• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় উড়াল সড়ক উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় উড়াল সড়ক উদ্বোধন করেন

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় উড়াল সড়ক উদ্বোধন

নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার আশা ঘরমুখো মানুষের

  • কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৫ মে ২০১৯

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রার জন্য কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চারলেনের উড়াল সড়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ সকাল দশটায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ফলে এবার ঈদে এ মহাসড়ক দিয়ে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরবে ঘরমুখো মানুষগুলো।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উদ্যোগে এডিবি’র অর্থায়নে সাউথ এশিয়া রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন প্রজেক্টের আওতায় গত ২০১৬ সালে জানুয়ারী এ মহাসড়কটির চারলেনের কাজ শুরু হয়। এবার ঈদে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার জন্য সাতটি স্প্যানের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ত্রিমোড়ে নির্মিত ২৮৮ মিটার দীর্ঘ ১৮ দশমিক ২০ মিটার প্রস্থ উড়াল সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই খুলে দেওয়া হলো। ৫৫৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে ৯টি উড়াল সড়ক, ২টি রেলওয়ে ওভারপাস ব্রিজ, ২৬টি সেতু নির্মাণ, ৭৪টি কালভার্ট সম্প্রসারণ, ৭টি আন্ডারপাস ও ১৩টি পথচারী সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

এলাকাবাসী, যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন দেশের উত্তরবঙ্গের ১১৮টি রোডের হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে যানবাহনের চাপ আরো বৃদ্ধি পায়। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের একমাত্র সহজ এ মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড়। এক সময় এটি ছিল যানজটের মহাসড়ক। যানজটে আটকে পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহনে বসে থাকতে হতো। ভাঙ্গাচুরা সড়কে এলোমেলো গাড়ি চলাচল ও ধুলোয় ধুসর হয়ে উঠতো মহাড়সকটি। এসব কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তেন অনেক যাত্রী। আবার সময় মতো পৌছতে না পেরে অনেকেই নানা সমস্যার সম্মুখিন হতেন। বিশেষ করে দুটি ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এছাড়া পহেলা বৈশাখ, পুজাসহ বিভিন্ন উৎসব ছুটিতেও দুর্ভোগ কম ছিল না। এ মহাসড়কের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ত্রিমোড় ছিল যানজটের অভয়াশ্রম। এখানকার হাইওয়ে, জেলা ও থানা পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন এসব এলাকার যানজট নিরসনে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু তারা যানজট নিরসনে ছিল বরাবরই ব্যর্থ। ফলে দুটি ঈদে অন্য জেলা-থানা পুলিশ এসব এলাকায় যানজট নিরসনে কাজ করেছে। তাদের পাশাপাশি স্কাউট শিক্ষার্থীরা যানজট নিরসনে কাজ করে। তবুও লেগেই থাকতো সেই চিরচেনা সেই যানজট। ফলে এ পথে যাতায়াতের কথা শুনলেই শরীরে ঘাম ঝরা শুরু হতো। ফলে এ মহাসড়কটি চারলেনে উন্নিতকরণ কাজটি হাতে নেয় বর্তমান সরকার। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এটি খুলে দেওয়ার ফলে এবার ঈদে এ মহাসড়ক দিয়ে নিরাপদে ও নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরবে ঘরমুখো মানুষ। সালনা (কোনাবাড়ি) হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে পুলিশের ব্যাপক প্রস্ততি। এছাড়া অটোরিকশা, সিএনজি মহাসড়কে চলাচল একেবারেই নিষিদ্ধ। তারপরও হয়তো দুই-একটি এসব যান চলাচল করছে। সেগুলো নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে এবার ঈদযাত্রায় নিরাপদ ও নির্বিঘœ ঘরমুখো মানুষ চলাচল করবে।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রজেক্টের এক নম্বর প্যাকেজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান জানান, সাসেক-১ এর কাজ প্রায় শেষ, বর্তমানে সাসেক-২ এর কাজ চলছে। এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে করার জন্য চন্দ্রা ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হলো।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সঞ্চালনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভাওয়াল নাট মন্দিরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারউজ্জামান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল আলম প্রধান, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান, কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads