• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
দায়সারা স্বাস্থ্যবিধি গণপরিবহনে

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

দায়সারা স্বাস্থ্যবিধি গণপরিবহনে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৯ এপ্রিল ২০২১

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ কিংবা লকডাউনের চতুর্থ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার গণপরিবহনে সরকারি নির্দেশনা মানার আগ্রহ তেমন দেখা যায়নি। রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, তেজগাঁও, মালিবাগ, খিলগাঁও, উত্তরা, চিটাগাং রোড ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় বাস কম। শুধু আসনের ক্ষেত্রে নির্দেশনা মানা হয়; অন্য কোনো নির্দেশনা মানার আগ্রহ ছিল না চালক, হেলপারসহ সংশ্লিষ্টদের।

যাত্রী কম থাকায় প্রায় সব বাসেরই অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা ছিল। তবে স্যানিটাইজার দিয়ে যাত্রীর হাত পরিষ্কার করা, ট্রিপের আগে-পরে বাস জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা, পরিবহন-শ্রমিক ও যাত্রীদের সবার মাস্ক পরিধান করা, গ্লাভস নিশ্চিত করার বিধিনিষেধ তেমনভাবে চোখে পড়েনি।

বিহঙ্গ পরিবহনের হেলপার সামাদের মুখে মাস্ক না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরে যাত্রী ডাকা যায় না। তবে পকেটে সবসময়ই মাস্ক থাকে।

স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে হেলপার-চালকরা বলছেন, এই গরমে মাস্ক পরে থাকা সম্ভব না। অন্য নির্দেশনা সম্পর্কে তারা পুরোপুরি অবগত না। লাব্বাইক পরিবহনের চালক রাজু জানান, বাস নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। যাত্রীরাই হাত স্যানিটাইজ করতে চায় না। মিরপুর থেকে করোনা টেস্ট করিয়ে কাওরানবাজার ফিরছিলেন প্রবাসী-শ্রমিক আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, মিরপুর থেকে কাওরান বাজার ভাড়া ১৫ টাকা। কিন্তু ভাড়া নিচ্ছে ২৫ টাকা। আবার দাঁড় করিয়ে যাত্রী নিচ্ছে।

রাজধানীর শনিরআখড়ায় গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ীগামী একাধিক গণপরিবহনে বাস ভর্তি করে যাত্রী নিতে দেখা গেছে।

পুরো বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল। যাত্রীরা বলছেন, শর্ত অনুযায়ী ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ায় অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যানবাহন চলাচল করার কথা। কিন্তু বর্ধিত ভাড়া আদায় করা হলেও পরিবহনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হচ্ছে না।

মিরপুর এলাকার কয়েকটি পরিবহনের সহকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোনো বাসেই তারা জীবাণুনাশক ব্যবহার করেননি। কেন করেননি জানতে চাইলে ক্যান্টনমেন্ট পরিবহনের চালক আবু আলম বলেন, যাত্রীই তো নেই, জীবাণুনাশক দিয়ে কী হবে?

যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘গত এক বছরে আমাদের একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা এক বছরে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারিনি। স্টার্টিং পয়েন্টে বাস স্যানিটাইজ করা বা পরিবহন-শ্রমিকদের মাস্ক পরানো এটা আমরা আসলে নিশ্চিত করতে পারিনি। আবার যখন লকডাউন হয়, তখন এটা নিয়ে ভাববার বিষয় ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা ভাড়া নেয় বা হেলপার তাদের পক্ষে ভাড়া নেওয়া, যাত্রীদের হাত স্যানিটাইজ করা, এত কিছু আসলে সম্ভব না। এসব দায়িত্ব যদি তৃতীয় কোনো পক্ষকে দেওয়া হয়, তাহলে তারা এটা ভালোভাবে করতে পারে। বিনিময়ে তারা যাত্রীদের দেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া থেকে তাদের প্রাপ্যটা নিতে পারে। এক্ষেত্রে বাস মালিকরা তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে কাজটা করাতে পারে।

হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে এ মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কোনো ছাড় নয়। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রয়োজন সর্বমহলের সবাই এগিয়ে আসতে হবে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads