• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ফাইনালে চোখ ঢাকার

উইকেট লাভের পর রুবেলকে উইকেটকিপার সোহানের শুভেচ্ছা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বিপিএল

হেরে বিদায় চিটাগংয়ের

ফাইনালে চোখ ঢাকার

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

হারলেই বিদায়, জিতলে সম্ভাবনা থাকবে ফাইনালে ওঠার। বিপিএলে এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। লিগ পর্বে দুর্দান্ত খেলা চিটাগং ভাইকিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব ব্রিগেড। এলিমিনেটর ম্যাচে এই জয়ে ফাইনালে ওঠার স্বপ্নটা আরো দৃঢ় হলো ঢাকার। অন্যদিকে বিদায়ঘণ্টা বাজল মুশফিকুর রহিমের চিটাগং ভাইকিংসের।

গতকাল মিরপুরে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করে চিটাগং। জবাবে ঢাকা ডায়নামাইটস ২০ বল হাতে রেখে পায় কাঙ্ক্ষিত জয়। বল হাতে ৪ উইকেট নেওয়া ঢাকার সুনীল নারিন পান ম্যাচসেরার পুরস্কার। কাল বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মাঠে নামবে ঢাকা ডায়নামাইটস। প্রতিপক্ষ প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া দল (রংপুর ও কুমিল্লা)।

জিততে হলে করতে হবে ১৩৬ রান। মোটামুটি এমন সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ঢাকা ডায়নামাইটসের শুরুটা তেড়েফুঁড়ে। দুই ওপেনার নারিন ও থারাঙ্গা শুরু থেকেই ছিলেন মারমুখী। রান আসতে থাকে তরতরিয়ে। উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হয় দলীয় ৪৫ রানে। খালেদের বলে নাঈমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নারিন। তবে ফেরার আগে খেলে যান ছোট্ট ঝড়ো ইনিংস। মাত্র ১৬ বলে করেন ৩১ রান। যার মধ্যে ছিল ছয়টি চার ও একটি ছক্কার মার।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রনি তালুকদারের সঙ্গে রানের চাকা সচল রাখেন থারাঙ্গা। এই জুটি দলকে নিয়ে যায় ৮৮ রান পর্যন্ত। ১৩ বলে ২০ রান করে খালেদের বলে এলবিডব্লিউ রনি। পরের বলেই বিদায় নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ডেলপোর্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন এই তারকা অলরাউন্ডার। হঠাৎ চাপে পড়া ঢাকাকে পথ দেখান সেই থারাঙ্গা। চতুর্থ উইকেটে তখন তার সঙ্গী নুরুল হাসান সোহান। দলীয় ১১২ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন উপুল থারাঙ্গা। ততক্ষণে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। ৪৩ বলে ৫১ রান তার সংগ্রহ। হাঁকিয়েছেন সাতটি চার, ছিল না ছক্কা। বলা চলে নির্ভরযোগ্য একটি ইনিংস। এরপর আর ঢাকাকে কোনো চাপে পড়তে হয়নি। জয়ের জন্য বাকি কাজটুকু সোহানকে সঙ্গে নিয়ে সারেন কাইরন পোলার্ড। ২০ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ঢাকা। ২০ বলে ২০ রানে সোহান ও ৭ বলে ৭ রানে পোলার্ড থাকেন অপরাজিত। চিটাগংয়ের হয়ে বল হাতে আলো ছড়ানো একমাত্র বোলার খালেদ আহমেদ। ৪ ওভারে এক মেডেনসহ ২০ রানে নেন তিন উইকেট। বাকি এক উইকেট পান স্পিনার নাঈম হাসান।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই ছিল চিটাগং ভাইকিংসের। ইয়াসির আলী যতটা না তার চেয়ে বেশি রান তোলায় ব্যস্ত ছিলেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। তিন ওভারে রান আসে ২২। সাকিবদের কপালে তখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এরপরই অবশ্য চিটাগংয়ের ছন্দপতন। ওপেনার ইয়াসির আলীকে উইকেটের পেছনে নূরুল হাসান সোহানের গ্লাভসবন্দি করান পেসার রুবেল হোসেন। ৯ বলে মাত্র ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন ইয়াসির।

তবে উইকেটের অপর প্রান্তে ডেলপোর্ট চার-ছক্কায় রানের চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছিলেন দক্ষতার সঙ্গেই। তবে দুর্ভাগ্য, দারুণ খেলতে খেলতেই প্রোটিয়া অলরাউন্ডার ডেলপোর্ট ফিরে যান বাজে এক রানআউটে। শর্ট ফাইন লেগে বল ঠেলে দিয়েই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওয়ান ডাউনে নামা সাদমান ইসলাম তাকে সাড়া দেননি। ২৭ বলে ৩৬ করে বড় এক হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়েন ডেলপোর্ট।

দুর্ভাগ্য তখন থেকেই যেন শুরু চিটাগংয়ের। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ওপর ভরসা ছিল ভক্তদের। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেই হারিয়ে ফেললেন তিনি। সুনীল নারিনের বলে বোল্ড। ৬ বলে মুশফিক করতে পারলেন মাত্র ৮ রান। দলীয় ৮১ রানের মাথায় চিটাগংয়ের চার উইকেটের পতন। ১৯ বলে ২৪ রান করে ফেরেন সাদমান ইসলাম নারিনের বলে শুভাগত হোমের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তখনো রানরেট বেশ ভালোই ছিল চিটাগংয়ের।

হতে পারত চ্যালেঞ্জিং স্কোর। কিন্তু এক মোসাদ্দেক ছাড়া আর কেউ কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেননি। শেষ ওভারে এক ছক্কা ও দুই চারে চিটাগংয়ের স্কোরকে ভদ্রস্থ করেন মোসাদ্দেক। তারপর হন রানআউট। তার আগে করে যান ৩৫ বলে ৪০ রানের ইনিংস সর্বোচ্চ স্কোর। তিন চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন মোসাদ্দেক।

যার ব্যাটে-বলে বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতেছে চিটাগং, সেই রবি ফ্রাইলিঙ্কও ব্যাট হাতে ছিলেন নিষ্প্রভ। চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে তিনি করতে পারলেন মাত্র ৪ বলে ১ রান। বাকি দুই বিদেশি শানাকা (৭) ও ভিলজয়েনের (১) ব্যাটও কথা বলেনি দলের প্রয়োজন মুহূর্তে। নাঈম হাসান ৬ রানে থাকেন অপরাজিত।

ঢাকার সেরা বোলার ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারিন। ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। সাকিব ৪ ওভারে দিয়েছেন ১১ রান, তবে উইকেট পাননি। রুবেল আর অনীক পান একটি করে উইকেট। লিগ পর্বে এই ঢাকাকে দুই দফায় হারিয়েছিল চিটাগং। সেই ঢাকার কাছে হেরে এবার বিদায় মুশফিকদের। পূরণ হলো না ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads