• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হবে বিরতিহীন ট্রেন

ঢাকা-রাজশাহী রেলপথে ট্রেনের নতুন বিরতিহীন সার্ভিস

ছবি : সংগৃহীত

যোগাযোগ

রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালু হবে বিরতিহীন ট্রেন

  • রাজশাহী ব্যুরো
  • প্রকাশিত ০৭ এপ্রিল ২০১৯

ঘণ্টায় ১৪০ কিমি গতি বেগের ট্রেন শিগগির চালু হবে রাজশাহী-ঢাকা রুটে। বিরতিহীন এই ট্রেন সার্ভিস চালু হতে পারে আগামী পহেলা বৈশাখে। এই সার্ভিস চালু হলে রাজশাহী থেকে ঢাকা যেতে সময় বাঁচবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা।

সময় বাঁচানোর এই আরামদায়ক যাত্রায় যাত্রীদের গুনতে হবে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ভাড়া। রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা জানান, ট্রেনটির সম্ভাব্য নাম ‘হিমসাগর এক্সপ্রেস’। তবে এ সবই রয়েছে সিদ্ধান্তের প্রাথমিক পর্যায়ে। দ্রুতই সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।

নতুন ট্রেন চালু হলে ঢাকা-রাজশাহী রুটে আন্তনগর ট্রেন সংখ্যা হবে চারটি। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে। এই রুটে এখন চলছে পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস নামে তিনটি আন্তনগর ট্রেন। আসা-যাওয়ার পথে ১০ থেকে ১৪টি রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি করে এসব ট্রেন। ফলে ঢাকা থেকে রাজশাহীর ৩৪৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে প্রায় সাত ঘণ্টা লেগে যায়। এই পথে বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস চালু করতে জাতীয় সংসদে একাধিকবার দাবি তোলেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও বিভিন্ন সময় এই ট্রেন সার্ভিস চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। এ দাবিতে ৭ এপ্রিল মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল সামাজিক এই সংগঠনটির। তার আগেই ট্রেনটি চালুর বিষয়ে খবর এসেছে রাজশাহীতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে শিগগিরই চালু হচ্ছে এই ট্রেন। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের তথ্যমতে, বিরতিহীন ট্রেনটির সম্ভাব্য নামের তালিকাসহ আসনের ভাড়া ও বগির সংখ্যা উল্লেখ করে রেল মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল।

সম্প্র্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে এই ট্রেন চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

রেলের একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজশাহী-ঢাকা রুটে রেলের যে তিনটি ট্রেন চালু রয়েছে তার চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি মূল্যে কিনতে হতে পারে নতুন বিরতিহীন ট্রেনের টিকেট। ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে সকাল ৭টায়। পৌঁছাবে বেলা ১১টায়। এরপর ঢাকা থেকে আবার রাজশাহীর উদ্দেশে ট্রেনটি যাত্রা করবে দুপুর দেড়টায়। পৌঁছবে বিকাল সাড়ে ৫টায়। সপ্তাহে এক দিন বন্ধ থাকবে ট্রেনটি। আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেনটির এখনো কোনো নাম ঠিক করা হয়নি।

তবে রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন ট্রেনের জন্য বেশ কয়েকটি নাম থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে। যেখানে প্রথমেই রয়েছে ‘হিমসাগর এক্সপ্রেস’। এ ছাড়া ‘বনলতা’ ‘গ্রিনসিটি’ এবং ‘রূপসী বাংলা’ নামটিও রয়েছে পছন্দের তালিকায়। তবে রাজশাহীর সুস্বাদু হিমসাগর জাতের আমের নামে ট্রেনের নাম ‘হিমসাগর এক্সপ্রেস’ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মন্ত্রণালয় থেকে নাম চূড়ান্ত করা হবে।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাজশাহী-ঢাকাসহ দেশের তিনটি রুটে নতুন ট্রেন চালুর জন্য ৫০টি বগি কেনা হয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। এরই মধ্যে ১৫টির বেশি বগি এসে পৌঁছেছে দেশে। রাজশাহী-ঢাকা রুটে নতুন বিরতিহীন ট্রেনে এই বগিগুলো সংযোজন করা হবে। একটি ট্রেনে মোট বগি থাকতে পারে ১২টি। ট্রেনটিতে মোট আসন সংখ্যা হবে ৯৩২টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ারের ভাড়া হতে পারে ৩৭৫ টাকা। আর স্নিগ্ধার (এসি চেয়ার) ভাড়া হতে পারে ৭১৯ টাকা। এ ছাড়া ৮৬৩ টাকায় পাওয়া যেতে পারে এসি কেবিন আর ১ হাজার ২৮৮ টাকায় এসি বাথ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এই ভাড়ার প্রস্তাব করেছে। এ ভাড়াও অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে এই প্রথম দেশের আন্তনগর কোনো ট্রেনে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট সংযুক্ত থাকবে। এ কারণে মলমূত্র রেললাইনে পড়বে না। প্রথমবারের মতো ট্রেনটিতে রিক্লেনার চেয়ার বসানো থাকবে। যেখানে পা রাখা এবং হেলান দেওয়ার আরামদায়ক সুবিধা থাকে। আর এসি বাথের কেবিনে বেডরেস্ট দেওয়া হবে। ফলে রাতে বিছিয়ে দিলে ছোট খাটের মতো হয়ে যাবে। আর কেবিনে ওপরের সিটে ওঠার জন্য আগের স্টিলের মই বাদ দিয়ে এবার সিঁড়ি দেওয়া হবে। এটিও এখনকার কোনো ট্রেনে নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিরতিহীন এই ট্রেনটি হবে দেশের সর্বাধুনিক হাইস্পিড কোচের ট্রেন। ঘণ্টায় এর গতি হবে ১৪০ কিলোমিটার। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ট্রেনটি আড়াই কিলোমিটার যাবে। সাড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টায় ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাজশাহী ও রাজশাহী থেকে ঢাকায় চলতে সক্ষম হবে। ফলে এই রুটে সময় বাঁচবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads