• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
৬ মাসে মূলধনহানি ৪৮ হাজার কোটি টাকা 

সংগৃহীত ছবি

পুঁজিবাজার

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন

৬ মাসে মূলধনহানি ৪৮ হাজার কোটি টাকা 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ জুলাই ২০১৯

পুঁজিবাজারে দরপতনে চলছেই। প্রত্যেক দিনই বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছেন। অবস্থা এতটাই চরমে পৌঁছেছে, বিগত ৬ মাসে পুঁজিবাজার ৪৮ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা মূলধন হারিয়েছে। এতে করে অনেক বিনিয়োগকারীর এখন পথে বসার অবস্থা। বিনিয়োগকারীরা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির অংশীদারত্ব কিনে থাকেন। শেয়ারের দর বাড়লে তারা ক্যাপিটাল গেইন করেন। নতুবা বছরান্তে কোম্পানির ঘোষিত ডিভিডেন্ড গেইন করেন।

চলতি বছরের মেতে স্টক ডিভিডেন্ড দিতে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পাশাপাশি বাজেটেও স্টক ডিভিডেন্ড রহিতে নেওয়া হয়ে শক্ত ব্যবস্থা। ফলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ ভাবনায় বিপাকে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। এরই ফলে অব্যাহত দরপতনে বিগত ৬ মাসেই পুঁজিবাজার ৪৮ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা মূলধন হারিয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের প্রাণ বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু আস্থার অভাবে তারল্য সংকট বাড়ছে পুঁজিবাজারে। তাই সম্প্রতি ইয়ার ইন্ড হওয়া ১৭১ কোম্পানির শেয়ারেও আগ্রহ নেই বিনিয়োগকারীদের। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে-এমন আশায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বাজার ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। এ ধারা চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ছিল। এরপর ২৯ জানুয়ারি থেকে দরপতন শুরু হয়। চলে টানা জুন পর্যন্ত। মাঝে ২০১৯-২০ সালের বাজেট ঘোষণার আগমুহূর্তে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই দরপতন অব্যাহত রয়েছে। বিগত ১২ কার্যদিবসের ১০ দিনই সূচক কমেছে।

গত সোমবার লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা, যা গত ২৯ জানুয়ারির লেনদেন শেষে ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬ মাসের ব্যবধানেই বাজার মূলধন উধাও হয়েছে ৪৮ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, বাজার কোনো সূত্রই মানছে না। স্বাভাবিক নিয়মে সূচক বাড়লে কারেকশন হবে। ঠিক তেমনই সূচক বা দর কমলে বিনিয়োগকারীরা সুযোগ নেবে। কিন্তু পুঁজিবাজারে অব্যাহত বিক্রয় চাপ চলছে। সূচকও ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর-রশীদ চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগকারীদের দেখার কেউ নেই। বাজারের প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর গড়ে ৩০-৩৫ শতাংশ লস। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনো দরপতনের কারণ খুঁজে বের করতে পারেনি।

জানা যায়, গত সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ২৭৭টির এবং দর অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি প্রতিষ্ঠানের। এ সময় ডিএসইতে ১৬ কোটি ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৬০৫টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৭.৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৬৬ পয়েন্টে। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ডিএসইতে সূচক ছিল ৪৯৯৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে আজ ৩৩ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। অপরদিকে, শরিয়াহ সূচক ১৮.৩৩ পয়েন্ট ও ডিএস-৩০ সূচক ২৩.২৬ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১ হাজার ১৩৯ ও ১ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন ডিএসইতে ৪৬৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৬৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএসইএক্স ১১৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৮৬টি কোম্পানির ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫১টির, কমেছে ২১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads