• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

পুঁজিবাজার

পুঁজিবাজারের লেনদেনে কর হ্রাসের প্রস্তাব

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ এপ্রিল ২০১৮

পুঁজিবাজারে ১০০ টাকা লেনদেনে ৫ পয়সা কর দিতে হয়। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ আগামী অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বাজেটে করের হার দেড় পয়সায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে। করের হার কমানো হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সুবিধা পাবেন বলে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর পক্ষে মত প্রকাশ করা হয়। তাদের এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বলেছেন, যদি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সুবিধা পান এবং এ বিষয়ে যদি নিশ্চয়তা দেওয়া হয় তাহলে লেনদেনের ওপর কর কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। সাধারণ ভোক্তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কর কমানো হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা সে সুবিধা পান না বলেও মন্তব্য করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। বুধবার বিকালে এনবিআর কার্যালয়ে প্রাক বাজেট আলোচনায় ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, লিজিং কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন ও মার্চেন্ট ব্যাংকস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাও আগামী বাজেট নিয়ে তাদের প্রস্তাবনা এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করেন।

ডিএসইর বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান। ডিএসইর প্রস্তাবনায় ডিমিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী স্টক এক্সচেঞ্জের অবকাঠামোগত বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির স্বার্থে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ১০০ শতাংশ কর অব্যাহতি সুবিধা চাওয়া হয়। ক্রমান্বয়ে করের হার সমন্বয় করার প্রস্তাব দেয় ডিএসই।

প্রস্তাবনার পক্ষে মতামত তুলে ধরে ডিএসইর এমডি বলেন, বর্তমানে ডিএসই পরিচালন ক্ষতির মুখে রয়েছে। এখন কর হার বাড়িয়ে দিলে স্টক এক্সচেঞ্জ ফি বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হবে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখে পড়বে। এ কারণে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত আয়কর থেকে ডিএসইকে ১০০ শতাংশ অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানায় ডিএসই। উল্লেখ্য, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১০০ শতাংশ কর এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬০ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪০ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯ পর্যন্ত ২০ শতাংশ কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

এনবিআরের চেয়ারম্যান ডিএসইর এ প্রস্তাবনার বিষয়ে বলেন, দেখা যাক কী করা যায়। তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারছি না।

ডিএসইর শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার হস্তান্তরে ১৫ শতাংশ মূলধনী আয়কর থেকে অব্যাহতি, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের ওপর আয়কর মুক্ত সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকায় উন্নীত করা, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত ছাড়া কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরো বৃদ্ধি, করপোরেট কর হার কমানো, ন্যূনতম ২০ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে বাজারে ছাড়লে তালিকাভুক্তির বছরে আয়কর রেয়াত ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে ডিএসই।

বর্তমানে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি অপর একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ধারণ করলে অর্জিত লভ্যাংশের ২০ শতাংশ কর প্রদান করতে হয়। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এ লভ্যাংশ বিলোপের দাবি জানিয়েছে। কোনো অনাবাসীকে কারিগরি বা টেকনিক্যাল সেবা ফি বাবদ ২০ শতাংশ হারে উৎস কর কর্তনের যে বিধান রয়েছে তা ৫ শতাংশ হারে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে সিএসই।

এদিকে ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে পলিসি ম্যাচিউরড হওয়ার পর অতিরিক্ত আয়ের ওপর ৫ শতাংশ হারে কর কর্তন করা হচ্ছে। এতে সাধারণ পলিসি হোল্ডাররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বীমা খাতের সম্প্রসারণের স্বার্থে এ কর প্রত্যাহারের দাবি জানায় তারা।

বীমা এজেন্টের ওপর ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর কাটা হচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, এরপর আরো ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। ভ্যাট আরোপের বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বীমা ও এনবিআরের মধ্যে একটা লড়াইয়ের মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। আমরা এটা চাই না। এখন যদি এনবিআর এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাহলে আদালতের বাইরে এ বিষয়টির মীমাংসা হতে পারে। না হলে আদালতেই এটি চূড়ান্ত হবে।

বীমার প্রতিনিধিরা জানান, বাংলাদেশে জিডিপিতে বীমা খাতের ভূমিকা খুবই কম। বীমা খাতের সম্প্রসারণ, জিডিপিতে অবদান বাড়ানোর জন্য এনবিআরের সহায়তা কামনা করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads