• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

যোগাযোগ

সেতু নির্মাণের ৯ বছরেও হয়নি সংযোগ সড়ক

  • সিলেট ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৬ জানুয়ারি ২০২১

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় দ্বিতীয় কুড়া সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার ৯ বছরেও সংযোগ সড়ক হয়নি। এতে সেতুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানায়, দ্বিতীয় কুড়া সেতু প্রকল্পে সিলেটের পূর্বাঞ্চলের তিন শতাধিক গ্রামকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আনতে ১৯৯৯ সালে বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। তিনটি ধাপে ১১১ দশমিক ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।

প্রথম ধাপের কাজ শেষে ২০০১ সালে সরকারের পালাবদলে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্মাণ কাজ ফের শুরু হয়ে ২০১২ সালের ১১ জুন শেষ হয়।

প্রকল্পের সম্ভাব্যতা প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, সেতু হলে গোলাপগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা ছাড়াও সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসবে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর, ইসলামপুর, নুরপুর, কুলাউড়ার হাকালুকি হাওর পারের ছয়টি গ্রাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ঘিলাছড়া ও বিয়ানীবাজারের তিলপাড়া, লাউতা ও নিদনপুর ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম।

সেতুর কাজ শুরু হওয়ার একযুগ পর শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি জনগণের কোনো কাজেই আসছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর এক প্রান্ত ঢাকাদক্ষিণ-ভাদেশ্বর সড়কে গিয়ে মিলিত হলেও অপরপ্রান্তে সংযোগ সড়ক নেই। সেখানে মাত্র আধা কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করলেই সেতুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকাবাসীর অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল এখানে কুড়া নদীর ওপর রাজাপুরে একটি সেতু নির্মাণ করা। সেতু নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলেও সংযোগ সড়কের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা অমল কান্তি দাস জানান, আগে সেতু থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিল খেয়াঘাট। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ২০১৮ সালের ১১ জুন থেকে এলাকাবাসী উদ্যোগী হয়ে সেতুর পাশ দিয়ে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সেতুর উভয় পাশের গ্রামের মানুষের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় খেয়া দিয়েই বছর খানেক নদী পারাপার হয়। কিন্তু ৩/৪ বছর আগে নৌকায় উঠতে গিয়ে স্থানীয় এক বৃদ্ধার পা ভেঙে যায়। এরপর স্থানীয়দের উদ্যোগে সেতুর পূর্ব অংশে (অ্যাপ্রোচ সড়কে) মাটি ভরাট করে মানুষ চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। বর্তমানে তারাপুর, মেহেরপুর, কাউয়াটিকি এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি-অটোরিকশা বা হালকা যানবাহন চলাচল করছে।

শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বেসরকারি স্কুল শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ পূর্ব সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলা ও জুড়ী উপজেলা এবং বিয়ানীবাজার উপজেলার তিন শতাধিক গ্রামের বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করতে প্রায় ৯০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে হয়ে। যাতায়াতে সময় বাঁচাতে ও সড়ক পথের দুর্ভোগ লাগবে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কথা বিবেচনায় রেখে এখানে সেতু নির্মাণ করে।

সিলেটের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া বলেন, প্রকল্পের শুরুতেই ভূমি অধিগ্রহণ না করায় সংযোগ সড়ক নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী দুটি গ্রাম তারাপুর এবং কাউয়াটিকির জনগন নিজ নিজ এলাকা দিয়ে রাস্তা নেওয়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় ভূমি অধিগ্রহণ সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনে এ ব্যাপারে আবেদনও করা হয়েছে। অধিগ্রহণ হলেই সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। তবে কবে নাগাদ ভূমি অধিগ্রহণ হবে ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে তিনি এব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। কারণ বর্তমানে এই সড়ক নির্মাণে কোন প্রকল্প বা বরাদ্দ আমাদের হাতে নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads