• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
রাজশাহীর দারুণ প্রতিশোধ

রাজশাহীর দারুণ প্রতিশোধ

ছবি : ইন্টারনেট

বিপিএল

রাজশাহীর দারুণ প্রতিশোধ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ২২ জানুয়ারি ২০১৯

ব্যাট হাতে লরি ইভান্স রীতিমতো ঝড়ই বইয়ে দিলেন। পেলেন সেঞ্চুরি, যা চলমান বিপিএলে প্রথম। এরপর বল হাতে রাব্বি ও মোস্তাফিজের সাঁড়াশি আক্রমণ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিরুদ্ধে ঝলমলে রাজশাহী কিংস। বিপিএলে গতকাল মিরপুরে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে কুমিল্লাকে ৩৮ রানে হারিয়েছে মিরাজের রাজশাহী। দাপুটে জয়ে প্রথম পর্বের হারের শোধটা দারুণভাবেই নিল রাজশাহী।

আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে তিন উইকেটে ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে রাজশাহী কিংস। জবাবে কুমিল্লা অলআউট ১০ বল বাকি থাকতেই, ১৩৮ রানে। ৬২ বলে ১০৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে অনুমিতভাবে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন রাজশাহীর ইংলিশ ক্রিকেটার লরি ইভান্স। সাত ম্যাচে এটি রাজশাহীর চতুর্থ জয়। আর সমানসংখ্যক ম্যাচে কুমিল্লার তৃতীয় হার। দুই দলের পয়েন্টই সমান, ৮।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বিবর্ণ ছিল রাজশাহী কিংসের। ১৩ রানে দুই উইকেটের পতন। ২৮ রানে নেই তিন উইকেট। ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস ৫ রানে মেহেদীর শিকার। ডসনের বলে ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ডাক মারেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। মার্শাল আইয়ুব আগের ম্যাচে ভালো করলেও ডসনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ২ রানে। এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহী কিংস ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে পারবে, এমনটি আসলে কেউ ভাবেননি।

কিন্তু ব্যাট হাতে সেই দুঃসাহসিক কাজটি করে দেখান চতুর্থ উইকেট জুটিতে লরি ইভান্স ও ডাচ অলরাউন্ডার রায়ান ডেসকাট। মারকাটারি ব্যাটিংয়ে এই দুজন নাভিশ্বাস তোলেন কুমিল্লার বোলারদের। রান আসতে থাকে তরতরিয়ে। ৪০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন আগের তিন ম্যাচে ধুঁকতে থাকা ইভান্স। ৬১ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ইভান্স অপরাজিত ছিলেন ৬২ বলে ১০৪ রানে। ঝলমলে ইনিংসে ইভান্স হাঁকিয়েছেন নয়টি চার ও ছয়টি ছক্কা। ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন আরেক অলরাউন্ডার ডেসকাটও। ৪১ বলে তিনি করেন ৫৯ রান। দুটি চারের বিপরীতে ছক্কা হাঁকান তিনটি। কুমিল্লার হয়ে ডসন দুটি ও মেহেদী নেন একটি উইকেট।

রাজশাহীর দেওয়া চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়া করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। দুজনের তুলনায় একটু বেশি সাবধানী ছিলেন আগের ম্যাচে ৭০ রান করে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া তামিম। কিন্তু তাকেই আগে ফিরতে হয় সাজঘরে। ৩৭ রানের জুটি গড়ার পর কামরুল ইসলাম রাব্বিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লংঅফে ক্যাচ আউট হয়ে যান। ২৪ বলে সমান দুই চার ও ছক্কায় ২৫ রান করা তামিমের ক্যাচ নেন মার্শাল আইয়ুব।

তামিম ফেরার পর ৩০ রানের জুটি গড়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন বিজয় ও শামসুর রহমান। কিন্তু ডেসকাট ও সানির জোড়া আঘাতে কাবু হয়ে পড়ে কুমিল্লা। ২৩ বলে ২৬ রান করা এনামুলকে প্রথমে ফেরান ডেসকাট। তারপর শামসুরকে ফেরান সানি। ১৫ রান করে বদলি ফিল্ডার প্রসন্নর হাতে ক্যাচ দেন শামসুর।

দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর পাল্টা আক্রমণে যান কুমিল্লার দুই ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও জিয়াউর রহমান। সেই আক্রমণ বেশি সময় ধরে রাখতে পারেননি তারা। ১০ বলে ২২ রান তোলার পর বিচ্ছিন্ন হন দুজনে। জিয়াউরকে (১২) ফেরান রাজশাহীর ব্যাটিং জুটি লরি ইভান্স ও ডেসকাট। ডাচ তারকার বলে সীমানায় ক্যাচ নেন ইংলিশ তারকা।

জিয়াউর ফেরার পরও রানের চাকা বেশ সচল রাখছিলেন ইমরুল কায়েস ও লিয়াম ডসন। ক্রিজে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ করছিলেন কায়েস। কিন্তু রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আউট হতে থাকেন ব্যাটসম্যানরা। আফগান বোলার কায়িস আহমেদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন ইমরুল। ১০ বলে তার সংগ্রহ ১৫। কুমিল্লা হতাশাটা বড় আকারে দেখা যায় হার্ড হিটার থিসারা পেরেরার আউটে। কায়িসের পরের বলেই লঙ্কান অলরাউন্ডার ক্যাচ দেন ওঙ্কারের হাতে। গোল্ডেন ডাক মারেন পেরেরা।

শেষ পাঁচ ওভারে কুমিল্লার দরকার ছিল ৬৭ রান। কায়িসের করা ১৬তম ওভারে ২২ রান নিয়ে চাপ অনেকটা কমিয়ে ফেলেন আফ্রিদি-ডসন। তবে পরের ওভারে মাত্র তিন রান দিয়ে সেটা পুষিয়ে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে আফ্রিদিকে ফিরিয়ে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন রাব্বি। তবে বোলারের চেয়ে আফ্রিদিকে ফেরানোর কৃতিত্বটা ফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান ওঙ্কারকেই দিতে হবে বেশি। সীমানার দড়ি ঘেষে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন এ প্রোটিয়া ক্রিকেটার। ফেরার আগে ১৫ বলে ১৯ রান করেন আফ্রিদি।

চার বলের ব্যবধানে তিন ব্যাটসম্যানকে তুলে নিয়ে ম্যাচ পুরোপুরি নিজেদের আয়ত্তে এনে দেন রাব্বি। আফ্রিদির পর তিনি তুলে নেন ডসন ও সাইফুদ্দিনের উইকেট। ডসন ১৭ রান করলেও সাইফুদ্দিন কোনো রান করতে পারেননি। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মেহেদী হাসানকে তুলে নিয়ে কুমিল্লাকে ১৩৮ রানেই গুটিয়ে দেন মোস্তাফিজ।

তিন ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন রাব্বি। দুটি করে উইকেট নেন কায়িস আহমেদ ও ডেসকাট। মোস্তাফিজ এক উইকেট পেলেও বোলিং ফিগার ছিল চমৎকার। ৩.২ ওভারে তিনি রান দিয়েছেন মাত্র ৮।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads