• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ঈদের অগ্রিম টিকেটের জন্য স্টেশনে উপচে পড়া ভিড়

কমলাপুর রেলস্টেশনে গতকাল ঘরমুখো মানুষের অনেক চেষ্টায় টিকেট সংগ্রহ

ছবি -বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

ঈদের অগ্রিম টিকেটের জন্য স্টেশনে উপচে পড়া ভিড়

পরিবহনের হযবরল অবস্থায় ট্রেননির্ভরতা বেড়েছে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১০ আগস্ট ২০১৮

পরিবহন সেক্টরে হযবরল অবস্থা ও সড়কে যানজটের আশঙ্কায় ঈদযাত্রায় ট্রেন বেছে নেওয়ার প্রবণতা গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছে। ট্রেনের সেবা আগের চেয়ে বাড়ায় এবং এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যাপ্ত যানবাহন না পাওয়ার আশঙ্কায় ঘরমুখো অধিকাংশ মানুষ রেলপথে নির্ভরতা খুঁজছে। গত দুদিনে ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে টিকেটপ্রত্যাশী যাত্রীদের ভিড় সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে। আগের যেকোনো ঈদের তুলনায় এবার ভিড় ও টিকেটপ্রত্যাশী অনেক বেশি। বাংলাদেশের খবরের নিজস্ব প্রতিবেদক ও চট্টগ্রাম ব্যুরোর দেওয়া খবর— 

অগ্রিম টিকেটপ্রত্যাশী মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের টিকেটের জন্য গভীর রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অনেককে। অগ্রিম টিকেট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার ১৮ আগস্টের অগ্রিম টিকেটের জন্য কমলাপুর স্টেশনের টিকেট কাউন্টারগুলোর সামনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ ছাড়া আজ শুক্রবার টিকেট কিনবেন এমন অনেককে গতকাল বিকাল থেকে স্টেশনে আসতে দেখা গেছে।

কমলাপুর রেল স্টেশনের ২৬টি কাউন্টারের মধ্যে এবার দুটি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের দীর্ঘ লাইন ছিল। দিন যত বাড়ছে টিকেট প্রত্যাশীদের সারিও তত দীর্ঘ হচ্ছে।

সিলেটের টিকেটপ্রত্যাশী বেসরকারি এক চাকরিজীবী জানান, ১৮ আগস্টের টিকেট পেতে গত বুধবার সন্ধ্যায়ই কমলাপুর স্টেশনে এসেছেন তিনি। রাত ১২টায় তিনি যখন লাইনে দাঁড়িয়েছেন তখনো তার সামনে ছিলেন অন্তত দেড় ডজন মানুষ। তার মতো এমন শত শত টিকেটপ্রত্যাশী সারা রাত অপেক্ষা করেছেন কমলাপুরে। 

প্রতিবারের মতো এবারো ১০ দিন আগে থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি। গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া হয় আগামী ১৮ আগস্টের টিকেট। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় টিকেট বিক্রি। এর আগে গত বুধবার প্রথম দিন দেওয়া হয় ১৭ আগস্টের টিকেট। আজ ১০ আগস্ট শুক্রবার বিক্রি হবে ১৯ আগস্টের টিকেট। এভাবে আগামীকাল ১১ ও পরশু ১২ আগস্ট পর্যায়ক্রমে টিকেট মিলবে ২০ এবং ২১ আগস্টের। এই দিনগুলোয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি হবে।

ট্রেনের ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হবে ১৫ আগস্ট থেকে। ওই দিন ২৪ আগস্টের টিকেট পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ আগস্টের টিকেট যথাক্রমে মিলবে ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ তারিখ। ঈদ উপলক্ষে ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ২১ ও ২২ আগস্টের ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী ট্রেন এবং ২৩ আগস্টের বন্ধন এক্সপ্রেস স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

রেলসূত্রে জানা গেছে, মোট অগ্রিম টিকেটের ৬৫ শতাংশ দেওয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশের ২৫ শতাংশ অনলাইন ও মোবাইলে। ৫ শতাংশ ভিআইপি এবং রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ। একজন যাত্রীকে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি টিকেট দেওয়া হচ্ছে। তবে বিক্রীত টিকেট ফেরত নেওয়া হবে না।

কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করছেন। যাত্রীদের অনেক ভিড়। যদিও আমাদের সম্পদ সীমিত। এর মধ্যেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে।

এ ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পবিত্র ঈদুল আজহার ৫ দিন আগে ১৮ আগস্ট থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে বলে নিশ্চিত করেছেন স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু।

অপরদিকে অগ্রিম টিকেটের জন্য গতকাল সকাল থেকেই চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আগেভাগে টিকেট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অনেকেই রাত থেকে অবস্থান নেন স্টেশনে। গতকাল সকালে গিয়ে দেখা যায়, অগ্রিম টিকেটের সবগুলো কাউন্টারেই টিকেটপ্রত্যাশীদের লম্বা লাইন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকেট হাতে পেয়ে বিজয়ীর হাসি হাসছেন অনেকে।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গন্তব্যের মোট ১২টি ট্রেনের ৮ হাজার ৯৯৩টি টিকেট বিক্রির জন্য রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি কাউন্টারে রাখা হয়েছে ৬ হাজার ৭২৫টি টিকেট। বাকি টিকেটগুলোর মধ্যে ২৫ শতাংশ অনলাইনে বিক্রির জন্য এবং ৫ শতাংশ ভিআইপি ও ৫ শতাংশ টিকেট রেলওয়ে কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads