• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
মাঝ রাতের উন্নয়নে নাকাল নগরবাসী

রাজধানীর সড়কে রাষ্ট্রায়ত্ত সেবাসংস্থার উন্নয়ন কাজ চলেছ। তবে নেই কোনো সমন্বয়

ছবি: সংগৃহীত

যোগাযোগ

আইএমইডির প্রতিবেদন

মাঝ রাতের উন্নয়নে নাকাল নগরবাসী

# সুফল নেই রাস্তা নর্দমা ও ফুটপাথ সংস্কারে

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ১৪ জুলাই ২০১৮

রাজধানী ঢাকার অধিবাসীদের নাগরিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাথ উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৮৮ কিলোমিটার বিটুমিনের রাস্তা, ১১২ কিলোমিটার সিমেন্ট ক্রংক্রিটের রাস্তা, ৩ কিলোমিটার ইটের রাস্তা, সাড়ে ৪৭ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ ও ১৭৫ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণের কথা ছিল। এর মাধ্যমে যানজট ও জলাবদ্ধতা দূর করা ছিল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। নির্ধারিত সময়ের দেড় বছর বেশি লাগিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। ২৬৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দের অতিরিক্ত ১০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় করেও প্রকল্পে কাঙ্ক্ষিত সুফল আসেনি বলে দাবি করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাতের বেলায় কাজ করায় গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

গত কয়েক বছরে কাজ শেষ হয়েছে এমন প্রকল্পগুলোর সুফল পর্যালোচনা করতে প্রভাব মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে আইএমইডি। এতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় নর্দমায় কাজ হয়েছে এমন ৮৮ শতাংশ রাস্তায় এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। নর্দমার পানি রাস্তায় উঠে আসছে।

রাস্তা সংস্কারের ফলে যাতায়াতে আগের চেয়ে কম সময় লাগছে বলে দাবি করছেন প্রকল্প মূল্যায়নে পরিচালিত সমীক্ষায় অংশ নেওয়া মাত্র ১২ শতাংশ স্থানীয় বাসিন্দা। এর পরও হকারের উপদ্রব বেড়েছে বলে দাবি ১৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর।

আইএমইডি সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় নেওয়া ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

এতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের ৩৫৫টি প্যাকেজের বেশ কয়েকটিতে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইন (পিপিআর) অনুসরণ করা হয়নি। প্রকল্প অনুমোদনের আগেই কার্যাদেশ পেয়েছেন অনেক ঠিকাদার। দৈবচয়নের ভিত্তিতে নির্বাচন করা ১৬ প্যাকেজের মধ্যে পাঁচটিতে গুরুতর অনিয়ম পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকটি প্যাকেজে কাজ পাওয়া ঠিকাদার আগেই দাফতরিক প্রাক্কলিত মূল্য জেনে গেছেন। বেশ কিছু দরপত্রে ঘষামাজা দেখা গেছে। অনেক সময় সর্বনিম্ন দরদাতা কাজ পাননি। তা ছাড়া প্রকল্প অনুমোদনের আগেই ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এসব অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে আইএমইডি।

পর্যালোচনায় আইএমইডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ রাতের বেলায় সম্পন্ন হওয়ায় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাজের গুণগত মান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই করতে পারেনি। কোনো অর্থবছরই প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েছে। ভূমি দখল, মালিকানায় সমস্যা, হস্তান্তরে বিলম্ব, সীমানা নির্ধারণে বিলম্বের কারণে কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমইডি। কাজ শেষ হওয়ার পর নির্মিত অবকাঠামো সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ আইএমইডির।

এতে আরো বলা হয়, যানজট কমেনি। নর্দমার মানহীন ঢাকনা ভেঙে যাওয়ার কারণেও বাড়ছে দুর্ঘটনা। ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন লাইনের সঙ্গে প্রকল্পের নর্দমার কোনো সংযোগ নেই বলেও জানিয়েছে আইএমইডি।

জানতে চাইলে আইএমইডির সচিব মফিজুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ১৯টি সুপারিশ প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এসব নির্দেশনা মানা হলে প্রকল্প এলাকায় দুর্ভোগ কমে আসবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads