• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ঈদযাত্রার প্রথম দিনে সময়ে ছেড়েছে ট্রেন

ঈদযাত্রার প্রথম দিনে কমলাপুর স্টেশনের চিত্র

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

আজ শুরু হচ্ছে ঈদের বিশেষ সার্ভিস

ঈদযাত্রার প্রথম দিনে সময়ে ছেড়েছে ট্রেন

  • রানা হানিফ
  • প্রকাশিত ১৮ আগস্ট ২০১৮

আগাম টিকেট কেনার ভোগান্তির কথা এক নিমিষেই ভুলে গেছেন ঈদযাত্রার প্রথম দিনই বাড়ি ফেরার সুযোগ পাওয়া অহিদুল হক। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ি যশোরে যাবেন তিনি। কিছুতেই যাতে ট্রেন ফেল না হয় সে জন্য সুন্দরবন এক্সপ্রেসের ট্রেনের এই যাত্রী ভোর ৫টায় সপরিবারে হাজির হন কমলাপুর স্টেশনে। প্লাটফর্মে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা অহিদুল বলেন, ট্রেন ছাড়ার সময় ৬টা ২০ মিনিট। এ সময় ট্রেন ছাড়তে সাধারণত একটু দেরি হয়। তবু রিকশা নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চলে এসেছি।  

ট্রেনের আসনে বসতে পারায় খুশি জয়পুরহাটের শরিফুল ইসলাম। ঢাকা-দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের ঘ কোচের যাত্রী শরিফুল বলেন, ঈদে আগ্রিম টিকেট কাটতে যেমন কষ্ট, তেমনি কষ্ট ট্রেনে উঠতেও। ভেতরে গায়ের সঙ্গে সেঁটে দাঁড়ানো মানুষ। তার পরও বাড়ি যেতে পারছি, এটাই আনন্দের। ঈদযাত্রার প্রথম দিনে ঢাকার কমলাপুর থেকে বেশিরভাগ ট্রেনই ছেড়ে গেছে মোটামুটি নির্দিষ্ট সময়ে। দুয়েকটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়লেও এ বিলম্বকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার নিয়মিত ট্রেনগুলো পরিচালনা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে এ উৎসব উপলক্ষে ঘরে ফেরা ও ফিরতি যাত্রার বিশেষ ট্রেন। গতকাল

শুক্রবার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। তবে ঈদযাত্রার এই উপচে পড়া ভিড়ে তুলনামূলক কম বিলম্বেও ভুগতে হয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের।

ঈদ উপলক্ষে প্রথম দিনে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিয়ে ট্রেনের ঈদযাত্রা শুরু হয় ঢাকা-খুলনার সুন্দরবন এক্সপ্রেসকে দিয়ে। ৫৬ মিনিট বিলম্বে সকাল ৭টা ১৪ মিনিটে কমলাপুর প্লাটফর্ম ছাড়ে সুন্দরবন। এরপর একে একে বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায় নিয়মিত ট্রেনগুলো। চিলাহাটির নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টার পরিবর্তে ছাড়ে ৮টা ৫০ মিনিটে। দেওয়ানগঞ্জের তিস্তা এক্সপ্রেস ১ ঘণ্টা বিলম্বে সকাল সাড়ে ৮টায় ছেড়ে যায়। দিনাজপুরের উদ্দেশে একতা এক্সপ্রেস নির্দিষ্ট সময় সকাল ১০টায়ই ছেড়ে যায়। সকাল ৯টার পরিবর্তে মাত্র ১৬ মিনিট বিলম্বে ছেড়ে যায় রংপুর এক্সপ্রেস। ঢাকা-চট্টগ্রামে চলাচলকারী নম্বর সুবর্ণ এক্সপ্রেসের দেরি হয় মাত্র ৫ মিনিট। ট্রেনটি কমলাপুর ছাড়ে বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে।

কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্তী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে মোট ১৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় অনেকটা বেশি ছিল। আগ্রিম টিকেটের যাত্রী ছাড়াও প্লাটফর্ম ও ট্রেন ভেতরে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য স্পট টিকেটের ব্যবস্থা রয়েছে।

ঈদে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের জন্য ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সিডিউলভুক্ত অন্যান্য ট্রেনের পাশাপাশি ঈদের চাপ সামলাতেই এই বিশেষব্যবস্থা। ঈদের আগে ও পরে এসব বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। বিশেষ ট্রেনগুলোর ছয়টির যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ শনিবার। খুলনা-ঢাকা-খুলনা বিশেষ খুলনা এক্সপ্রেসটি শুধু ২১ আগস্ট পরিচালিত হবে। ঈদের দিন শোলাকিয়া স্পেশাল-১ ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও শোলাকিয়া স্পেশাল-২ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে পরিচালিত হবে।

এ ছাড়া আজ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত এবং ২৩ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত হবে ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটের দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল বিশেষ ট্রেনটি। রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটের রাজশাহী বিশেষ ট্রেনটি পরিচালিত হবে আজ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত এবং ঈদের পর ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত।

দিনাজপুর-ঢাকা-দিনাজপুর রুটে আজ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত হবে দিনাজপুর স্পেশাল। বিশেষ এই ট্রেনটি ঈদের পর ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ফিরতি যাত্রী পরিবহন করবে। বিশেষ ট্রেন লালমনিরহাট স্পেশালের যাত্রা শুরু হবে আজ ঢাকা থেকে। ট্রেনটি ২১ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা-লালমনিরহাট-ঢাকা রুটে চলাচল করবে। দুই দিন বিরতি দিয়ে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ফিরতি যাত্রা পরিবহন করবে বিশেষ এ ট্রেন।

ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে ২১ আগস্ট পর্যন্ত ও ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত চাঁদপুর স্পেশাল-১ ও ২ নামের দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন ঈদের ঘরে ফেরা এবং ফিরতি যাত্রায় পরিচালিত হবে।

রেলের নিয়মিত এক হাজার ২৫২টি। ঈদুল আজহা উপলক্ষে এর সঙ্গে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৭৫টি এমজি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ২২টি এমজি এবং ৫৩টি বিজিসহ মোট ১৫০টি কোচ ঈদযাত্রায় যুক্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ হিসাবে ১ হাজার ৪০২টি কোচের মাধ্যমে পরিচালিত হবে ট্রেনের ঈদযাত্রা। কোচগুলো পরিচালনা করতে পূর্বাঞ্চলের ১০৪টি চলমান লোকোমোটিভের সঙ্গে ১০টি এবং পশ্চিমাঞ্চলের ১০৫টি লেকোমোটিভের সঙ্গে অতিরিক্ত আরো ১০টি সর্বমোট ২২৯টি লোকোমোটিভ এবারের ঈদের বিশেষ কোচগুলো পরিচালনা করবে। ঈদ উপলক্ষে রেলের সমস্ত কর্মকর্তা- কর্মচারীর সব ধরনের ছুটিও বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads