নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর ২৩তম স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) বসতে যাচ্ছে আজ রোববার। সবকিছু ঠিক থাকলে ‘৬-এ’ নম্বর স্প্যানটি সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩১ ও ৩২ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হবে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের বাংলাদেশের খবরকে জানান, ৩১ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর ২৩তম স্প্যান বসানোর কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্প্যান বসানো সম্ভব ছিল না। কাল (রোববার) আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাজিরা প্রান্তে উঠবে ২৩তম স্প্যানটি। প্রতি মাসেই তিনটি স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও জানুয়ারিতে স্প্যান উঠেছে দুটি। তবে ফেব্রুয়ারিতে এর সংখ্যা বাড়বে। পদ্মা সেতুর খুঁটির ওপর যে স্প্যানগুলো বসানো হয়েছে, সে স্প্যানের ওপর (নিচের অংশে) ইতোমধ্যে এক কিলোমিটারের ওপর রেললাইন বসে গেছে। আর স্প্যানের ওপর প্রায় ৪০০ মিটার রোডওয়ে স্ল্যাব বা রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ হয়েছে ৮৫.০৫ শতাংশ। সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৭৬.০৫ শতাংশ। এভাবে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ।
আবদুল কাদের আরো জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। কারণ পদ্মা সেতুতে প্রায় ১১শ চীনা নাগরিক কর্মরত রয়েছে। এদের মধ্যে চীনা নববর্ষ উপলক্ষে প্রায় ২০০ নাগরিক ছুটিতে চীনে গিয়ে করোনা ভাইরাসের কারণে আটকা পড়েছেন।
তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা আতঙ্কিত নই। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চীনা কর্মকর্তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আলাদা। যারা তাদের সার্ভ করেন তারা যেন সব সময় সেফটি ড্রেস (মাস্ক) ও গ্লাভস) পরিধান করে থাকেন, সেগুলোতে জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া চীনা কর্মীদের আলাদা ক্যাম্প রয়েছে। অন্যদের সঙ্গে যেন অতিরিক্ত মেলামেশা না করেন, সে বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। তবে চীন থেকে ১৩ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৩২ জন চীনা এসেছেন। এদের প্রকল্প এলাকায়ই আলাদা করে রাখা হয়েছে। তারা বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তবে এরা সবাই সুস্থ আছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
সেতু প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, চীন থেকে ৪১টি স্প্যানের মধ্যে পদ্মা সেতু এলাকায় ইতোমধ্যে ৩৫টি স্প্যান এসেছে। যার মধ্যে ২২টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এবং ২৩তম স্প্যানটি বসবে আজ রোববার। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে এখন ১৩টি স্প্যান রয়েছে। চারটি স্প্যান মাওয়ায় আসার জন্য সমুদ্রপথে আছে। সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩৬টি খুঁটির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ছয়টি খুঁটির কাজ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সবকটি স্প্যান খুঁটির ওপর বসানোর কর্মসূচি রাখা হয়েছে।