• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ফাইনালে ঢাকা বিদায় রংপুর

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে বিদায় করে বিপিএলের ফাইনালে পা রাখলো ঢাকা

ছবি : ইন্টারনেট

বিপিএল

ফাইনালে ঢাকা বিদায় রংপুর

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ভাঙল না গেইলের ঘুম। দুরন্ত ছন্দে থাকা রুশো পেলেন গোল্ডেন ডাক। শেষ ম্যাচে ঝড় তোলা হাওয়েলও হাঁটলেন উল্টো পথে। শেষের পাঁচ ব্যাটসম্যানের রান উঠল না পাঁচের ওপর। তারপরও বোপারা-মিঠুন আর নাদিফের ছোট্ট খণ্ড ঝড়ে রংপুর রাইডার্স করতে পারল ১৪২। এমন লক্ষ্য ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ছিল যেন ডাল-ভাতের মতো। শেষের দিকে টানা তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ঢাকাকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান আন্দ্রে রাসেল। ঢাকা পায় ৫ উইকেটের দারুণ এক জয়। যে জয়ে বিপিএলের ফাইনালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নাম লেখাল সাকিবের ঢাকা। বিদায় গতবারের চ্যাম্পিয়ন মাশরাফির রংপুর রাইডার্স। গত আসরের ফাইনালে এই ঢাকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা স্বাদ পেয়েছিল রংপুর। সেই পুরনো হারের শোধ এবার কোয়ালিফায়ার রাউন্ডেই নিল ঢাকা ডায়নামাইটস। আগামীকাল শুক্রবার শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। 

জিততে হলে করতে হবে ১৪৩ রান। ঢাকার উইকেটে এমন টার্গেট চ্যালেঞ্জিং বটে। বল হাতে রংপুরের শুরুটাও ভালো ছিল। ঢাকার দুই মারকুটে ওপেনার দাঁড়াতে পারেননি। থারাঙ্গা ৪, নারিনে ১৪ রানে বিদায়। আশায় বুক বাঁধে রংপুর। তবে রনি-সাকিবের জুটি ঢাকাকে কক্ষপথে ফেরায়। কিন্তু দলীয় ৯৭ রানের মধ্যে যখন আউট সাকিব (২৩), রনি (৩৫) পোলার্ড (১৪), ম্যাচ কিছুটা হেলে পড়ে রংপুরের দিকে।  যদিও আস্কিং রান রেট তখনো ঢাকার আয়ত্তে। আর সেই সুযোগটা নিলেন আন্দ্রে রাসেল ও নুরুল হাসান সোহান। উইকেটে সেট হয়ে শুরুতে সিঙ্গলসেই মনোযোগ ছিল দুজনের। আস্তে আস্তে বাড়ান ব্যাটের ঝলক। শেষটা তো ঝড়ময়। ২৪ বলে যখন দরকার ১৫ রান, তর সইল না রাসেলের। ১৭তম ওভারে অপুর করা বল টানা তিনবার আছড়ে ফেললেন গ্যালারিতে (১৪৭/৫)। তাতে রংপুরও ছিটকে পড়ল টুর্নামেন্ট থেকে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলার স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেল মাশরাফিদের।

১৯ বলে অপরাজিত ৪০ রানের মধ্যে রাসেলের ছক্কাই মোট পাঁচটি। নেই কোনো বাউন্ডারি। তাকে সঙ্গ দেওয়া সোহানের চিত্র উল্টো। ১৭ বলে অপরাজিত ৯। বল হাতে ৪ উইকেট নেওয়া ঢাকার রুবেল হোসেন জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।   

এর টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের হয়ে উড়ন্ত সূচনার আভাস দেন প্রথমবারের মতো বিপিএল খেলতে নামা নাদিফ চৌধুরী। শুভাগত হোমকে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচে আনেন উত্তেজনা। অপর প্রান্তে ক্রিস গেইল তখনো ধীর-স্থির। এই ম্যাচে গেইলের বড্ড দরকার ছিল ব্যাট হাতে ঝড় তোলার। আন্দ্রে রাসেলকে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে আভাসও দিয়েছিলেন ভিন্ন কিছুর। কিন্তু পূর্ণতা পায়নি শেষ পর্যন্ত। ১২ বলে ২৭ রান করে নাদিফের (দুটি চার, তিন ছক্কা) বিদায়ের পর গেইলও ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা। রুবেলের বলে খোঁচা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। ১৩ বলে দুই ছক্কায় ১২ রান গেইলের, রংপুরের হতাশার শুরুটা যেন সেখান থেকেই।

গেইলের বিদায়ের পর সবার নজর ছিল ধারাবাহিক ভালো খেলা রাইলি রুশোর দিকে। কিন্তু কী হলো তার। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন পোলার্ডের হাতে। বোলার সেই রুবেল। রংপুর শিবিরে তখন দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। তবে চতুর্থ উইকেটে মিঠুন ও বোপারা খেললেন বুঝে শুনে। এই জুটিতেই যা আসল কিছু রান। 

এক-দুই করে এই দুজন দলকে টেনে নেওয়ার পাশাপাশি সুযোগ পেলেই বল পাঠিয়েছেন বাউন্ডারিতে। সাকিবের বলে টানা ছক্কা আসে মিঠুনের ব্যাটে। মিঠুনও পরে আউট হন আলগা শটে। বাঁহাতি পেসার কাজী অনিককে উইকেট দিয়ে আসেন অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে (২৭ বলে ৩৮)। এরপর এক প্রান্তে উইকেট পড়েছে নিয়মিত, আরেক পাশ আগলে রেখেছেন বোপারা। শেষ ওভারে রুবেলের প্রথম তিন বলে একটি ছক্কা, দুটি চারে রান বাড়ান বোপারা। পরের বলে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন সীমানায়। আউট হন ৪৩ বলে সর্বোচ্চ ৪৯ করে।

প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কুমিল্লার বিরুদ্ধে শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা হাওয়েল এদিন নিষ্প্রভ (৮ বলে তিন রান)। শেষের দিকে মাশরাফি (০), নাহিদুল (৪), ফরহাদ রেজা (২), শফিউলরা (০) যেন গেলেন আর এলেন। ২ বল বাকি থাকতে রংপুর অলআউট ১৪২ রানে। বল হাতে ঢাকার নায়ক পেসার রুবেল। ২৩ রানে এক মেডেনসহ নেন চারটি উইকেট। রাসেল-অনিক দুটি, শুভাগত ও সাকিব পান একটি করে উইকেট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads