• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ঢাকাকে মাটিতে নামাল রাজশাহী

লোগো বিপিএল

বিপিএল

ঢাকাকে মাটিতে নামাল রাজশাহী

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

বিপিএলে টানা চার জয়ে বলতে গেলে উড়ছিল সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস। কিন্তু বিশেষ দিনে এক ঝটকায় ঢাকাকে মাটিতে নামাল মিরাজের রাজশাহী কিংস। গতকাল সিলেটে ঢাকাকে ২০ রানে হারিয়েছে রাজশাহী। চলমান বিপিএলে ঢাকার এটি প্রথম হার। দিনটি ছিল রাজশাহী কিংসের খেলোয়াড়দের জন্য স্পেশাল। কারণ এদিন সবাই নিজ মায়ের নামে জার্সি পরে নেমেছিলেন মাঠে। উপলক্ষটা রঙিন হলো রাজশাহীর দারুণ জয়ে। হারলেও ৫ ম্যাচে চার জয়ে আট পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরেই রয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। সেখানে ছয় ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জয় পেয়ে লড়াইয়ে ফিরল রাজশাহী।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীর সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৬ রান। জবাবে ঢাকা নির্ধারিত ২০ ওভারে তুলতে পারে ৯ উইকেটে ১১৬ রান। দুর্দান্ত বোলিংয়ের কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন রাজশাহীর স্পিনার আরাফাত সানি। বোলিং ফিগারটা বেশ মনোমুগ্ধকর। ৪ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ৮। এর মধ্যে একটি আবার মেডেন। উইকেট পেয়েছেন তিনটি।

জিততে হলে ঢাকাকে করতে হবে ১৩৭ রান। আপাতদৃষ্টিতে উড়ন্ত ঢাকার কাছে এমন টার্গেট মামুলিই মনে হয়েছিল। কিন্তু শুরুর ধাক্কা আর সামলাতে পারেনি দলটি। সব ম্যাচে দুই ওপেনার সুনীল নারিন ও হজরতউল্লাহ জাজাই দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন। এবার তার ব্যতিক্রম। ৩ বলে ১ রান করে ফেরেন নারিন। হার্ড হিটার জাজাইকে বোল্ড করেন উদানা। ৬ বলে করেন ৬ রান। ২৩ রানে দুই ওপেনার বিদায় নেওয়ার পর টিকতে পারেননি আরেক হিটার আন্দ্রে রাসেল। ১১ রান করে তিনি আরাফাত সানির শিকার।

মিডল অর্ডারে সবাই চেষ্টা করেছেন থিতু হতে। কিছু রানও পেয়েছেন সবাই। কিন্তু তা অতিক্রম করতে পারেনি ২০-এর ঘর। সর্বোচ্চ ২১ রান করেন নুরুল হাসান সোহান। রনি তালুকাদার (১৪), সাকিব আল হাসান (১৩), কিরন পোলার্ড (১৩), মোহাম্মদ নাইম (১৭) নিজের নামের সুবিচার করতে পারেননি। বলতে গেলে রাজশাহীর সুনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে রান তোলা কষ্টকর হয়ে গিয়েছিল তাদের। আসিফ হাসান ৬ রানে ছিলেন অপরাজিত। অপর অপরাজিত ব্যাটসম্যান আলিস ইসলাম বল খেলার সুযোগই পাননি।

৪ ওভারে ৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন রাজশাহীর আরাফাত সানি। মিরাজ ৩ ওভারে ১৮ রানে নেন ২ উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ১ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৯ রান। উদানা ও রাব্বি নেন একটি করে উইকেট। লো স্কোরিং ম্যাচেও দারুণ জয় রাজশাহীর। এমন জয়ের পেছনে দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ কৃতিত্ব দিয়েছেন বোলারদের, ‘আসলে এই জয়ে পুরো ক্রেডিট বোলারদের। দারুণ বল করেছি আমরা। তবে আমাদের রানের স্কোরটা আরো বড় হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু হয়নি। তারপরও ঢাকাকে হারাতে পেরে বেশ খুশি আমি।’

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে রাজশাহী কিংস। একাদশে ছিল পরিবর্তন। প্রায় ৬ বছর পর বিপিএলের ম্যাচ, ৫ বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামেন মার্শাল আইয়ুব। এমন দীর্ঘ বিরতির পর খেলতে নেমেও দুর্দান্ত ব্যাট করেছেন তিনি। তার ব্যাটেই এসেছে ইনিংস সর্বোচচ রান। আগের ম্যাচগুলোয় পারফর্ম করতে না পারা সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হককে এদিন একাদশের বাইরে রাখে রাজশাহী। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন মৌসুমে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা শাহরিয়ার নাফীস।

আন্দ্রে রাসেলের ফুল টসে মিরাজ ফেরেন ১ রানেই। তিনে নামেন মার্শাল। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর বিপিএলে তার প্রথম ম্যাচ, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের পর প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তার ব্যাটিং মূলত বড় দৈর্ঘের উপযোগী মনে করা হয় বলেই এই লম্বা সময় সুযোগ পাননি। কিন্তু এদিন মার্শাল দেখালেন তার অন্য রূপ। চমকে দিলেন দারুণ সব শটে। আন্দ্রে রাসেলের এক ওভারে দুটি দৃষ্টিনন্দন চারের পর ছক্কা মারলেন হুক করে। বাঁহাতি স্পিনার আসিফ হোসেনকে ছক্কায় ওড়ালেন মাথার ওপর দিয়ে।

আরেক পাশে শাহরিয়ার ছিলেন উইকেট আগলে। গতি দিতে পারছিলেন না ইনিংস। তবে টিকে থাকায় গড়ে ওঠে জুটি। চার বলের মধ্যে দুটি বাউন্ডারিতে যখন হাত খোলার চেষ্টা করছেন শাহরিয়ার, তখনই ভাঙে জুটি। নারিন এক ওভারেই ফিরিয়ে দেন থিতু দুই ব্যাটসম্যানকে। ২৭ বলে ২৫ করে আউট হন শাহরিয়ার। তিন চার ও দুই ছক্কায় ৩১ বলে ৪৫ করেন মার্শাল।

এরপর আর খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি রাজশাহীর কোনো ব্যাটসম্যান। জাকির হাসান ভালো কিছুর সম্ভাবনা জাগালেও ফেরেন ১৮ বলে ২০ রান করে। রাজশাহীর ইনিংস তাই বড় হয়নি খুব। রায়ান ডেসকাট করেন ১৬ রান। ওঙ্কার ৯ ও উদানা ছিলেন ৩ রানে অপরাজিত। বল হাতে ঢাকার হয়ে সবচেয়ে ভালো ফিগার সুনীল নারিনের। ৪ ওভারে ১৯ রানে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট পান আন্দ্রে রাসেল, সাকিব আল হাসান ও আলিস আল ইসলাম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads