• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

যোগাযোগ

পদ্মায় রেলের কাজে ধীরগতি!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (পিবিআরএলপি) বর্তমানে দেশের অন্যতম মেগা ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প। সরকার রেলপথসহ একই দিনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে চায়। কিন্তু প্রকল্পে তহবিল সংকট দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, গত সাত মাসে কোনো কাজের বিল পায়নি। বকেয়া পড়ে আছে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সে কারণে তারা পূর্ণ গতিতে কাজ চালিয়ে যেতে পারছে না। তাই নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা নিয়ে তারা চিন্তিত। তবে প্রকল্প পরিচালক বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি ঠিক নয়। তারা অত টাকা পাবে না। তা ছাড়া সব কাজকর্ম ঠিকঠাকমতো চলছে। সিআরইসির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ের অভ্যন্তরীণ কারণে কাজের বিল না পেয়ে প্রকল্পের গতি সচল রাখতে তারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক প্রতিটি ইন্টেরিম বা অন্তর্বর্তীকালীন পেমেন্ট (আইপি) সম্পন্ন করতে তাদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি সময় লেগেছে।

উদাহরণ হিসেবে তারা বলছে, সিআরইসি জুন-সেপ্টেম্বর ২০২০ সময়কালের প্রকল্প ব্যয়ের জন্য আইপিসেভেন জমা দেয় ২৭ অক্টোবর, ২০২০ তারিখে। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্যয়ের বৈদেশিক অংশের নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে চীন এক্সিম ব্যাংককে নির্দেশনা দিতে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত কালক্ষেপণ করে। প্রকল্পের স্থানীয় ব্যয়ের অংশটুকুও বাংলাদেশ রেলওয়ের যথাযথ পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবে আটকে রয়েছে জানার পরও তারা সময় নেয়। বকেয়া মোট অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪শ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। এমতাবস্থায় প্রকল্পের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রী কেনা এবং সাব-কন্ট্রাক্টর ও সাপ্লাইয়ারদের সময়মতো তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা সিআরইসির জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিও কমে এসেছে। সিআরইসির মতে, ২০২০ সালের জুলাইয়ের মধ্যে তাদের ১০০ কোচ সরবরাহের কথা থাকলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে এখনো পর্যন্ত কোচগুলো নির্মাণের কোনো নির্দেশনা দেয়নি। আমাদের পক্ষ থেকে একাধিকবার বাংলাদেশ রেলওয়েকে জানানো হয়েছে, এই কোচগুলো নির্মিত ও হস্তান্তর হতে দুই বছর সময় লাগবে। মহামারীর কঠিন সময়ের মধ্যেও সিআরইসি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ যথাসম্ভব নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এজন্য সম্পৃক্ত প্রতিটি অংশীদারের পক্ষ থেকে যথাযথ সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য।

তবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ৪০ কোটি ডলার পাবে এমন তথ্য ঠিক নয়। তাদের দাবি ভুল। প্রকল্পের অগ্রগতিসহ সবকিছু ঠিকমতো চলছে।

এ ছাড়া পদ্মা সেতু রেল সংযোগ তহবিল সংকট দেখা দিয়েছে সিআরইসি গণমাধ্যমে যে প্রেস রিলিজ পাঠায় সে সম্পর্কে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, যে সোর্স থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তেমন কিছু পাঠায়নি বলে আমাকে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। পদ্মা রেল লিংক প্রকল্প ২০১৮ সালে শুরু হয়। এখানে প্রত্যেকটি কাজের জন্য আলাদাভাবে ঠিকাদারকে টাকা দেওয়া হয়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল দিয়েছে। যারা বিল পান নাই পেয়ে যাবেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রকল্পটি ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলবে। সুতরাং যে কথাগুলো তারা বলছে যুক্তিসঙ্গতভাবে সেগুলো ঠিক না। আর এসব পত্রপত্রিকাতেও বলার কিছু নেই। এই বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জবাব দিতে পারবেন। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলেছে এ ধরনের চিঠি তারা পাঠায়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads