০০ গ্রামের প্রতি পিস ইলিশ ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads