• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
সড়কে করোনার প্রভাব

প্রতীকী ছবি

যোগাযোগ

সড়কে করোনার প্রভাব

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ মার্চ ২০২০

করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীর সড়কে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না নগরবাসী। এই আতঙ্কে সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অনেক অভিভাবক। ফলে দিনের বেলাও রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলো মোটামুটি ফাঁকা দেখা গেছে। এতে সড়কে যানজটও হচ্ছে কম। রাস্তায় গত দুদিন যানবাহন কম দেখছে খোদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

গতকাল রাজধানীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রতিদিন যেসব সড়কে যানজট লেগেই থাকত সেসব সড়কে আগের তুলনায় গণপরিবহন কম দেখা গেছে। বাংলাবাজার, শ্যামলী, গাবতলী ও ফার্মগেটে গণপরিবহনের সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল।

গণপরিবহনে যাত্রী কম থাকার কথাও জানিয়েছেন চালকরা। তারা বলেছেন, গত দুদিন রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকছে দিনের বেলায়। সদরঘাট থেকে সাভারগামী বাসের চালক বলেন, ‘যাত্রী কম থাকায় বাস একটু কম নামছে। আবার রাস্তায় প্রাইভেট গাড়িও কম চলে দেখলাম।’

গত দুদিন ঢাকার রাস্তায় গাড়ির পরিমাণ কম থাকার বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নজরেও এসেছে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত দুদিন রাস্তায় ট্রান্সপোর্ট কম এটা আমরাও পর্যবেক্ষণ করেছি। মূলত গণপরিবহন বলতে আমরা যেটা বুঝি বাস, সেটা কম।’

করোনা ভাইরাস যাতে না ছড়ায়, সে জন্য সরকারের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকাল বলেছেন, ‘আইইডিসিআর বলেছে করোনা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি বিদ্যমান, তাতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পরিস্থিতি হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার প্রয়োজন হলে তারা আমাদের জানাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মতামত না পাব, ততক্ষণ আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেব না।’

তবে করোনা নিয়ে শঙ্কা আছে, অভিভাবকদের মনে। তাই অনেকেই তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। অভিভাবকরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে স্কুলে পাঠানো খুব ঝুঁকির বিষয়। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা আলেয়া জানান, তার সন্তানকে তিনি গত দুদিন স্কুলে পাঠাননি। স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

রায়েরবাজার এলাকার এক স্কুলশিক্ষার্থীর মা জাহানারা আক্তার বলেন, তার ছেলের ক্লাসের কয়েকজন করোনার ভয়ে আসছে না। মঙ্গলবার তার ছেলে স্কুলে গেলেও গতকাল তিনি নিজেই পাঠাননি।

গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, দেশে নতুন করোনা রোগী পাওয়া যায়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে কারও দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ১০ জনকে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ১৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে দুজন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের যেকোনো সময় হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হবে বলে গতকাল আইইডিসিআর জানায়। তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads