• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সড়কে পড়ে আছে ইট ও খোয়া, কাজ শেষ হয়নি এক বছরেও

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

সড়কে পড়ে আছে ইট ও খোয়া, কাজ শেষ হয়নি এক বছরেও

  • আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর
  • প্রকাশিত ১০ মে ২০১৯

জামালপুর সদর উপজেলার বিনন্দরপাড়া-নাকাটি বাজার সড়কটি চলাচলকারীদের জন্য এখন চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে মানুষ কাঁচা সড়কে ভালোভাবেই চলাচল করতে পারত। কিন্তু আরও ভালোভাবে চলাচলের জন্য সড়কটি পাকাকরণের কাজ এক বছর ধরে মাঝে মধ্যে চলে আবার বন্ধ থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রায় ৮-৯ মাস আগে ওই সড়কে ইটের খোয়া বিছিয়ে ফেলে রেখেছেন। কিন্তু এখনো রোলার বা পিচ ঢালায় হয়নি। চার কিলোমিটার সড়কের কাজ এক বছরে শেষ করার কথা থাকলেও দেড় বছরেও অর্ধেক কাজও শেষ করেননি ঠিকাদার। এতে স্থানীয় লোকজনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামালপুর-সরিষাবাড়ী সড়কের আমতলা এলাকার দক্ষিণপাশ দিয়ে বিনন্দরপাড়া-নাকাটি বাজার সড়ক। সড়কে ঢুকতেই বিভিন্ন স্থানে বিশাল গর্ত । নতুন করে সড়কটি নির্মাণের জন্য গর্তে খোয়া ফেলার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে খোয়া আর ফেলা হয়নি। একটু সামনেই শুধু ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। তবে খোয়া রোলার করা হয়নি। এতে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। কুটামনি গ্রামের অংশে একটি কার্লভাট অর্ধেক নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানের কিছু অংশে খোয়া আছে আবার কোথাও কোথাও খোয়া নেই। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন এখানে না আসায় সড়কের ইটও চুরি হয়ে যাচ্ছ। একই রকম প্রায় পুরো সড়কটতি। যেসব খোয়া ফেলা হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগ নিম্নমানের।

জামালপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি ওই সড়কের প্রায় চার কিলোমিটার পাকাকরণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২ কোটি ৫০ লাখ ৪১ হাজার ৫৭৪ টাকায় কাজটি পায় মের্সাস মা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আমিন এন্টারপ্রাইজ। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো.কামরুল ইসলাম। কাজটি ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন। গত দেড় বছর অতিবাহিত হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৪৫ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৪৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৬ টাকা ঠিকই উত্তোলন করে নিয়েছেন।

কুটামনি গ্রামের বাসিন্দা মো.দেলুয়ার হোসেন বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে সড়কটি পাকাকরণ কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিনের মাটির রাস্তার কষ্ট তাহলে তাদের দূর হচ্ছে। কিন্তু কাজ শুরুর কিছুদিন পরই তাদের মুখের হাসি মিলিয়ে যায়। মাটির রাস্তা দিয়ে পায়ে ও ছোটখাট যানবাহন দিয়ে চলাচল করা যেতো। কিন্তু গত এক বছর ধরে শুধু ইটের খোয়া ফেলে রাখার কারণে যানবাহনতো দূরে থাক পায়েও হেটে চলাচল করা যায় না।

ভেনচালক মো.হেলাল উদ্দিন বলেন, এক বছর ধরে সড়কটা এভাবে পড়ে রয়েছে। ইটের খোয়াগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় রিকশা ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। বড় বড় খোয়ার কারণে জুতা ছাড়া পায়ে হাটাও যায় না। সড়কের বিভিন্ন স্থানে আবার গর্ত করে রাখা হয়েছে, সেখানে খোয়াও ফেলা হয়নি। এই সড়কটি দিয়ে ভাড়া নিয়ে ঠেলে নিয়ে যেতে এখন বড় কষ্ট হয়। এছাড়াও কাজটাও খুব নি¤œমানের হচ্ছে। ভালো খোয়ার সঙ্গে খারাপ খোয়া মিশ্রিত রয়েছে।

এব্যাপারে কথা বলার জন্য মের্সাস মা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আমিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধীকারী মো.কামরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার দুটি নম্বরে চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এব্যাপারে জামালপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম বলেন, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কাজ শেষ করার সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন। দ্রুত কাজ শেষ করতে নতুন করে আরও একটি চিঠি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads