• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
অবৈধ রাস্তা বন্ধ করলো রেল কর্তৃপক্ষ!

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

যোগাযোগ

এমপির বরাদ্দে ভরাট

অবৈধ রাস্তা বন্ধ করলো রেল কর্তৃপক্ষ!

  • কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

কুলাউড়া পৌর শহরের আউটার সিগন্যাল এলাকায় রেললাইনের পাশ দিয়ে এমপি’র অপরিকল্পিত বরাদ্দে মাটি ভরাটকৃত রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে এমপির অপরিকল্পিত বরাদ্দকৃত টাকাগুলো ভেস্তে গেল বলে মনে করছেন স্থানীয় জনসাধারণ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও রেল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের দেওয়া কাবিখা প্রকল্পের আওতায় শহরের আউটার সিগন্যাল থেকে উত্তর পশ্চিম কামাল মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ২৫০ মিটার রাস্তায় মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ কাজের জন্য (৯ মেট্রি: টন চাউল) ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দিলে কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান প্রকল্প কমিটির সভাপতি স্থানীয় ২নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর কায়ছার আরিফ। কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কাজের বিলও আংশিক উত্তোলন করা হয়েছে। কাজ শেষ হলেও দেখা দিয়েছে আরেক জটিলতা।

গত শনিবার বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ডি এন মজুমদার ও প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) মো. সুবক্ত গীনের নেতৃত্বে রেলের কর্মকর্তারা আখাউড়া-সিলেট রেললাইন পরিদর্শনে আসলে তাদের নিজস্ব জমিতে অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণ দেখে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা দেন। পরদিন রবিবার কুলাউড়া রেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওই রাস্তার মাঝখানে দু’টি পাকার পিলার মেরে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। দুর্ঘটনা এড়াতে যাতে কোন ধরণের যানবাহন ও মানুষের চলাচল না হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, কুলাউড়া পৌর শহরের আউটার সিগন্যাল এলাকায় উত্তর পশ্চিম দিকে রেললাইনের দক্ষিণ পার্শ্বে একটি রাস্তায় মানুষজন চলাচল করছে। কিন্তুু রেললাইনের উত্তরপার্শ্বে মানুষজনের তেমন কোন চলাচল নেই। তারপরও অপরিকল্পিতভাবে এই রাস্তায় এমপি’র বরাদ্দ দিয়ে কাজ বাস্তবায়ন হয়। অনেকেই এখন মনে করছেন, যেহেতু এখানে রেলের সিগন্যাল রয়েছে সেখানে কোন পরিকল্পনা ছাড়া ও রেল বিভাগের সাথে কোন ধরণের আলোচনা না করে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়।

কাজ বাস্তবায়নের প্রকল্প কমিটির সভাপতি পৌর কাউন্সিলর কায়ছার আরিফ মোবাইলে বলেন, স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলের স্বার্থে রাস্তাটি মাটি ভরাট করা হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করবে না। তবে আশপাশের বাসিন্দারা সতর্কতার সহীত হেটে চলাচল করবে।

রেল বিভাগের (কুলাউড়া) উদ্ধর্তন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. জুলহাস রাস্তা বন্ধের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রেললাইন পরিদর্শনে আসলে রাস্তা নির্মাণের চিত্রটি নজরে পড়লে তা বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে তাদের নির্দেশে রেলের স্বার্থে রবিবার রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বরত লোকজন এই রাস্তায় পাকার খুঁটি মেরে বন্ধ করে দেয়। রেললাইনের সিগন্যালের পাশে অবৈধ রাস্তা থাকতে পারবে না। এতে যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

রেলের প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) মো. সুবক্ত গীন মোবাইলে বলেন, রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে আমাদের সাথে কোন ধরণের আলোচনা করা হয়নি। যেহেতু রেললাইনের একপাশে রাস্তা আছে সেহেতু অন্যপাশে রাস্তার কোন প্রয়োজন নেই। রেলের নিরাপত্তা বিঘœতায় আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই বন্ধ করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কিছু জানতে হলে তার কুলাউড়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। অফিসের যারা বরাদ্দ দিয়েছে তারাই বিষয়টি দেখবে। আমার অফিসের কেউ বিষয়টি আমাকে এখনো জানায় নি। জানালে পরে দেখবো। এ বিষয়ে যেখানে কথা বলতে হবে আমি সেখানেই কথা বলবো।

এদিকে রেলের জমিতে কিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হলো এবং রেলের লোকজন খুঁটি মেরে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আই ডন্ট নো এনিথিং, আই ডন্ট নো। আপনি কি এসব বিষয়ে অবগত নন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমার জানার কথা নয়। কোন কারণে রেল বিভাগ রাস্তা বন্ধ করছে কারণ তো থাকতেই পারে। আমি জানি না, আমি জানিনা, সবকিছু জানতে হবে এমন তো কারণ নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads