• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

যোগাযোগ

কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ছে পাঁচ দেশের সঙ্গে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জানুয়ারি ২০২১

চার লেনে উন্নীত হচ্ছে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫৪ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ভারত, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার ও চীন-এই ৫ দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়বে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

‘কুমিল্লা (ময়নামতী)-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (ধরখার) জাতীয় মহাসড়ককে চার লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা ও কার্যক্রম অধিশাখা) মাহবুবের রহমান বলেন, ‘কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার সড়ককে ৪ লেনে উন্নীত করা হবে। ৭ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৯১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। বাকি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা সরকারি অর্থায়ন। সড়কটি দেশের অর্থনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে পাঁচটি দেশের সঙ্গে সড়কপথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব।’

সওজ সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের আওতায় উভয়পাশে আলাদা দুটি লেনসহ ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেন প্রশস্ত সড়ক তৈরি করা হবে। কুমিল্লা জেলার বুড়িচং, দেবীদ্বার, মুরাদনগর, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। বাজার এলাকার জন্য ৪ দশমিক ৪৭ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ১৪টি ব্রিজ, একটি ফ্লাইওভার, দুটি আন্ডারপাস, ৫০টি কালভার্ট ও ১২টি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে। ফলে দ্রুত ও নিরাপদ যান চলাচল নিশ্চিত হওয়াসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই সড়ক তৈরি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আঞ্চলিক সংযোগ সড়ক দৃঢ় হবে। চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।

টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর সাব রিজিওনাল রোড ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি (এসআরটিপিপিএফ) প্রকল্পের পরামর্শকের মাধ্যমে জরিপসহ বিশদ নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। নকশার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকল্পে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপিতে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৫৬০ ঘনমিটার মাটির কাজের জন্য ২১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৬৮০ বর্গমিটার অফিস বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।  প্রকল্পের আওতায় ৪৯ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি মিটারের দাম পড়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার নয় টাকা। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ৪৩৮ দশমিক ৯১ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে মিটারপ্রতি খরচ পড়বে ২০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় জেনারেল সাইট ফ্যাসিলিটিজের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

প্রকল্পে পাবলিক ইউটিলিটি শিফটিং বাবদ ৩৮ কোটি ৮৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। এর আওতায় চারটি জিপ, ৬টি পিকআপ, ৮টি মোটরসাইকেল কেনা হবে। পাশাপাশি ৬৮০ ঘনমিটার অফিস ভবন, ইউটিলিটি স্থানান্তর, নির্মাণকালীন রক্ষণাবেক্ষণ, ট্রাফিক সাইন, সিগন্যাল ও দিক-নির্দেশক চিহ্ন তৈরির করা হবে।

প্রকল্পের উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহরুল আমিন বলেন, ‘ভূমি ও করোনাসহ নানা জটিলতায় এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কাজ শুরু করা যায়নি। অনেকটাই আমরা পিছিয়ে গেছি। আশা করছি শিগগিরই দৃশ্যমান কাজ শুরু করতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো জমি বুঝে পাইনি। ২৬৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল।’ শাহরুল আমিন বলেন, কোভিডের কারণে পরামর্শক এবং ঠিকাদাররাও আটকা পড়েছেন। তবে এখন এসব জটিলতা কাটিয়ে নতুন করে কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদারকে তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads