• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

যোগাযোগ

৫৫ বছর পর চালু হচ্ছে চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেলপথ

উদ্বোধন হবে ১৭ ডিসেম্বর

  • এম এ বাবর
  • প্রকাশিত ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

ভারত-বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। প্রায় ৫৫ বছর পর পুনরায় চালু হচ্ছে চিলহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ। আগামী ১৭ ডিসেম্বর পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে দুই দেশের রেল যোগাযোগের কার্যক্রম উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালের আগ পর্যন্ত চিলহাটি-হলদিবাড়ি পথে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত রেল যোগাযোগ চালু ছিল। সে সময় পথটি ব্যবহার করে ভারতের দার্জিলিং থেকে বাংলাদেশের খুলনা হয়ে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের চলাচল করত। পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর (১৯৬৫ সালে) এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেলসংযোগটি চালুর উদ্যোগ নেয়। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর চিলাহাটি রেলস্টেশন চত্বরে ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম। এ রেললাইন নির্মাণে ব্যয় হয় ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অপর দিকে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি থেকে হলদিবাড়ি সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ করছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেছেন, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা আমরা পূরণ করতে যাচ্ছি। ১৭ ডিসেম্বর নীলফামারী জেলার চিলাহাটি হয়ে ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ওই চাহিদা পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই রেলপথ উদ্বোধন করবেন।

ভারত-বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের ইতিহাস অনেক পুরনো। ১৮৭৪ সাল হতে ১৮৭৯ সালের মধ্যে পাকশীর কাছ থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত মিটারগেজ এবং পদ্মা নদীর অপর পাড়ে কুষ্টিয়া প্রান্তে দামুকদিয়া থেকে পোড়াদহ পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন নির্মিত হয়। ১৯০৯ সালে পোড়াদহ হতে ভেড়ামারা পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইনকে দ্বৈত ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তর করা হয়। ১৯১৫ সালের ১ জানুয়ারি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালুর মধ্য দিয়ে দর্শনা থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত সরাসরি রেলসংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৪ সালে সান্তাহার হতে পার্বতীপুর এবং ১৯২৬ সালে পার্বতীপুর থেকে চিলাহাটি মিটারগেজ রেলওয়ে লাইন ব্রডগেজে রূপান্তর করা হয়। ওই সময় শিয়ালদহ ও শিলিগুড়ির মধ্যে সান্তাহার-পার্বতীপুর হয়ে দার্জিলিংও নর্থবেঙ্গল এক্সপ্রেস নামে দ্রুতগতির ট্রেন চালু হয়। রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই রুটটি তখন ব্যাকবোন হিসেবে বিবেচিত হয়।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর লিংকটি বন্ধ হওয়ায় দুই দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রেলওয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে যায়।

২০১৫ সালে ২৭ মে নয়াদিল্লিতে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনায় চিলাহাটি এবং হলদিবাড়ির মধ্য দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই রেলপখটি চালু করা হলে বাংলাদেশের মোংলা পোর্ট হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ, নেপাল এবং ভুটান ও দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানির অবকাঠামো মানোন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার হবে।

প্রকল্প পরিচালক আবদুর রহিম জানান, এরই মধ্যে ইঞ্জিন ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচলের জন্য চিলাহাটি স্টেশনে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন, একটি নতুন আইল্যান্ড প্লাটফর্ম, প্লাটফর্ম শেড, একটি ফুট ওভারব্রিজ, ৪টি রেইজ প্লাটফরমসহ ২টি ওয়াশপিট লাইন নির্মাণ হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads