• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
লাইসেন্স-ফিটনেস সনদ পেতে ভিড়

লাইসেন্স-ফিটনেস সনদ পেতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অফিসে ভিড়

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

লাইসেন্স-ফিটনেস সনদ পেতে ভিড়

বিআরটিএ অফিস খোলা সকাল ৯টা-রাত ৯টা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ আগস্ট ২০১৮

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর হঠাৎ করেই যানবাহন এবং গাড়ির চালকদের লাইসেন্স করা ও নবায়নের হার বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে লাইসেন্সের জন্য মানুষের ভিড় বাড়ছে। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে বিআরটিএ অফিস শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার ছয় দিন খোলা থাকবে এবং সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক তৈরির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি ও ফিটনেস সনদ আবেদনের হিড়িক পড়লেও লাইসেন্স প্রত্যাশীরা পদে পদে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় দৌরাত্ম্য বেড়েছে দালাল চক্রের। গতকাল সোমবার বিআরটিএ সার্কেল-১ কার্যালয় মিরপুরে সরেজমিন দেখা যায়, গাড়ির কাগজপত্র তৈরি করতে লম্বা লাইন। গাড়ি আর মানুষের বাড়তি চাপে ভেতরে তিলধারণের ঠাঁই নেই। গাড়ির লাইসেন্সের জন্য ফর্ম নিতে আসা মানুষের লম্বা লাইন ভবনের বাইরে পর্যন্ত চলে গেছে। অনেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিআরটিএ অফিসে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সের সরকারি ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে ছয়-সাত মাস সময় লাগে। শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার ছয় মাস পর ব্যবহারিক পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়। আগে যেখানে সারা দিনে দুই শ’র মতো গাড়ির লাইসেন্স নবায়ন ফরম বিক্রি হতো, এখন সেই সংখ্যা চারগুণ বেড়ে গেছে। লাইসেন্স পাওয়ার কাউন্টারেও উপচে পড়া ভিড়। তবে সবচেয়ে বড় ভোগান্তি লাইসেন্স ফি জমা নেওয়া ব্যাংক কাউন্টারে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে টাকা জমা দিতে পারেননি। যাত্রাবাড়ী থেকে গাড়ির লাইসেন্স নবায়ন করতে এসেছেন রাকিবুল ইসলাম। সকাল ১০টায় ব্যাংকে নবায়ন ফি জমা দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। বেলা ২টা বাজলেও ২০ জনের পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন।

তবে যত ভিড়ই থাকুক না কেন দালালদের হাতে দিলে দ্রুত কাজ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি ব্যাংকে ফি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও দালালদের অগ্রাধিকার। সেবা নিতে আসা লোকজন অভিযোগ করেন, সাধারণ প্রক্রিয়ায় সেবা পেতে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ দালালদের দিয়ে দ্রুত কাজ হয়ে যাচ্ছে।

বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (লাইসেন্স) মোহাম্মদ আলী আহমেদ মিলন বলেন, ‘গত পাঁচ দিনে গড়ে প্রতিদিন নতুন ২২০টি আবেদন আসছে, যা আগে প্রতিদিন ১০০টির মতো আবেদন হতো। আর লাইসেন্স নবায়নের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৩০০ আবেদন জমা হতো, আগে এ আবেদন ছিল ১০০ থেকে ১২০টির মতো। লাইসেন্স-সংক্রান্ত কার্যক্রম গড়ে আড়াইগুণ বেড়েছে।’

বিআরটিএতে এসে অনেককে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে- এ অভিযোগ স্বীকার করে উপপরিচালক বলেন, ‘সেবা প্রত্যাশীদের বড় ভোগান্তির জায়গা হচ্ছে ব্যাংকে টাকা জামা দিয়ে রসিদ সংগ্রহ করা। এজন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। দ্রুতই ভোগান্তি কমাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মিরপুর বিআরটিএ ঘুরে দেখা গেছে, কার্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় টেবিল-চেয়ার নিয়েও বসে পড়েছেন একদল লোক যারা লাইসেন্স নবায়ন ও লার্নার লাইসেন্সের কাগজপত্র পূরণ করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা বাড়তি দিলে তারাই নতুন লাইসেন্স করে দিচ্ছেন, নবায়ন করে দিচ্ছেন পুরনো লাইসেন্স।

এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএ’র জরুরি সেবা কার্যক্রম সারা দেশে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলছে। এই ছয় দিন অফিস সময় হবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads