• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
তিনগুণ মূল্যেও মিলছে না বিমানের টিকেট

ঈদে সড়ক, রেল ও নৌপথের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আকাশপথের টিকেট পাওয়াও দুষ্কর

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

তিনগুণ মূল্যেও মিলছে না বিমানের টিকেট

অভ্যন্তরীণ বিমানেও টিকেট সঙ্কট

  • কামাল মোশারেফ
  • প্রকাশিত ১০ জুন ২০১৮

ঈদে সড়ক, রেল ও নৌপথের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আকাশপথের টিকেট পাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ঈদের আগের ও পরের দুই দিনের আগাম টিকেট যেন সোনার হরিণ। ভোগান্তি এড়াতে এখন যারা আকাশপথের টিকেট কিনছেন তাদের স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি দাম দিতে হচ্ছে। দুই হাজার ৭০০ টাকার টিকেটে গুনতে হচ্ছে নয় হাজার ৫০০ টাকা। এদিকে টিকেটের চাহিদা থাকায় বেশ কিছু রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট দিচ্ছে বিমান সংস্থাগুলো।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে, ১৪ ও ১৫ জুনের টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। খরচ বেশি হলেও ঈদ মৌসুমে সড়ক-রেল-নৌপথে দুর্ভোগ এড়াতে অনেকে ঝুঁকছেন আকাশপথে।

এ বছর রোজা ২৯টি হলে ঈদ হবে ১৬ জুন। ৩০টি হলে পরদিন ১৭ জুন ঈদুল ফিতর। তবে ঈদের আগে ১৪ জুন হবে শেষ কর্মদিবস। তাই ১৪ ও ১৫ জুনের টিকেটের চাহিদা সর্বাধিক। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় টিকেটের দামও বেড়েছে কয়েক গুণ।

দেশের অভ্যন্তরীণ সাতটি রুটে বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা, নভো এয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটে চলাচল করে বিমান ও ইউএস-বাংলা। রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ফ্লাইট পরিচালনা করছে যশোর, সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে। নভো এয়ার চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী, যশোর ও সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

ঈদের সময় সৈয়দপুর, যশোর ও রাজশাহী রুটের টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ কারণে নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি এ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি সংস্থা। এসব রুটে ঈদযাত্রায় ৬৩টি ফ্লাইট চলবে। নভো এয়ার অতিরিক্ত ২৪টি, ইউএস-বাংলা ৩৫টি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস চারটি ফ্লাইট বাড়তি পরিচালনা করবে। ঈদে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ দেশে বাড়তি ফ্লাইট পরিচালনা করছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এয়ারলাইনসভেদে প্রতিটি রুটেই দুই থেকে তিন গুণেরও বেশি টাকায় টিকেট কিনতে হয়েছে। ঢাকা-যশোর এবং ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে বর্তমানে এয়ারলাইনসগুলোর গড় ভাড়া দুই হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার টাকা। কিন্তু ঈদে অতিরিক্ত ফ্লাইটে প্রতিটি টিকেটের জন্য একজন যাত্রীকে গুনতে হচ্ছে সাত হাজার ৬০০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ঢাকা-যশোর রুটে ছয় হাজার থেকে আট হাজার টাকা, ঢাকা-বরিশালে তিন হাজার টাকার ওয়ানওয়ে টিকেটের দাম রাখা হচ্ছে ছয় হাজার ৫০০ থেকে সাত হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া বিজনেস ক্লাসে এ ভাড়া দ্বিগুণেরও বেশি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বনানী অফিসে টিকেট কাটতে এসেছিলেন জনৈক আসাদুর রহমান। তিনি বলেন, বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর ভাড়া অনেক বেশি হওয়ায় বিমানের টিকেটের জন্য এসেছিলাম। কিন্তু পাইনি।

ইউএস-বাংলার বনানী অফিস থেকে মনিরুল ইসলাম ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে দুটি টিকেট কিনেছেন ১৫ হাজার ২০০ টাকায়। অথচ ওয়ানওয়ে একটি টিকেট ভাড়া হচ্ছে দুই হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার টাকা। সড়কপথের অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় স্ত্রীসহ আকাশপথে গিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবেন তিনি। তবে টাকা বেশি নেওয়ার পরও টিকেট পাওয়ায় খুশি মনিরুল।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ১২ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, ঈদের ভাড়া বৃদ্ধি নির্ভর করে বাজারের ওপর। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভাড়া তুলনামূলক কম। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ বিমান এবার ১০ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ঢাকা থেকে ছয়টি গন্তব্যে দিনে ২৫ থেকে ৩০টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এসব ফ্লাইটে মোট আসন সংখ্যা দুই হাজার ১০০।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ঈদে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ যাত্রী পাওয়া যায় ফিরতি ফ্লাইটে। এতে তেলের খরচও ওঠে না। তাই ওয়ানওয়ে টিকেটে ভাড়া সর্বোচ্চ হয়ে যায়। তবে ফিরতি ফ্লাইটে যাত্রীদের ইউএস-বাংলা সৈয়দপুর, রাজশাহী, যশোর ও বরিশাল থেকে ঢাকায় সর্বনিম্ন এক হাজার ৮৯৯ টাকায় টিকেট বিক্রি করছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads