• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

যোগাযোগ

বেনাপোল এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ জুলাই ২০১৯

যাত্রা শুরু করল বেনাপোল-ঢাকা রুটে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধীবান্ধব আন্তনগর ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেস। এর আগে গতকাল বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাঁশিতে ফু দিয়ে এবং সবুজ পতাকা উড়িয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। স্বাগত বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন। এ সময় রেলপথ উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। উদ্বোধন উপলক্ষে এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ মিছিল নিয়ে বেনাপোল রেল স্টেশনে এসে জড়ো হয়। পুরো রেল স্টেশন জনসমুদ্রে রূপ নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ট্রেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করতালিতে ও বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রেল স্টেশন এলাকা। রেলওয়ে স্টেশন বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। প্ল্যাটফর্মের ওপর আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। হরেক রকম ফুল দিয়ে ট্রেনটি সাজানো হয়। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি যুক্ত হন যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হোসাইন মোহাম্মদ শওকত, বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আলী কদর সাগর ও বেনাপোল হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী তনু আফসানা সাদ। তারা নতুন এই ট্রেনটি উদ্বোধন করায় এলাকার জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দূরের যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার কথা জানান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। প্রধানমন্ত্রী হাসিমুখে তাদের ধন্যবাদ জানান। আগামীতে পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে বেনাপোলে আরো একটি ট্রেন চলাচলের আশ্বাস দেন তিনি। সেই সঙ্গে বেনাপোল বন্দরকে আরো আধুনিয়কায়ন করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

রেল মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন ট্রেনের ব্রড গেজ কোচসমূহ এডিবির অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটার গেজ ও ব্রড গেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা হয়। দ্রুতগতির এ ট্রেনে যাত্রীদের ভ্রমণ হবে নিরাপদ, দ্রুত ও আরামদায়ক। এই  ট্রেনের কোচসমূহের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বায়ো-টয়লেট সংযোজন। ট্রেনটিতে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে আছে প্রশস্ত দরজা (মেইন ও টয়লেট দরজা) এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা।

যাত্রীদের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল র্যাক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াই-ফাই রাউটার হ্যাঙ্গার, মোবাইল চার্জারের ব্যবস্থা রয়েছে। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ১২টি কোচ রয়েছে। এতে এসি বার্থ, এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ার শ্রেণির মিলিয়ে ৮৯৬টি (৭৯৫ নম্বর ট্রেনের ক্ষেত্রে) এবং এসি বার্থ, এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ারসহ ৮৭১টি (৭৯৬ নম্বর ট্রেনের ক্ষেত্রে) আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। বেনাপোল ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন (৭৯৫) বুধবার ও (৭৯৬) বৃহস্পতিবার।

ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ছাড়বে দুপুর ১টায়, ঢাকায় পৌঁছবে রাত ৯টায় এবং ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে, বেনাপোল পৌঁছবে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। বেনাপোল থেকে ঢাকা শোভন চেয়ারের টিকেটের মূল্য ৪৮৫ টাকা, এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) চেয়ার ৯৩২ টাকা, এসি সিট এক হাজার ১১৬ টাকা ও এসি কেবিন এক হাজার ৬৭৪ টাকা। উদ্বোধন শেষে দুপুর সোয়া ১টায় বেনাপোল এক্সপ্রেস বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামানের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তারা ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ, রাজশাহী জোনের সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন চিফ ইঞ্জিনিয়ার অসীম কুমার তালুকদার, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী, যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক মঞ্জু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নুরুজ্জামানসহ রেল ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads