• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ঢাকায় নেমে যান সঙ্কটে দুর্ভোগ, অতিরিক্ত ভাড়া

লঞ্চে করে রাজধানীতে ফিরছে কর্মজীবীরা

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

ঢাকায় নেমে যান সঙ্কটে দুর্ভোগ, অতিরিক্ত ভাড়া

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ জুন ২০১৮

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গত সোমবার অফিস-আদালত খুলেছে। তবে অনেকেই ঈদের ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে অতিরিক্ত ছুটি নেওয়ায় এখনো পুরোদমে কর্মব্যস্ত হয়নি রাজধানী ঢাকা। অনেকেই পরিবার-পরিজনসহ এখনো ফিরছে। ঢাকার বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালে রাজধানী-ফেরত মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

ঈদের চতুর্থ দিন গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা যায় হাজারো যাত্রীর ভিড়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকামুখী প্রতিটি ট্রেনই ফিরেছে যাত্রীভর্তি হয়ে। আসনধারী যাত্রীর পাশাপাশি প্রায় সমানসংখ্যক দাঁড়ানো যাত্রীও ফিরছে এসব ট্রেনে।

যাত্রী ও স্টেশন সংশ্লিষ্টরা জানায়, মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এয়ারপোর্ট ও কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছাতে শুরু করে নিয়মিত ট্রেন সার্ভিসগুলো। ভোর ৫টা হতে বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২১টি ট্রেন ঢাকায় পৌঁছয়। আর ঢাকা ছেড়ে গেছে ২৩টি ট্রেন।

যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা ফেরার সময় টিকেট পেতে যেমন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, তেমনি অনেককে ট্রেনের আসন পেতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শিডিউল ঠিক থাকলেও টিকেট পেতে সমস্যা হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় অনেকে দাঁড়িয়ে এসেছে। এ কারণে সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও জিনিসপত্র নিয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়েছে।’

কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘বাড়ি ফেরা মানুষ স্বস্তিতে ঢাকায় আসছে। রংপুর এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ছাড়া ট্রেনের শিডিউলে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় হয়নি। যেসব ট্রেন বিলম্বে এসেছে, সেটিও যাত্রীদের কারণে। কারণ যাত্রীদের ওঠা-নামায় বেশি সময় লেগেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এবার নিরাপদে মানুষ ঢাকায় পৌঁছাতে পেরেছে।’ টিকেট স্বল্পতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঈদে যে সংখ্যক মানুষ বাড়ি যায়, ঠিক সেই সংখ্যক মানুষ আবার ঢাকায় ফেরে। এ কারণে টিকেট ও আসন স্বল্পতা তো হবেই।’

ঢাকায় নেমেই যান সঙ্কট : দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চ হওয়ায় ভোরের সূর্য ওঠার আগেই ঢাকা-ফেরত যাত্রীদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে সদরঘাট টার্মিনাল। এ সময় টার্মিনালে পা রেখে ভোগান্তিতে পড়ে হাজারো মানুষ। কারণ নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক যানবাহন নেই। এ সুযোগে উপস্থিত রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চালকরা লঞ্চযাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে।

ভোলার চরমন্তাজ থেকে ঢাকা চলাচলকারী লঞ্চ কোকো-৫-এ চড়ে মঙ্গলবার ভোরে সদরঘাট নামেন ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাসকারী মোকাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভোর সোয়া ৫টায় লঞ্চ সদরঘাটে এসে ভেড়ে। একই সময় অনেকগুলো লঞ্চ এসে ভিড়তে দেখেছি। টার্মিনাল থেকে বের হয়েই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। পর্যাপ্ত গাড়ির অভাব। আর যেগুলো ছিল সেগুলোর ভাড়া অনেক বেশি। সিএনজি অটোরিকশায় সদরঘাট থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া ৩৫০ টাকা। কিন্তু আজ ৪৫০ টাকা গুনতে হয়েছে।’ পটুয়াখালী থেকে লঞ্চে এসেছেন রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘সদরঘাট থেকে যাত্রাবাড়ীর ভাড়া সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। কিন্তু ১০০ টাকার নিচে কোনো রিকশাওয়ালাই যাবে না।’

এ টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুটে লঞ্চ চলাচল করে। বেশিরভাগ লঞ্চই সকালের মধ্যে চলে আসে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সদরঘাট বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) আলমগীর কবির বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৬৫টি লঞ্চ সদরঘাটে পৌঁছেছে। সারা দিন আরো ২০ থেকে ২৫টি লঞ্চ আসবে। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল থেকে পরবর্তী তিন দিন অর্থাৎ ২০, ২১ ও ২২ জুন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ লঞ্চে ফিরবে বলে মনে করছি। সকালবেলা একই সময়ে সব যাত্রী আসায় যানবাহনের সঙ্কট দেখা যায়। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের কিছু করণীয় নেই।’

এদিকে রাজধানীর সকল বাস টার্মিনালেও দিনভর একই ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরতে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads