• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের বেহাল দশা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের বেহাল দশা

  • কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ নভেম্বর ২০১৯

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার নাম বা স্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়ন, বাহাদুরপুর ইউনিয়ন ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের মানুষের ভেড়ামারা শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়কটি সম্পূর্ন রুপে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ দিনের ব্যাস্ত এ সড়কটির কোনরূপ সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি বেহাল থেকে বেহালতর অবস্থায় পৌঁছিয়েছে। কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে কোন নজর নেই। অত্র এলাকার প্রধান রাস্তা ভেড়ামারা-রায়টা সড়ক। আর এই সড়কের বর্তমানে বেহাল দশা।

ভেড়ামারা-রায়টা সড়কে পাশেই কয়েকটি সরকারি স্থাপনা রয়েছে যেমন ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্র, চলমান ইপিজেডসহ বিভিন্ন প্রকল্প থাকার ও ৩টি ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র চলাচলের রাস্থা হওয়ার কারনে উক্ত রাস্তাটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। উক্ত রাস্তার পাশেই একটি কলেজ, অনেকগুলো সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ গুরুত্বপূর্ন নানা স্থাপনা রয়েছে এ এলাকাতে। অথচ নেই শহরের সাথে যোগাযোগের জন্য চলাচলে রাস্তা। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই এ গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত জীবিনের ঝুঁকি নিয়ে শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। সড়কে চলাচলের অযোগ্য থাকায় অনেকেই গ্রামের রাস্তা দিয়ে অনেক ঘুরে ঘুরে চলাচল করছেন। অত্র এলাকার সড়কের বেহাল দশা হওয়ায় চালকের একটু অসাবধানতায় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা দ্রুত এ সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পারুল বেগম জানান, আমি অতো কিছু বুঝি না আমরা আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তা দ্রুত সংস্কার চায়। এই রাস্তা খারাপ থাকায় চলাচলে আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।

নসিমন চালক রুবেল জানান, আমি নসিমন চালিয়ে জীবন যাপন করি। কিন্তু বর্তমানে ভেড়ামার-রায়টা সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। যাত্রী নিয়ে চলাচলের সময় মাঝে মাঝে আমার নসিমনটি কাদায় পুতে যায়, তখন যাত্রী নামিয়ে দিতে হয়। আর বৃষ্টির পানিতে রাস্তায় বড় বড় গর্তের কারনে যে কোন সময় যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মটরসাইকেল আরোহী হোসেন জানান, ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। একা একা মটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজ তাগিদেই চলাচল করছি। খুবই দুঃখজনক ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের পাশেই আমাদের মাননীয় এমপি মহোদয়ের বাড়ি। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসেন এবং এই পথ দিয়েই বাড়িতে যাতায়াত করেন কিন্তু রাস্তার কোন উন্নতি হয় না।

মোকারিমপুর ইউনিয়নের উদ্যোক্তা শওকত আলী জানান, আমার বাড়ি গোলাপনগর হওয়ায় প্রতিদিন গোলানগর থেকে মোকারিমপুর ইউনিয়ন পরিষদে আসতে বর্তমানে সময় লাগে ৪০ মিনিট কিন্তু রাস্তা ভাল থাকলে সময় লাগতো ১৫ মিনিট। সেই সাথে জীবনের ঝুঁকি তো রয়েছেই। আসার সময় মাঝে মাঝেই দেখি কোন না কোন জায়গায় ট্রাক বা নসিমন বা অন্য কোন যানবাহন অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।

ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আক্তারুজ্জামান মিঠু জানান, দুঃখের বিষয় কি আর বলবো! বলারও আমার কোন ভাষা নাই! ভেড়ামারা-রায়টা সড়কে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশা। আর এই রাস্তার পাশেই আমাদের মাননীয় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক (এমপি)’র বাড়ি। তিনি মাঝে মাঝে এই রাস্তা দিয়েই বাড়িতে আসেন কিন্তু তিনি এসব দেখেও কিভাবে চুপ করে থাকেন, আমার জানা নাই। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি, তারা জানিয়েছেন টেন্ডার হয়েছিল কিন্তু সেটা আবার বাতিলও হয়েছে। আবার নাকি তারা টেন্ডার দেবেন। কিন্তু কবে রাস্তা হবে তা আমার জানা নাই।

মোকারিমপুর ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ জানান, আমি অত্র এলাকার একজন জনপ্রতিনিধি। আমার বাড়িও এই গ্রামেই। আমি নিজেও এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করি। আমি বাইরে বাইরে থেকে শুনেছি টেন্ডার হয়েছে। নতুন ইট উঠলে রাস্তার কাজ শুরু হবে। অত্র রাস্তার বেহাল দশার বিষয়ে আমি একাধিক বার মাসিক মিটিং অবহিত বা আবেদন করেও কোন সুরাহা হয়নি। তারা বলেছেন খুব শিঘ্রই টেন্ডার হবে এবং কাজ শুরু হবে।

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান ছবি জানান, আমি নিজেও এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে ভয়ে থাকি। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই রাস্তার বেহাল দশার ব্যাপারে আমাদের দলীয় মিটিং এ সবার আগে উত্থাপন করি এর প্রতিকারের জন্য। জেলার মাসিক মিটিং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় কিন্তু কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি।

ভেড়ামারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল মারুফ জানান, এই রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। এই রাস্তার জন্য ৪০ কোটি টাকার বরাদ্দ হয়েছে। দুই বার টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোয়ালিটি সম্পন্ন কোন টেন্ডারার না আসায় সেটা বাতিল হয়েছে। বর্তমানে পুনরায় টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। আগামী ২০-৩০দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে বলে আশাকরি। তবে বর্তমানে যেখানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে ইট সুড়কি দিয়ে চলাচলের মতো করা হচ্ছে। খুব শিঘ্রই রাস্তার কাজ শুরু হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads