• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আজ বসছে পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যান

আজ বসছে পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যান

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

আজ বসছে পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যান

  • শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ মার্চ ২০১৯

কারিগরি ত্রুটির কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যানটি গতকাল বৃহস্পতিবার বসানো হয়নি। আজ শুক্রবার সকালে এ স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হতে পারে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এ স্প্যানটি বসানো হলে জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১ হাজার ২০০ মিটার ও মাওয়া প্রান্তে ১৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। এ নিয়ে মোট ৯টি স্প্যান বসানো হবে। চলতি বছরের মধ্যে সব কয়টি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করা হবে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত বুধবার সকাল ৮টায় মাওয়ার মুন্সীগঞ্জের কুমারভোগের বিশেষায়িত জেডি থেকে স্প্যানটি নিয়ে শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়া নি হাউ জাজিরার উদ্দেশে রওনা দিয়ে বিকালে পৌঁছায়। বৃহস্পতিবার সকালে স্প্যানটি পিলারের ওপর তোলা কথা ছিল। ৩৪ ও ৩৫ নং পিলারের ওপরে বসানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে তা বসাতে ব্যর্থ হয়। এ স্প্যানটি বসানোর পরে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে মোট ১ হাজার ৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুর পৌনে ১টায় ৩৫ ও ৩৬ নং পিলারের ওপর বসানো হয় জাজিরা প্রান্তে সপ্তম স্প্যানটি। অষ্টম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে আরো একটি স্প্যান বসবে। ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান এবং ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান এবং ১০ মার্চ তৃতীয় স্প্যান ও ১৩ এপ্রিল চতুর্থ স্প্যান ২৯ জুন পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়। ২০১৯ সালে ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ স্প্যান ২০ ফেব্রুয়ারি সপ্তম স্প্যান বসানো হয়েছে। এ ছাড়া মাওয়া পয়েন্টে দিকে গত বছরে আরো একটি স্প্যান ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। ওই স্প্যানটি তৈরি করা হয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানোর জন্য। নকশা জটিলতা ও পিলার তৈরি না হওয়ায় এবং ওয়ার্কশপে জায়গা না থাকায় অস্থায়ীভাবে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে তুলে রাখা হয় স্প্যানটি। নকশা জটিলতা কেটে যাওয়ার পর ৬ ও ৭ নম্বর পিলার তৈরি হলে স্প্যানটি সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ। এটা বসানো হলে মোট ৯টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ২১টি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। এ স্প্যানটি বসানোর সংবাদে পদ্মাপারের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ-উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে।

আগামী মাসের মধ্যে আরো একটি স্প্যান বসানো হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর। পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের অর্থনৈতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের শহর। কল-কারখানায় ভরে উঠবে এ এলাকা। শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সব ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা করছে পদ্মাপারের মানুষ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা প্রায় ৭ কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে। দোতলা এ সেতুর নিচতলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্প্যানগুলোয় এখন রেলের স্লাব বসানো কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্প্যানগুলোয় ১২৮টি স্লাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর ২ হাজার ৯৫৯টি স্লাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে স্প্যান ও স্লাব বসানোর কাজ চলছে।

সেতু বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, বৃহস্পতিবার জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল। কারিগরি ত্রুটির কারণে বসানো সম্ভব হয়নি। শুক্রবার বসানো হবে। এরপর এ মাসের মধ্যে আরো স্প্যান বসানো হবে বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সব কয়টি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলব বলে আশা করছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads