• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯

স্বপ্নের পদ্মা সেতু

সংরক্ষিত ছবি

যোগাযোগ

নির্বাচনের আগে চালু হচ্ছে না পদ্মা সেতু

  • বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
  • প্রকাশিত ০৭ মে ২০১৮

স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী নির্বাচনের আগে চালু হচ্ছে না। তবে দ্বিতীয় গোমতী, মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা সেতু ডিসেম্বরের মধ্যেই খুলে যাবে যানবাহন চলাচলের জন্য। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলমান দীর্ঘ যানজট ও যাত্রী ভোগান্তির অবসান হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার রাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসে এসব কথা বলেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্য বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে যদি বলি, সব হয়ে যাবে, তাহলে সেটা হবে নিছক আশ্বাস।

নির্বাচনের আগে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে না কেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীর চেয়েও অবোধ্য (আনপ্রেডিক্টেবল)। অনেক গভীরে গিয়েও এর তল (জলের নিচের মাটি) মেলে না। মনে হয়, এই পদ্মার তলে আরো একটি পদ্মা আছে। যে কারণে মাঝে সেতুর নির্মাণকাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন সব কাজ ঠিকঠাক চলছে। এরই মধ্যে সেতু দৃশ্যমান হয়েছে। চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে দ্রুততার সঙ্গে আরো স্প্যান স্থাপন সম্ভব হবে। খুব বেশি সময় লাগবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এখনকার যানজটের কারণ হচ্ছে তিনটি সেতু। কাঁচপুর (শীতলক্ষ্যা), মেঘনা ও গোমতী নদীর ওপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে দ্বিতীয় সেতুগুলো নির্মাণ হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের ছয় মাস আগে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এগুলো চালু হবে। এতে মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের চাইতে ৭শ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আর যানজট থাকবে না।

বর্তমানে চার লেনের ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক গোমতী, মেঘনা ও শীতলক্ষ্যায় এসে হয়ে গেছে দুই লেনের। তাতে দুপাশে তৈরি হয় মাইলের পর মাইল যানজট। কাঁচপুর সেতুতে টোল আদায়ের ঝামেলা নেই, কিন্তু মেঘনা, গোমতী সেতুতে টোল দিতেই লেগে যায় দীর্ঘ সময়। ফলে চার লেনে উন্নীত হওয়ার পরও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মহাবিড়ম্বনার সড়কে পরিণত হয়েছে। কখনো কখনো দাউদকান্দি এলাকায় ১৫ থেকে ২০ মাইল দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী সাধারণ। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও এমন অবস্থা দেখা যায়। গোমতী, মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা দ্বিতীয় সেতু চালু হলে যানজটমুক্ত হবে এই মহাসড়ক। তবে অনেকের মতে, এখন এই মহাসড়কে যে পরিমাণ ট্রাফিক বাড়ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এটি আট লেনে উন্নীত হলেও সমস্যা মিটবে না। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নই একমাত্র সমাধান হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং চট্টগ্রাম-রামু-উখিয়া-কক্সবাজারে ডুয়েলগেজ রেললাইন স্থাপনের অগ্রগতি বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আরো চারটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আছে। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের আগে এ ধরনের বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হতেও পারে, নাও হতে পারে। তবে প্রকল্পগুলোর কাজ স্বাভাবিক গতিতেই এগুচ্ছে। এখন যদি বলি সব হয়ে যাবে, তাহলে সেটা হবে কেবলই আশ্বাস দেওয়া।

সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন নিয়েও কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে সচেতন আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি আগামী ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএফইউজের সম্মেলনে নতুন ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন।

এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- পটিয়া থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও রূপালী ব্যাংকের পরিচালক আবু সুফিয়ান, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হক বাবুল প্রমুখ। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার, বিএফইউজের সহসভাপতি শহীদ উল আলম প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads