• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচল শুরু ১০ নভেম্বর

ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচল শুরু ১০ নভেম্বর

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

ঢাকা-পঞ্চগড় ট্রেন চলাচল শুরু ১০ নভেম্বর

  • ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৪ নভেম্বর ২০১৮

দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়বাসীর স্বপ্নের দাবি পঞ্চগড়-ঢাকা সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের দিন নির্ধারণ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে পশ্চিম সূত্রে জানায়, আগামী ১০ নভেম্বর হতে দিনাজপুরের পর পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, রুহিয়া হয়ে পঞ্চগড়ে যাবে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস।

এর আগে ২৩ অক্টোবর রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক বরাবর পাঠানো রেলওয়ের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন বিভাগের উপ-পরিচালক খালিদুন নেছা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা-দিনাজপুরের মধ্যে চলাচলকারী দ্রুতযান এক্সপ্রেস এবং একতা এক্সপ্রেস ট্রেন একই ধরনের কোচ, কম্পোজিশনে লাল-সবুজ রঙে ইন্দোনেশিয়ান কোচ দিয়ে পরিচালনা করা হবে। বর্তমানে একতা এক্সপ্রেস ট্রেন সোমবার আর দ্রুতযান বুধবার বন্ধ থাকে। ট্রেনগুলো তিনটি রেক দিয়ে চালানো হবে। নতুন সময়সূচিতে এই দুটি ট্রেনের সাপ্তাহিক কোনো বন্ধ থাকবে না। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ৫০৭ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে দীর্ঘ রুট এটি। ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশন মাস্টার আকতারুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। আশা করি, উদ্বোধনের আগে সব কাজ সম্পন্ন হবে। ১০ নভেম্বর সকাল ৭টা ২০ মিনিটে পঞ্চগড়ে দ্রুতযান এক্সপ্রেস উদ্বোধন হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে ৭টা ৫৮ মিনিটে পৌঁছাবে। ৮টায় ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। আবার রাতে একতা এক্সপ্রেস পঞ্চগড়ে ৯টায় ছেড়ে ঠাকুরগাঁওয়ে ৯টা ৩৮ মিনিটে পৌঁছে ৯টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাবে।

তিনি আরো জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের যাত্রীদের জন্য একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেসে ৪৪টি শোভন চেয়ার, ৫টি এসি, ২টি এসি বার্থ ও ৪টি নন-এসি বার্থ বরাদ্দ। শোভনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২০, এসির ৯৮৯, এসি বার্থ ১৭৮৬ ও নন-এসি বার্থ ১০৮৫ টাকা।

ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় অনেকেই জানান, এ মাসেই ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে, এতে আমরা আনন্দিত। অবশেষে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়বাসীর স্বপ্নের দাবি পূরণ হচ্ছে। এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের।

ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম বাবলু বলেন, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি এই রুটে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা। শাটল ট্রেনে দুটি জেলার মানুষের জন্য যে পরিমাণ টিকেট ছিল তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম। আশা করি আন্তঃনগর ট্রেনে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকেট আমরা পাব।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের ঠাকুরগাঁও শাখার সভাপতি মনতোষ কুমার দে বলেন, দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে জেনে আমরা ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়বাসী খুবই আনন্দিত। দীর্ঘদিন পরে হলেও আমাদের দাবি পূরণ হচ্ছে। এই রেল চালু হলে দুটি জেলার মানুষ সহজে নিরাপদে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। অর্থনীতির ওপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, সবদিক থেকেই ভালো হবে। এ ছাড়া দেশের রেলের আয়ও বাড়বে।

প্রসঙ্গত, ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১০ সালের অক্টোবরে মিটারগেজ রেলপথকে আধুনিকায়ন ও ডুয়েলগেজে রূপান্তরিত করতে তমা কনস্ট্রাকশন ও ম্যাকস কনস্ট্রাকশন নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটারের এ রেললাইনের নির্মাণকাজ করা হয়। ২০১৬ সালে রেললাইনের সকল কাজ সম্পন্ন হলেও ২০১৭ সালের জুলাই মাসে পঞ্চগড়ে এসে শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। এরপরও আন্তঃনগর ট্রেন চালু না হওয়ায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ মানুষ। তবে গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ের জনসভায় পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা রুটে দ্রুত সময়ে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads