• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ব্যাংক শেয়ারে আবারো দুর্দিন

সংগৃহীত ছবি

পুঁজিবাজার

ব্যাংক শেয়ারে আবারো দুর্দিন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ব্যাংক খাতের শেয়ার ঘিরে কিছুদিন ঊর্ধ্বগতির পর আবারো দুর্দিন নেমে এসেছে। গত ২৯ আগস্ট থেকে নিয়মিত দর হারানোয় এ খাতের বিনিয়োগকারীরা পড়েছেন লোকসানে। টানা দরপতনে গত ১১ কার্যদিবসে ব্যাংক খাতের বাজার মূলধন কমেছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এতে স্টক এক্সচেঞ্জও মূল্যসূচক হারাচ্ছে। পুঁজিবাজারের লেনদেন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালে বড় ধরনের ঊর্ধ্বগতির পর চলতি বছরের শুরু থেকেই ব্যাংকসহ পুরো আর্থিক খাতে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এতে এ খাতটিতে দরপতন দেখা দেয়। তবে পরবর্তী সময়ে দরপতন আরো জোরালো হয়ে ওঠে ব্যাংক খাতের তারল্য সঙ্কটকে কেন্দ্র করে। এ সঙ্কটের কারণে ব্যাংক খাতের বড় অংশের অগ্রিম আমানত অনুপাত (এডিআর) নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক এডিআর কমিয়ে আনার নির্দেশনা জারি করে। এতে ব্যাংক খাতের দরপতন আরো তীব্র হয়ে ওঠে। যদিও নানামুখী চাপে পরে এডিআর কমিয়ে আনতে নির্ধারিত সময় পিছিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারল্য সঙ্কট কমাতে সরকারি তহবিলের অর্ধেক বেসরকারি ব্যাংকে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন উদ্যোগের পরও তারল্য সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ব্যাংক খাত।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছর গত ২৬ জুলাই পর্যন্ত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংক সম্মিলিতভাবে প্রায় ২৯ শতাংশ দর হারায়। এ সময় ব্যাংক খাতের বাজার মূলধন ছিল ৫৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার নেমে আসে বিনিয়োগসীমায়। এমন পরিস্থিতিতে কম দরে পাওয়া ব্যাংক শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন বিনিয়োগকারীরা। চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে পরবর্তী ১৭ কার্যদিবসে ব্যাংক শেয়ারের দর প্রায় ১৪ শতাংশ বাড়ে। তবে ২৯ আগস্ট থেকে আবারো পতনের ধারায় ফিরে আসে খাতটি।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংক শেয়ারের বাজার মূলধন ছিল ৬২ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। এরপর থেকে ব্যাংক শেয়ারের চাহিদা কমতে দেখা যায়। ফলে নিয়মিত দরপতনের ধারায় আবারো ফিরে আসে সূচকে প্রভাব রাখা খাতটি। ব্যাংক শেয়ারের দর কমে গিয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর খাতটির বাজার মূলধন নেমে আসে ৫৭ হাজার ১৯০ কোটি টাকায়। ফলে ১১ কার্যদিবসে এ খাতটি বাজার মূলধন হারায় ৫ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা বা ৯ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাত হারায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের দর কমলেও বেড়েছে বীমা খাতের বাজার মূলধন। গত ১১ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক হারায় ১১৯ পয়েন্ট। এ সময় গ্রামীণফোনের দরপতনে টেলিযোগাযোগ খাত হারিয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কমেছে ওষুধ ও খাদ্য খাতের শেয়ার দরও। সূচকে প্রভাব বিস্তারকারী ব্যাংক ও টেলিযোগাযোগ খাত মূলধন হারানোয় সূচক কমেছে।

এদিকে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের শেয়ারের দর কমলেও উৎপাদনমুখী খাতের শেয়ার দর কিছুটা বেড়েছে। গত ২৮ আগস্টের পর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জ্বালানি খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। এছাড়া বেড়েছে প্রকৌশল, বস্ত্র ও সিরামিক খাতের বাজার মূলধন।

উৎপাদনমুখী খাতের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরুর কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন উন্নীত হয়েছে ৯০১ কোটি টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৭৬৩ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে লেনদেন বাড়লেও অধিকাংশ শেয়ারদর কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের মধ্যে বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২২৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির। অধিকাংশ শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৭৩ পয়েন্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads