• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
নাব্যতা সংকটে পায়রা-লোহালিয়া নদীতে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত

নাব্যতা সংকটে পটুয়াখালীর পায়রা ও লোহালিয়া নদী। ছবিতে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আলগি এলাকায় পায়রা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিশাল চর। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ডুবোচর যা ভাটার জেগে ওঠে, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। সোমবার বিকেলে ছবিটি তোলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

নাব্যতা সংকটে পায়রা-লোহালিয়া নদীতে নৌযান চলাচল বিঘ্নিত

  • মোঃ সাইফুল ইসলাম, দুমকি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ জানুয়ারি ২০১৯

পটুয়াখালীর পায়রা ও লোহালিয়া নদীতে নাব্যতা সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। নদীর বাঁকে বাঁকে অসংখ্যে চর ও ডুবোচর জেগে ওঠায় নদীর অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। বিঘ্নিত হচ্ছে আভ্যন্তরীণ নৌ-রুটসহ বিভিন্ন প্রকার নৌ-যান চলাচল। একই সাথে লেবুখালী ফেরী পারাপারেও দেখা দিয়েছে অবর্ণীয় দুর্ভোগ। লেবুখালী ফেরীঘাটের উত্তরপাড় পন্টুণসহ আশ-পাশে জেগে ওঠা বিশাল বিশাল ডুবো চরে ঠেকে যাওয়ায় ফেরী চলাচল মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে।

এলাকাবাসীরা জানায়, জেলার পায়রা ও লোহালিয়া নদীর বাঁকে বাঁকে বিশাল বিশাল চর ও বিভিন্ন স্থানে অসংখ্যে ডুবো চর জেগে ওঠায় নদী দু’টির অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। এককালের বিশাল আকৃতির পায়রা ও লোহালিয়া নদী চর জেগে এখন ক্ষীণ হয়ে গেছে। বরিশালের দক্ষিন উপজেলা বাকেরগঞ্জের সীমান্ত ও পটুয়াখালীর প্রবেশ দ্বার দুমকি উপজেলার পূর্ব-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত পায়রা ও লোহালিয়া দক্ষিনাঞ্চলের প্রধান দু’টি নৌ-পথ নাব্যতা সংকটে পরে মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। চর-ডুবোচর জেগে ওঠায় এ দু’টি রুটের নৌ-যান চলাচল ব্যহত হচ্ছে মারাত্মক ভাবে। পায়রা নদীর নাব্যতা হারানোর কারনে বাকেরগঞ্জ হয়ে কর্ণকাঠী দিয়ে বরিশালের নৌ-রুট ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। পায়রার নৌ-রুট পরিবর্তিত হয়ে দুমকির উত্তরে পান্ডব নদী দিয়ে তেতুলিয়া ঘুরে ঢাকা-বরগুণার আভ্যন্তরীণ নৌ-যান চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। অপর দিকে রাজধানীর ঢাকা টার্মিনাল থেকে বাকেরগঞ্জের কারখানা নদীর সংযোগ ঝিলনা-বগা-পটুয়াখালী-গলাচিপা রুটের লোহালিয়া নদীটি দক্ষিনাঞ্চলের একমাত্র নৌ-রুট। সাম্প্রতিক কালে প্রধান নৌ-রুটের এই লোহালিয়া নদীটির বাঁকে বাঁকে বিশাল চর জেগে ওঠায় সরু হতে হতে এখন নৌ-যান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পটুয়াখালীর উত্তরে দুমকি ও বাউফল উপজেলার সিমান্ত দিয়ে প্রবাহিত লোহালিয়া নদীর ঝিলনা, সন্তোষদি, চরগরবদি, বাবনিকাঠী, পালের ডাঙ্গা এলাকায় দু’তীরে বিশাল বিশাল চর জেগে লোহালিয়া নদী আস্তে আস্তে ক্ষীণ হতে চলেছে। এ দু’টি নৌ-রুটে ছোট ছোট নৌ-যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও মালবাহি কার্গো, কন্টেইনার ও বড় আকৃতির ভারি নৌ-যান চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করেই ঢাকা-পটুয়াখালী রুটের ডাবল ডেকার লঞ্চগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে। ভাটার সময় প্রায়শ:ই এসব যাত্রী বোঝাই লঞ্চগুলো ঝিলনার চরে আটকে থাকতে দেখা গেছে। এ ভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে যে কোন সময়ে এ নৌ-রুট দুটিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। নাব্যতা সংকটের কারনে নৌ-রুটের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগও হুমকির মুখে রয়েছে। বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালী ফেরীঘাটের পায়রা নদীতে বিশাল চর জেগে ওঠায় ফেরী পারাপার মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। জোয়ারের সময় ফেরী পন্টুনে ভেরাতে পারলেও ভাটার সময় দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। খালি ফেরী কোনক্রমে পন্টুণে ভেড়ানো সম্ভব হলেও ৩/৪ টি বাস-মিনিবাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন ওঠানো হলেই ফেরী চরে ঠেকে যায়। যানবাহন বোঝাই ফেরী একবার আটকে গেলে তা পার হতে ২/৩ঘন্টাও লেগে যায়। অনেক সময় জোয়ারের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়ে। এতে দূর-পাল্লার পরিবহন যাত্রীদের সব চেয়ে বেশী দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এছাড়া মুমুর্ষূ রুগী পরিবহনের ্এ্যাম্বুলেন্ট আটকে গেলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। ভয়াবহ নাব্যতা সংকটের কারনে এ দু’টি রুট সচল রাখতে শীঘ্রই ড্রেজিং অত্যাবশ্যক। জররী ভিত্তিতে ড্রেজিং করা না হলে এ দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার উপায় নেই। এলাকাবাসীরা জানায়, পায়রা ও লোহালিয়া নদীতে এভাবে নাব্যতা হ্রাস পেতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পটুয়াখালীর সকল নৌ-পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপরে পটুয়াখালী নৌবন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান জানান, নাব্যতা ফেরাতে লাউকাঠী নদীতে ড্রেজিং করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যায়গাগুলোতেও ড্রেজিং করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীণ আছে। তবে প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল হওয়ায় কাজটি নির্ভর করে অর্থবরাদ্ধের উপর।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads