• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

মুন্নী হত্যার আসামী ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার

  • প্রকাশিত ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

 

বয়স ২২ বছর; নাম ইয়াহিয়া হলেও সে বাংলাদেশের নাগরিক- নামের শেষে খান নেই তার, রয়েছে সরদার উপাধি।  কিন্তু কর্মকাণ্ড অনুযায়ী সেও আজ জাতির অন্যতম ঘৃণার পাত্র।  সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বাসগৃহের ঘরে ঢুকে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রী হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  নিহত ছাত্রীর নাম হুমায়রা আক্তার মুন্নী (১৬)।  সিলেট নগরের একটি বাসা থেকে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাবীবুল্লাহর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ইয়াহিয়া সিলেট নগরের জালালাবাদ থানার মাসুকবাজার এলাকার দরসা গ্রামের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।  পুলিশ বুধবার রাত একটার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।  পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে ইয়াহিয়াকে হাজির করা হয়।

 

১৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে সাতটার দিকে সুনামগঞ্জের দিরাই পৌর শহরের মাদানী মহল্লা এলাকায় ঘরে ঢুকে হুমায়রাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান ইয়াহিয়া।  সে ও তার ছোট ভাই তখন পড়াশোনা করছিল।  হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছাত্রীটি মারা যায়।  প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইয়াহিয়া এই কাজ করেন।  হুমায়রার দিরাই বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। পড়াশোনায় মেধাবী মেয়েটি প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল।

 

পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াহিয়া দাবি করেছেন যে হুমায়রার সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল।  ঘটনার দুই দিন আগে তিনি ওই বাসায় গিয়ে নিজের হাত কেটে রক্ত দেখান এবং তাঁর প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্য বলেন।  এ সময় মেয়েটি এই প্রস্তাবে সারা না দিলে ইয়াহিয়া নিজে মরবেন এবং মেয়েটিকেও মারবেন বলে হুমকি দেন।  এরপর ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া আবার ওই বাসায় যান এবং ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

 

ইয়াহিয়ার এমন দাবির বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের মনে হয়েছে ইয়াহিয়ার প্রেমের প্রস্তাবে হুমায়রা সাড়া দেননি।  বিষয়টি একতরফা ছিল।  প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার ইয়াহিয়াকে গ্রেপ্তারে গত পাঁচ দিন ধরে অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ দলের সদস্যদের এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন।

 

ঘটনার একদিন পর দিরাই থানায় মুন্নীর মা রাহেলা বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।  মামলায় উপজেলার সাকিতপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন সরদারের ছেলে মো. ইয়াহিয়া সরদার ও দিরাই পৌর শহরের মাদানী মহল্লা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম চৌধুরীর ছেলে দিরাই ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র তানভীর আহমদকে (২২) আসামি করা হয়।  ওই দিন বিকেলেই পুলিশ ইয়াহিয়ার বন্ধু তানভীরকে গ্রেপ্তার করে।

 

প্রেস ব্রিফিংয়ে সুনামগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, দিরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন, দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল, সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads