• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
যাত্রী নেই,তবু মিটারে চলে না সিএনজি

ছবি : সংগৃহীত

যোগাযোগ

যাত্রী নেই,তবু মিটারে চলে না সিএনজি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ মে ২০১৯

যাত্রীর আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে দেখা যায় সিএনজি চালকদের। আগে তাদের যে চাহিদা ছিল উবার, পাঠাওয়ের কারণে তা আর নেই বললেই চলে। কিন্তু তারপরও মিটারে যেতে নারাজ সিএনজি চালকরা। যাত্রীরা মিটারে যেতে চাইলেও তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ভাড়া না পেলে যাত্রী ওঠায় না। তাই বেশিরভাগ সময় সিএনজি চালকদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে এক সিএনজি চালক বলেন, ইদানীং সিএনজিতে যাত্রী পাওয়াই মুশকিল হয়ে গেছে। একসময় রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে সিএনজিতে প্রচুর যাত্রী পাওয়া গেলেও বর্তমানে রাইড শেয়ারিং অ্যাপস আসার পর থেকে মানুষ এখন বাধ্য না হলে সিএনজিতে চড়ে না। এখান কেউ তার গন্তব্যে যেতে চাইলে অ্যাপস চাপল আর গাড়ি বা মোটরসাইকেল এসে হাজির হলো। মানুষকে আর দরদাম করে সিএনজি খুঁজতে হয় না। বাসার গেটে রাইড শেয়ারিং গাড়ি চলে যায়। যে কারণে আমরা পড়েছি বিপদে। কিন্তু এরপরও তারা মিটাতে গাড়ি চালাতে আগ্রহী নয়।

এ নিয়ে তিনি জানান, যাদের নিজের সিএনজি নেই তাদের সারাদিনের জন্য জমা দিতে হয়  ৯০০ টাকা। কিন্তু মালিকরা আমাদের কাছ থেকে প্রায়ই ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করে। সারাদিনের জন্য গ্যাস লাগে ৩০০ টাকার। এর ওপর আছে নিজের খরচ ও খাওয়া-দাওয়া। এতকিছু হিসেব করার পর  আমাদের পক্ষে কীভাবে মিটারে সিএনজি চালানো সম্ভব হয় না। আগে সারাদিনে ১০টা ট্রিপ মারতাম এখন সেটা হয়ে গেছে ৫-৬টা। আগে সব খরচ বাদ দিয়ে দিনে ১২০০-১৫০০ টাকা আয় করলেও এখন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার বেশি হয় না। সব বিপদ যেন আমাদেরই।

২০১১ সালে সিএনজি অটোরিকশার সরকার নির্ধারিত কিলোমিটার প্রতি ভাড়া বাড়িয়ে ৭ টাকা ৬৪ পয়সা এবং বিরতিকালীন চার্জ ১ টাকা ৪০ পয়সা করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে ভাড়া ও জমা বাড়ানো হয়। ২০১৫ সালে সিএনজির জমা ৯০০ টাকা এবং যাত্রীদের জন্য প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়া ৪০ টাকা, পরে প্রতি কিলোমিটার ১২ টাকা এবং বিরতিকালীন চার্জ প্রতি মিনিটে ২ টাকা নির্ধারণ হয়। কিন্তু কোনো সিএনজি চালক এই ভাড়া মানেন না। তারা বরাবরই তাদের ইচ্ছেমতো যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদন অটোরিকশা নৈরাজ্য চিত্রে উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ৯৮ ভাগ সিএনজি-অটোরিকশা চলে চুক্তিতে। বকশিশ দাবি করে ৯২ ভাগ, পছন্দের গন্তব্যে যায় না ৮৮ ভাগ, মিটারবিহীন চলে ৬২ ভাগ।

রাজধানীর ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ২৫৬টি অটোরিকশায় যাত্রী সেবার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এই সময়ে ৩১০ জন অটোরিকশা যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে দেখা যায়, রাজধানীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো বলতে গেল মিটারে চলেই না। অথচ যাত্রীর ইচ্ছামতো গন্তব্যে মিটার অনুযায়ী চলাচল করবে, এটাই আইন। কিন্তু গত দেড় যুগেও আইনটি বাস্তবায়ন করা যায়নি। রাজধানীতে মাত্র ২ শতাংশ অটোরিকশা মিটারে চলে। অথচ বিদেশি সংস্থাগুলোর অ্যাপসনির্ভর যাত্রীসেবা চালুর প্রথম দিন থেকেই তাদের সঙ্গে যুক্ত সব ধরনের বাহনই মিটার মেনে চলাচল করছে। অটোর এই নৈরাজ্য দমনে ট্রাফিক বিভাগের কোনো তৎপরতা নেই। ঢাকা শহরে ২০০২ সালের শেষ দিকে সিএনজি চলাচল শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে প্রায় ১৩ হাজার অটোরিকশার নিবন্ধন দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। নানা সুবিধা দেওয়ার পরও সিএনজি খাতটিতে বিশৃঙ্খলা রয়েই গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads