• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে ব্যাংক

ব্যাংক শেয়ারের দর বাড়ায় ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকেও বাড়তি পয়েন্ট যোগ হয়

সংগৃহীত ছবি

পুঁজিবাজার

মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে ব্যাংক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ আগস্ট ২০১৮

বছরের শুরু থেকে দর হারানোর শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাতের শেয়ারে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই তুলনামূলক কম দরে থাকা এ খাতের শেয়ার নিয়ে নিজেদের পোর্টফোলিও তৈরি করছেন তারা। এতে ব্যাংক খাতের চাহিদা বাড়ায় দরও বাড়ছে, যার প্রভাব পড়ছে স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচকে। ব্যাংক শেয়ারে ভর করে গত ১৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১৬২ পয়েন্ট। পুঁজিবাজারের লেনদেন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছর গত ২৬ জুলাই পর্যন্ত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে প্রায় ২৯ শতাংশ দর হারায়। এ সময় ব্যাংক খাতের বাজার মূলধন ছিল ৫৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার নেমে আসে বিনিয়োগসীমায়। এমন পরিস্থিতিতে কম দরে পাওয়া ব্যাংক শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন বিনিয়োগকারীরা। চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে গত ১৫ কার্যদিবসে ব্যাংক শেয়ারের দর প্রায় ১৩ শতাংশ বাড়ে। খাতটির বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬০ হাজার ৫৩০ কোটি টাকায়। এতে টেলিযোগাযোগ খাত হটিয়ে আবারো শীর্ষ বাজার মূলধনী খাতের প্রথম স্থানটি দখলে নেয় ব্যাংক।

ব্যাংক শেয়ারের দর বাড়ায় ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকেও বাড়তি পয়েন্ট যোগ হয়। গত ২৬ জুলাই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ছিল ৫৩০৫ পয়েন্টে। ব্যাংকের লেনদেনযোগ্য শেয়ার বেশি থাকায় মূল্যসূচকের এ খাতটির প্রভাবও বেশি। ১৫ কার্যদিবসে ১৩ শতাংশ মূল্য বাড়ায় ডিএসইর মূল্যসূচকে বাড়তি পয়েন্ট যোগে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্যাংক খাত। গতকালও ব্যাংক শেয়ারে নির্ভর করে ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। এর ফলে গতকাল এ সূচকটি ৫৪৬৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে।

গতকাল সূচক বৃদ্ধিতে ব্যাংক ছাড়াও ভূমিকা রেখেছে সাধারণ বীমা, টেলিযোগাযোগ ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সাধারণ বীমা খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং টেলিযোগাযোগ খাতের ২ দশমিক ৩ শতাংশ দর বেড়েছে। এর বাইরে সিরামিক, রিয়েল এস্টেট ও পাট খাতের শেয়ার দর বেড়েছে। বিপরীতে বস্ত্র, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য খাতে দর সংশোধন হয়েছে।

এদিকে ডিএসইতে মূল্যসূচক বাড়লেও লেনদেন পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫৮০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের দিনও লেনদেন একই অঙ্কে ছিল। যদিও আগের সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন ছিল ৬৮৭ কোটি টাকা। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হয়েছে ২৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট।

আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকালও লেনদেনের শীর্ষস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। এ খাতটিতে গতকাল ১০৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা কেনাবেচা হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১০৩ কোটি টাকা। লেনদেনে পরের অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ এসেছে এ খাত থেকে। লেনদেনে পরবর্তী অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত ও ওষুধ খাত।

গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২১২টির, কমেছে ৯১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৪০ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৩টির, কমেছে ৭৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো- বিবিএস ক্যাবলস, ইফাদ অটোস, বসুন্ধরা পেপার মিলস, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, অ্যাক্টিভ ফাইন, ঢাকা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান কটন ও স্কয়ার ফার্মা।

দরবৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো- মাইডাস ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, আজিজ পাইপস, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স ও রূপালী ইন্স্যুরেন্স।
অন্যদিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো- এনএলআই ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, আমান কটন, কেডিএস এক্সেসরিজ, এইচআর টেক্সটাইল, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, রিজেন্ট টেক্সটাইল, দেশবন্ধু পলিমার, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ড ও মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads