• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
মুনাফা সবচেয়ে বেশি জীবন বীমা কোম্পানিতে

প্রতীকী ছবি

পুঁজিবাজার

মুনাফা সবচেয়ে বেশি জীবন বীমা কোম্পানিতে

  • আলতাফ মাসুদ
  • প্রকাশিত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চলতি বছর তালিকাভুক্ত মৌলভিত্তির অধিকাংশ কোম্পানিই দর হারিয়েছে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৭৩৯ পয়েন্ট বা ১২ শতাংশ। পুরো বছর দর হারানোর তালিকার শীর্ষে ছিল ব্যাংক, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সিমেন্ট, টেলিযোগাযোগ ও প্রকৌশল খাত। অবশ্য অধিকাংশ খাত দর হারালেও কিছু খাত থেকে ভালো মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে বিনিয়োগ থেকে সবচেয়ে বেশি মুনাফা এসেছে জীবন বীমা কোম্পানি থেকে। চলতি বছর খাতটি থেকে গড়ে ৩৩ শতাংশের বেশি মূলধনি মুনাফা এসেছে। মূলত খাতটির তিন কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে পুরো খাতটিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

যেসব সূচক দিয়ে মৌলভিত্তি বিশ্লেষণ করা হয়, জীবন বীমা কোম্পানিগুলো সেসব সূচক প্রকাশ করে না। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিক্রি, শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস), শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ইত্যাদি দিয়ে মৌলভিত্তি যাচাই করা হলেও জীবন বীমা কোম্পানির ক্ষেত্রে শুধু তাদের জীবন বীমা তহবিলের আকারের হ্রাস-বৃদ্ধি দিয়েই মৌলভিত্তি বিবেচনা করা হয়।

২০১৭ সাল শেষে জীবন বীমা খাতের বাজার মূলধন ছিল ৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। সাড়া বছর উত্থান-পতন শেষে গতকাল এ খাতটির বাজার মূলধন ৬ হাজার ৭৬০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে সাধারণ বীমা খাতে তেমন উল্লম্ফন না দেখা গেলেও সামান্য বাজার মূলধন বেড়েছে।

জীবন বীমা খাতে ১২টি কোম্পানি থাকলেও হঠাৎ করেই তিন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের অধিকাংশ সময় এ খাতটির শেয়ারের স্থবিরতা থাকলেও চলতি মাসে খাতটির কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল, পপুলার ও প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারে টানা ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। চলতি বছর এ তিন কোম্পানির শেয়ারের দর ২৮ থেকে ৯৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, যা পুরো খাতটির বাজার মূলধন বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, জীবন বীমা খাতের অধিকাংশ কোম্পানিই স্বল্প মূলধনির। এসব কোম্পানির মধ্যে বাজার মূলধনে শীর্ষে রয়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। খাতটির বাজার মূলধনের ৩৮ শতাংশই হচ্ছে এ কোম্পানির। সর্বশেষ কার্যদিবসে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৮২ কোটি টাকায়। বাজার মূলধনে এ খাতের দ্বিতীয় কোম্পানি হচ্ছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এ কোম্পানির বাজার মূলধন হচ্ছে ১ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা। ৭৪৬ কোটি টাকার বাজার মূলধন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এর পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

চলতি মাসের মাত্র ১৪ কার্যদিবসে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্সের শেয়ারের দর বেড়েছে ৯৪ শতাংশ। বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে  এ কোম্পানির শেয়ারের দর ছিল ১৫৭ টাকা ৫০ পয়সা। আগস্ট পর্যন্ত শেয়ারটির দরে এক ধরনের স্থবিরতা থাকলেও চলতি মাসে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। এর ফলে গত কয়েকদিনের  টানা দরবৃদ্ধিতে গতকাল ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর ২৭৬ টাকা ২০ পয়সায় উন্নীত হয়। চলতি অর্ধবার্ষিকীতে কোম্পানির জীবন বীমা তহবিল আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৮৭ কোটি টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২৯৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। 

বছরের শুরুতে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর ছিল ৭৩ টাকা। এরপর এপ্রিলে শেয়ারটির দর ১৩২ টাকায় উঠলেও জুনে কমে ৮৫ টাকায় নেমে আসে। তবে চলতি মাসে এ খাতের ঊর্ধ্বগতিতে আবারো দরবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসে কোম্পানির শেয়ার। গত বৃহস্পতিবার দর সামান্য কমলেও পপুলার লাইফের শেয়ারের দর ১১৯ টাকা ৪০ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। এ হিসাবে চলতি বছর এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফা এসেছে ৬৭ শতাংশ।

আর চলতি বছর শেয়ারের দরে উত্থান-পতন শেষে চলতি মাসে টানা ঊর্ধ্বগতিতে রয়েছে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। চলতি মাসের ১৪ কার্যদিবসে ২৫ শতাংশ দর বেড়েছে। তবে প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর চলতি বছর সামান্য কমেছে। এ ছাড়া প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দরও কমেছে। এর বাইরে রূপালী ও সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দরে স্থিতাবস্থা দেখা গেছে।        

জীবন বীমা খাত ছাড়াও জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, বিবিধ ও বস্ত্র খাতের কোম্পানি থেকেও বিনিয়োগকারীরা চলতি বছর মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন। এর মধ্যে ইউনাইটেড পাওয়ার অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিশন কোম্পানির কল্যাণে জ্বালানি খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ইনটেক অনলাইনের সহায়তায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। লভ্যাংশ ঘোষণার প্রক্রিয়ায় থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে বস্ত্র খাতের শেয়ারের দর বাড়ছে। এতে পুরো খাতটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি।

    

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads